মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এগুলো শেষ পর্যন্ত নদী ও মহাসাগরে গিয়ে মেশে, জ্যান্ত প্রাণীর দেহে জমা হয় ও পুরো সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করে।
Published : 15 Aug 2024, 05:06 PM
মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এগুলো শেষ পর্যন্ত নদী ও মহাসাগরে গিয়ে মেশে, জ্যান্ত প্রাণীর দেহে জমা হয় ও পুরো সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করে।
এসব মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এগুলো শেষ পর্যন্ত নদী ও মহাসাগরে গিয়ে মেশে, জ্যান্ত প্রাণীর দেহে জমা হয় ও পুরো সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক সম্পর্কে ভালভাবে বোঝার অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে— এগুলো কীভাবে পানিতে চলাচল করে, তা অনুমান করা। বিশেষ করে পাতলা ফাইবারের বেলায়, যার মাধ্যমে সামুদ্রিক জীব সংশ্লিষ্ট অর্ধেকের বেশি দূষণ ঘটে।
উত্তাল পানিতে এইসব ফাইবার অপ্রত্যাশিত আচরণ করে। ফলে, বিজ্ঞানীদের পক্ষে এদের গতিবিধি অনুমান করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি।
তবে, ‘ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (তু উইয়েন)’র গবেষকরা এইসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা গবেষণায় যুগান্তকারী অগ্রগতি দেখিয়েছেন, যেখানে তারা উচ্চগতির ক্যামেরা ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রিত পানির চ্যানেলে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার গতিবিধি ধারণ ও বিশ্লেষণ করেছেন।
বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ বলছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তা বোঝার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এ গবেষণাটি। এমনকি গোটা বিশ্বের মহাসাগর ও নদীতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের গতিবিধি অনুমানে নতুন মডেল বিকাশের সম্ভাবনাও আছে এতে।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ লেটারস’-এ।
পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার গতিবিধির ওপর যে বিষয়গুলো প্রভাব ফেলে, তার মধ্যে রয়েছে এদের আকৃতি ও বিচরণ করার ধরন। এই গবেষণার প্রধান লেখক ও ‘তু উইয়েন’র ডক্টরাল শিক্ষার্থী ভ্লাদ গিউরগিউ’র মতে, এর চেয়ে গোলাকার কণার গতিবিধি বিশ্লেষণ করা সহজ।
তবে বেশিরভাগ মাইক্রোপ্লাস্টিক ফাইবার গোলাকার নয়, বরং দীর্ঘ, পাতলা ও প্রায়শই বাঁকানো। আর এমন জটিল আকার থাকায় এদের গতিবিধি সম্পর্কে অনুমান প্রকাশ করা কিছুটা জটিল, বিশেষ করে উত্তাল পানির ক্ষেত্রে।
এদিকে, একেবারে শান্ত ও সুসজ্জিত পানি প্রবাহের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে, বিজ্ঞানীরা গোলকের মতো সাধারণ বস্তুর গতিবিধি সম্পর্কে তাত্ত্বিক অনুমান প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু বাস্তব জগতের প্রেক্ষাপটে এমন ঘটনা, যেখানে পানি প্রবাহ শান্ত ও গোলকের মতো কণা আছে, তা খুবই বিরল।
এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষকরা ভিয়েনার ‘আর্সেনাল সায়েন্স সেন্টার’-এর বিশেষ একটি ওয়াটার চ্যানেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন, যেখানে সাড়ে আট মিটার দীর্ঘ পানির প্রবাহে পরীক্ষা চালানো যায়।
উত্তাল পানিতে প্রায় এক দশমিক দুই মিলিমিটার লম্বা ছোট ও বাঁকা আকৃতির বিভিন্ন মাইক্রোপ্লাস্টিক ফাইবার বসিয়ে এদের গতিবিধি ধারণ করতে ছয়টি হাই-স্পিড ক্যামেরা ব্যবহার করেছে গবেষণা দলটি।
পানির পৃষ্ঠের ঠিক ওপর বসানো এইসব ক্যামেরা প্রতি সেকেন্ডে দুই হাজার উচ্চ-রেজুলিউশনের ছবি ধারণ করতে পারে, যা গবেষকদের তিনটি মাত্রায় প্রতিটি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার সঠিক অবস্থান ও অভিযোজন ট্র্যাক করার সুযোগ দিয়েছে।
দুটি’র পরিবর্তে ছয়টি ক্যামেরা ব্যবহার করে গবেষণা দলটি আরও নির্ভরযোগ্য ও সঠিক তথ্য সংগ্রহ করেছে, বিশেষ করে যখন কণাগুলো পানিতে ছিল।
এর মাধ্যমে মাইক্রোপ্লাস্টিক ফাইবার পানিতে কেমন আচরণ করে, সে সম্পর্কে নতুন ধারণা মিলেছে। উদাহরণ হিসেবে, চ্যানেলের মাঝামাঝি জায়গার তুলনায় এর দেয়ালের প্রান্তে কণাগুলোর এলোমেলোভাবে ছোটাছুটির প্রবণতা বেশি।