পাঁচ কোটি ফেইসবুক গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার শুরু হয়েছিল যে অ্যাপের মাধ্যমে তার নির্মাতা বলছেন, এ বিষয়ে ব্রিটিশ রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ও ফেইসবুক তাকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে।
Published : 22 Mar 2018, 12:18 AM
আলেকজান্ডর কোগান বলছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার জন্য ২০১৪ সালে ওই অ্যাপ বানানোর সময় তিনি জানতেনই না এর মাধ্যমে ফেইসবুক নীতিমালার লংঘন হচ্ছে। সে সময় তাকে বলা হয়েছিল সব কিছুই আইনের মধ্য থেকেই করা হবে।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করে লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কোগানকে দিয়ে ২০১৪ সালে একটি অ্যাপ বানিয়ে নেয় তারা।
ওই অ্যাপের মাধ্যমে ২০১৪ সালে ‘দিস ইজ ইউর ডিজিটাল লাইফ’ শিরোনামে একটি কুইজ পরিচালনা করা হয়। গ্রাহকের ব্যক্তিত্ব কেমন সে সম্পর্কে তার ধারণা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কুইজে অংশ নিতে গ্রাহকদের আমন্ত্রণ জানায় ফেইসবুক।
প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার গ্রাহক ওই কুইজে অংশ নিয়ে তাদের তথ্য দেয়। এদিকে অ্যাপটি ওই সব গ্রাহকদের বন্ধু তালিকার সদস্যদের তথ্যও তাদের অগোচরে নিয়ে নেয়।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি বলেছেন, গ্রাহকদের সম্মতি নেওয়া সংক্রান্ত একটি নীতিমালা ফেইসবুক করার আগেই পাঁচ কোটি গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছিল ওই অ্যাপের মাধ্যমে।
সে সব তথ্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন উইলি।
তিনি বলেন, পরে ওই সব তথ্য বিশ্লেষণ করেই ট্রাম্পের প্রচারণার কৌশল নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
এজন কোগানকে দায়ী করে ফেইসবুকের এক মুখপাত্র বলেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা একটি তৃতীয় পক্ষ, যারা ওই তথ্যগুলো বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করেছিল। তাদের কাছে তথ্য সরবরাহের অনুমতি ছিল না কোগানের।
বিষয়টি নিয়ে বুধবার বিবিসির রেডি ফোরের টুডে প্রোগ্রামে কোগান বলেন, এই বিষয় নিয়ে গত সপ্তাহে যে সব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো তার জন্য একটি কঠিন ‘ধাক্কা’।
“আমার উপলব্ধি হচ্ছে যে, ফেইসবুক ও কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা আমাকে মূলত ব্যবহার করেছে বলির পাঁঠা হিসেবে।”
ওই সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, “কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা আমাদের নিশ্চিত করেছিল যে, সব কিছুই পুরোপুরিভাবে আইনি এবং ফেইসবুকের বিধির মধ্যেই রয়েছে।”
সে সময় বিষয়টি নিয়ে আরও প্রশ্ন না করে তাদের কথা মতো কাজ করা ‘বড় ভুল হয়েছিল’ বলে মন্তব্য করেন আলেকজান্ডর কোগান।
তিনি বলেন, যে সব তথ্য এসেছিল তাতে ট্রাম্পের লাভের চেয়ে ক্ষতিই হওয়ার কথা ছিল। তবে সেগুলো ভিন্নভাবে কাজে লাগিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।