“এ ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার পাশাপাশি আত্মহত্যার ধরন নিয়ে তথ্যও সরবরাহ করে। এর ফলে, অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে।”
Published : 02 Jan 2024, 01:03 PM
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পরিচয় হওয়া দুই ব্যক্তির সঙ্গে আত্মহত্যা নিয়ে বোঝাপড়া করেছিলেন এক ব্রিটিশ নারী। সেখান থেকে পাওয়া পরামর্শ অনুসারে অনলাইনে বিষ কিনেছেন তিনি। আর এমন সব আলাপ প্রকাশ্যেই চলছে বিভিন্ন অনলাইন ফোরামে।
যে দুটি কোম্পানির পক্ষে এসব ঠেকানো সম্ভব ছিল, তারা এ নিয়ে যথেষ্ট করছে না বলে উঠে এসেছে তদন্তে।
৪৩ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক ক্লোয়ি ম্যাকডার্মট মারা যান ২০২১ সালের মে মাসে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র অ্যামাজন থেকে একটি প্রাণঘাতী ওষুধ কিনেছিলেন তিনি।
এ মাসের শুরুতে পশ্চিম লন্ডনের ‘করোনার্স কোর্ট’-এ জমা দেওয়া তদন্তের নথিতে উল্লেখ রয়েছে, আত্মহননের আগে দুই ব্যক্তির সঙ্গে ‘জুটি গঠন’ করেছিলেন ক্লোয়ি।
জুটি গঠনের একদিন পর, নিজের স্বামী যখন বাড়ির বাইরে ছিলেন, ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ক্লোয়ি, যেখানে ‘ওই রাতের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করার বোঝাপড়া’ হয় তাদের মধ্যে।
ময়নাতদন্তকারী পল রজার লাশ পরীক্ষার পর একে আত্মহত্যা হিসেবে নথিভুক্ত করেন। এর পাশাপাশি, গুগল ও অ্যামাজন যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা ঠেকাতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়, তা নিয়েও সতর্ক করেছেন তিনি।
তার মতে, কোম্পানিগুলো এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঠেকাতে সক্ষম।
এ ছাড়া, ম্যাকডার্মট যে ফোরামে ছিলেন সেটি ও একই ধরনের অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রজার।
“এ ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার পাশাপাশি আত্মহত্যার ধরন নিয়ে তথ্যও সরবরাহ করে। এর ফলে, অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে।” --বলেন রজার।
বয়স বা অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে সীমাবদ্ধতা না থাকায় শিশুদের এমনকি দুর্বল মনের কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের এইসব সাইটে প্রবেশাধিকার ঠেকানো যায় না বলে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
“এ ধরনের সাইটগুলোতে ব্যবহারকারীরা বাধার মুখে না পড়েই আত্মহত্যার ধরন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে থাকেন। আর এমন কনটেন্ট সরানোর মতো ব্যবস্থাপনাও নেই এগুলোতে।”
তিনি আরও যোগ করেন, ব্রিটিশ নাগরিকরা সহজেই অনলাইনে এ ধরনের বিষ অর্ডার করতে পারেন। আর এইসব ক্ষেত্রে ‘কোনো ধরনের সীমান্ত বা কাস্টম নিয়ন্ত্রণ’ ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টিও উদ্বেগের।
ভবিষ্যতে এমন মৃত্যুর ঘটনা ঠেকাতে গুগল ও অ্যামাজন কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, তা জানাতে যুক্তরাজ্যের আদালত ৫৬ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।