গবেষকদের তথ্য অনুসারে, টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপ ব্যবহার করা ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের স্মার্টফোনের সমস্যাযুক্ত ব্যবহারের প্রবণতা বেশি।
Published : 02 Aug 2024, 03:54 PM
স্মার্টফোনের সঙ্গে ‘বাজে সম্পর্ক’ থাকা কম বয়সী ব্যবহারকারীদের বিষণ্ণতা ও অনিদ্রায় ভোগার ঝুঁকি বেশি, এমনই উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
যুক্তরাজ্যের ‘কিংস কলেজ লন্ডন’-এর গবেষকদের তথ্য অনুসারে, তরুণ-তরুণী, যারা স্মার্টফোনের বাজে রকম ব্যবহারের কথা বলেছেন, তাদের আচরণে এক ধরনের আসক্তিমূলক প্যাটার্ন লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি অন্যদের তুলনায় তাদের উদ্বেগের লক্ষণও দ্বিগুণ।
‘প্রবলেমেটিক ইউসেজ’ বা স্মার্টফোনের সমস্যাযুক্ত ব্যবহার বলতে সাধারণত কেউ ফোন না ধরলে উদ্বিগ্ন হয়ে যাওয়া, ফোনে কাটানো সময় নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা এবং ফোনে নিরর্থক বিভিন্ন কাজের মতো আচরণগুলোকে বোঝায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এর শিকার টিনএজারদের ছোট এক অংশ। এর তীব্রতা আসক্তি থেকে কিছুটা কম হলেও গবেষকদের বিশ্বাস, শিগগিরই একে ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দেওয়ার মতো যথেষ্ট প্রমাণ থাকতে পারে চিকিৎসকদের কাছে।
স্মার্টফোনের এ ধরনের ব্যবহারে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে প্রায় ৪৪ শতাংশ ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী ব্যবহারকারীর মধ্যে। সে তুলনায়, এমন ব্যবহার ছাড়া উদ্বেগের লক্ষণ ছিল ২৬ দশমিক চার শতাংশ। অন্যদিকে, প্রায় ৫৬ শতাংশ ১৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী ব্যবহারকারীর মধ্যে এমন ব্যবহারের কারণে বিষণ্ণতার লক্ষণ দেখা গেছে। আর এমন ব্যবহার ছাড়া বিষণ্ণতার লক্ষণ ছিল প্রায় ৩৫ দশমিক আট শতাংশ ব্যবহারকারীর মধ্যে।
গবেষকদের তথ্য অনুসারে, টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপ ব্যবহার করা ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের স্মার্টফোনের সমস্যাযুক্ত ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। তবে, উভয় ধরনের ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে প্রায় একই ভূমিকা রাখছে হোয়াটসঅ্যাপ, গেইমিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মতো বিষয়গুলো।
গবেষণার তথ্য বলছে, বয়সে কিছুটা বড় টিনএজারদের উদ্বেগ বা বিষণ্ণতার সঙ্গে ‘স্ক্রিন টাইম’-এর কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এর সরাসরি যোগসূত্র আছে অনিদ্রার সঙ্গে।
এজন্য গবেষকরা দুটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যা প্রকাশ পেয়েছে ‘ব্রিটিশ মেডিকাল জার্নাল’-এ। আর ইংল্যান্ডের বেশ কিছু স্কুলের ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের তথ্য নেওয়া হয়েছে এতে।
স্মার্টফোনে কম সময় কাটানোর কথা বলছেন অনেক তরুণ তরুণীই
স্মার্টফোনের সমস্যাজনক ব্যবহারের বিষয়টি মেয়েদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে এর মাত্রা প্রায় ১৯ শতাংশ এবং ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের মধ্যে তা ১৫ শতাংশ।
এর মধ্যে অনেক তরুণ বয়সী বলছেন, তারা স্মার্টফোনে কম সময় কাটাতে চান।
জরিপে অংশ নেওয়া ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী ব্যবহারকারীদের ১০ জনের মধ্যে প্রায় নয়জনই বলেছেন, স্মার্টফোন ব্যবহার কমাতে তারা অন্তত একটি কৌশল অবলম্বন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখা বা নোটিফিকেশন বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনা।
এদিকে, ১৬ থেকে ১৮ বছর ব্যবসী প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ব্যবহারকারী তাদের স্মার্টফোন ব্যবহার কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার কথা বলেছেন। আর আটজনের মধ্যে একজন বলেছেন, স্মার্টফোন ব্যবহার কমাতে তাদের সাহায্য প্রায়োজন।