এক নারীকে মাস্ক নিজের সন্তান নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। মাস্কের এমন প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ওই নারী কর্মীর বেতন বাড়াতে অস্বীকার করেন তিনি এবং কাজের বিষয়েও সমালোচনা করেন।
Published : 14 Jun 2024, 03:11 PM
বিভিন্ন সময়ে, বৈচিত্র্যময় সব বিষয় নিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন ইলন মাস্ক। আলোচনা সমালোচনার তীর বরাবরই ছুটেছে মার্কিন এ ধনকুবেরের দিকে। আবারও সামনে এসেছে তেমনই এক খবর।
মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদন বলছে, স্পেসএক্সের এক শিক্ষানবিশ কর্মীর সঙ্গে ‘যৌন সম্পর্ক’ ছিল ইলন মাস্কের, যাকে পরবর্তীতে তার নির্বাহীদের সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় আরেক কর্মীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলেও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
পাশাপাশি, তৃতীয় এক নারীকে মাস্ক নিজের সন্তান নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সূত্র অনুসারে, মাস্কের এমন প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ওই নারী কর্মীর বেতন বাড়াতে অস্বীকার করেন তিনি এবং কাজ নিয়েও সমালোচনা করেন।
প্রথম ঘটনায় মাস্ক ওই ইন্টার্নের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীতে, কোম্পানির সমস্যা খুঁজে বের করে সমাধান দেওয়ার জন্য, স্পেসএক্সে একটি স্থায়ী চাকরির বিষয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
তবে, এ নারী কর্মী মার্কিন পত্রিকাটিকে জানিয়েছেন, তিনি সরাসরি এ প্রতিবেদনের অংশ হতে চান না। পাশাপাশি, তিনি কেবল মাস্কের বন্ধু ছিলেন, এটি এক হলফনামায় ওই কর্মী উল্লেখ করেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
আরও একজন নারী বলেছেন, স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট গুয়েন শটওয়েল তার স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ করেন ওই নারীর বিরুদ্ধে। তিনি এইচআর এর কাছে ঘটনাটি জানান। বিষয়টি শটওয়েল জানতে পারলে, ওই নারীকে নির্বাহী কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার দাবি তোলেন। পরবর্তীতে মাস্কের সঙ্গে ওই একই নারীর যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে লিখেছে এনগ্যাজেট। এরপরে সে নারী কোম্পানি ছেড়ে চলে যান।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, মেসেজ, ইমেইল নথি এবং ৪৮ জনেরও বেশি মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে তাদের এ প্রতিবেদন। এ নারী কর্মীদের বন্ধু ও পরিবারও সাক্ষাৎকার দিয়েছে। পাশাপাশি, এমন মানুষ সেখানে ছিলেন যাদের কাছে মাস্কের সঙ্গে নারী কর্মীদের সম্পর্কের বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল বলে দাবি মার্কিন পত্রিকাটির।
এ প্রসঙ্গে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মন্তব্যের অনুরোধে মাস্ক কোনো মন্তব্য করেননি।
“আপনাদের ইমেইলে অসত্য ও ভুল তথ্য, সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং ভুল একটি বর্ণনা দেয়। অপপ্রচার করা এমন বিভিন্ন শক্তির বিরুদ্ধে, আমাদের কর্মীরা প্রতিদিন যা অর্জন করছে তাতে আমি বিস্মিত হই। আর আমার পরিচিত অন্যতম সেরা মানুষদের একজন ইলন।” — এ প্রসঙ্গে এক মন্তব্যে বলেন, গুয়েন শটওয়েল।
তবে, স্পেসএক্সে প্রচলিত আচরণ নিয়ে এর আগেও অনেক প্রতিবেদন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে এনগ্যাজেট। ২০২১ সালে শেষ নাগাদ কোম্পানিতে “যৌন হয়রানির সংস্কৃতির” বিষয়টি বর্ণনা করেছিলেন সাবেক স্পেসএক্স কর্মীরা। অশ্লীল মন্তব্য, শারীরিক হয়রানি এবং অন্যায় যৌন সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বর্ণনায়।
এ ছাড়া, গত বছর স্পেসএক্সের এক বিমানবালাকে ‘যৌন হয়রানির’ অভিযোগ উঠেছিল আলোচিত উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে। স্পেসএক্সের বিরুদ্ধে এক মামলায় লিঙ্গ বৈষম্য ও মৌলিক সুরক্ষা ব্যর্থতার উদাহরণ ওঠে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এনগ্যাজেট।