ভিনগ্রহে প্রাণের চিহ্ন হতে পারে ‘লাফিং গ্যাস’

দূরের মহাকাশে জৈব-জীবনের লক্ষণীয় চিহ্ন হিসেবে কাজ করতে পারে হাসির রাসায়নিক খোরাক নাইট্রাস অক্সাইড।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2022, 12:03 PM
Updated : 5 Oct 2022, 12:03 PM

ভিনগ্রহে প্রাণের চিহ্ন হিসেবে লাফিং গ্যাস হিসেবে পরিচিতি ‘নাইট্রাস অক্সাইড’-এর খোঁজে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন একদল অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট (জ্যোতি-জীববিজ্ঞানী)।

সম্প্রতি বিজ্ঞান সাময়িকী ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে ভিনগ্রহে জৈব-জীবনের খোঁজে অক্সিজেন এবং মিথেনের পাশাপাশি নাইট্রাস অক্সাইডকেও বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারডেলের ওই গবেষকরা।

সৌরজগতে এবং সৌরজগতের বাইরে প্রাণের খোঁজে বিজ্ঞানীরা প্রথমে একটি মহাজাগতিক বস্তুর বায়ুমণ্ডলে নির্দিষ্ট কিছু গ্যাসের উপস্থিতি খোঁজেন। এক্ষেত্রে, বরাবরই জৈব-জীবনের চিহ্ন হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে অক্সিজেন এবং মিথেন।

কিন্তু, নাইট্রাস অক্সাইডও জীবনের চিহ্ন হতে পারে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের; যদিও হাসির রাসায়নিক খোরাক হিসেবেই বেশি পরিচিত এ ‘লাফিং গ্যাস’।

“জৈব-জীবনের চিহ্ন হিসেবে অক্সিজেন এবং মিথেন নিয়ে অনেক ভাবনা হয়েছে। কিন্তু নাইট্রাস অক্সাইডকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছেন খুব কম সংখ্যক বিজ্ঞানী; আমরা মনে করি এটা একটা ভুল”-- বলেছেন গবেষণার মূল লেখক এডি শুইতারম্যান।

পৃথিবীর অণুজীবরাও নাইট্রাস অক্সাইড নিঃসরণ করে। কিন্তু, পৃথিবীর বায়মণ্ডলে ঘনীভূত নয় এ গ্যাসটি। আর ঠিক এ কারণেই বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরের ভিনগ্রহে এই গ্যাসটির খোঁজে আগ্রহী হয়েছেন বলে উঠে এসেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেটের প্রতিবেদনে।

“এই উপসংহার পৃথিবীর ইতিহাসের সে সময়টিকে বিবেচনায় নেয় না যখন সমুদ্র থেকে অনেক বেশি পরিমানে এন২ও (N2O) বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পরতো। ওই সময়ের পরিস্থিতি সৌরজগতের বাইরের একটি গ্রহের বর্তমান অবস্থার প্রতিফলন হতে পারে।”-- মঙ্গলবারের এক বিবৃতিতে বলেছেন শুইতারম্যান।

সিনেট জানিয়েছে, ভিনগ্রহের জৈবজীবন কী ভাবে নাইট্রাস অক্সাইড সৃষ্টি করতে পারে, সে বিষয়ে কম্পিউটার সিমুলেশন চালিয়েছেন শুইতারম্যান ও তার দলের গবেষকরা। আর সিমুলেশনের ফলাফল বলছে, জৈব-জীবনের লক্ষণীয় চিহ্ন হিসেবে কাজ করতে পারে গ্যাসটি।

তবে, মহাকাশে গ্যাসটির অনুসন্ধানের বিষয়টিই সবচেয়ে জটিল বলে উঠে এসেছে সিনেটের প্রতিবেদনে।

এ ক্ষেত্রে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ কাজে আসতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের। সৌরজগতের বাইরের গ্রহের বায়ুমণ্ডল নিয়ে তথ্য সংগ্রহের সক্ষমতা আছে জেমস ওয়েবের। নাইট্রাস অক্সাইডের খোঁজেও কাজে লাগানো যেতে পারে একে।

কাছের সৌরজগৎ ট্রাপিস্ট-১’এ পৃথিবীর কাছাকাছি আকৃতির বেশ কয়েকটি গ্রহ রয়েছে। ওই গ্রহগুলো নাইট্রাস অক্সাইডের উপস্থিতি অনুসন্ধানের জন্য আদর্শ হতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের।