অদ্ভুতুরে এক টাইপরাইটার বানিয়েছেন ডিজাইনার ও প্রকৌশলী আরভিন্দ সানজিভ। টাইপ করে সরাসরি টাইপিস্টের সঙ্গে আড্ডা দিতে পারে ‘গোস্টরাইটার’।
তবে, টাইপরাইটারটির ওপর কোনো অলৌকিক আত্মা ভর করেনি; ভর করেছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। আর তার নাম, ওপেনএআই-এর জিপিটি-৩ এআই।
হালের আলোচিত চ্যাটজিপিটি চ্যাটবটের মূলেও রয়েছে জিপিটি-৩ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল। গোস্টরাইটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট আর্স টেকনিকা লিখেছে, এটা যেন টাইপরাইটারের মাধ্যমে একটা ভূতের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মতো।
গোস্টরাইটার নির্মাণে ৯০-এর দশকের ব্রাদার এএক্স-৩২৫ ইলেকট্রনিক টাইপরাইটার ব্যবহার করেছেন সানজিভ। বৈদ্যুতিক টাইপরাইটারটির কিবোর্ড সিগনালগুলো আর্ডুইনোর তৈরি মাইক্রোকন্ট্রোলারের মাধ্যমে আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
আর্ডুইনো কন্ট্রোলার সিগনাল পাঠায় একটি রাসবেরি পাই কম্পিউটারে। আর ওপেনএআইয়ের জিপিটি-৩ এপিআইয়ের সঙ্গেনেটওয়ার্ক ইন্টারফেইস হিসেবে কাজ করে সিঙ্গল বোর্ড কম্পিউটারটি।
জিপিটি-৩ উত্তর দিলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাদা কাগজে টাইপ করে দেখায় গোস্টরাইটা।
জিপিটি-৩ একটি এআই মডেল; কয়েক লাখ বই আর ওয়েবসাইটের তথ্য-উপাত্ত ‘পড়িয়ে’ একে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন নির্মাতারা। ব্যবহারকারীর নির্দেশনার ভিত্তিতে লেখার পরবর্তী শব্দটি পরিসংখ্যানের বিচারে আঁচ করার চেষ্টা করে জিপিটি-৩।
আর্স টেকনিকা জানিয়েছে, সানজিভ টুইটারে গোস্টরাইটারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ১ ডিসেম্বর। ২০২১ সালের শুরুতেই কল্পবিজ্ঞান লেখক রব স্লোনের লেখা থেকে গোস্টরাইটার নির্মাণের ভাবনা মাথায় এসেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু পেশাদারী কাজের বাইরে শখের প্রকল্পের পেছনে দেওয়ার মত সময় বের করতে পাচ্ছিলেন না বলেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এত সময় নিয়েছেন এই প্রকৌশলী।
সানজিভ মূলত গোস্টরাইটারের মাধ্যমে এআই আর মানুষের মধ্যে সম্পর্ক নিয়েই কিছু বলতে চেয়েছেন বলে মন্তব্য আর্স টেকনিকার।
টুইটে এই উদ্ভাবক লিখেছেন “আমি একটি সুচিন্তিত হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছিলাম যা আপনাকে এক মুহূর্তের জন্য শান্ত হয়ে আমরা যন্ত্রের সঙ্গে যে সৃজনশীল সম্পর্ক গড়ে তুলছি সে বিষয়ে ভাবার সুযোগ দেবে।”
“একটি ভিনটেজ টাইপরাইটারের শান্ত ইন্টারফেইস মনোযোগ নষ্ট করার মতো ডিজিটাল উপাদানগুলো আলাদা করে ফেলে আমাদের কাগজ-কলমের মাধ্যমে একটা আবেগপ্রবণ যাত্রায় নিয়ে যাবে।”