লাগাতার অনশনে থাকলে আরও শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাওয়া শঙ্কা করেছেন চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব।
Published : 22 Apr 2025, 06:28 PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
মঙ্গলবার অসুস্থ দুই শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অনশনে থাকা দুই শিক্ষার্থী পানি শূন্যতা এবং সুগার লেভেল নিচে নেমে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।”
লাগাতার অনশনে থাকলে আরও শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাওয়া শঙ্কা করেছেন চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব।
মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বলেন, “সিন্ডিকেট সভা করে ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন কর্মসুচি পালন করব।”
এদিকে করণীয় ঠিক করতে সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভার আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য নঈম উদ্দিন হাছান আওরঙ্গজেব চৌধুরী।
চারুকলা ইনস্টিটিউটকে নগরী থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় পার হওয়ার পরও সিদ্ধান্ত না আসায় সোমবার বিকালে আমরণ অনশনে বসেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের নয় শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ ও ইনস্টিটিউট হাটহাজারীর মূল ক্যাম্পাসে হলেও চারুকলা ইনস্টিটিউট ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগরীতে। ২০২২ সালে শ্রেণিকক্ষের ছাদ থেকে ইট-সিমেন্ট খসে পড়লে ওই বছরের ২ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পরও মূল ক্যাম্পাসে ফেরার আন্দোলনে অনড় ছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এক মাসের জন্য ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলন করার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদলের পর গত ১০ ডিসেম্বর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
পরদিন তারা নগরীর বাদশা মিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে ব্যানার বিছিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান।
এমন প্রেক্ষাপটে ১২ ডিসেম্বর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ওইদিন বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আজকে আনঅফিসিয়াল বৈঠক হয়েছে তাদের সাথে। তাদের সাথে কথা বলে ‘প্রিন্সিপালি অ্যাগ্রি’ করেছি তাদের নিয়ে আসার জন্য।”
“ভাইস চ্যান্সেলর স্যারও আমাদের বলেছেন, আমরা ছাত্রদের দাবির সাথে একমত। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ষদগুলো থেকে অনুমোদন দিয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।”
সেই সময়সীমা পার হওয়ার পরই অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।
পুরানো খবর:
চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরাতে 'নীতিগতভাবে একমত' চবি প্রশাসন
ফের আন্দোলনে চট্টগ্রাম চারুকলার শিক্ষার্থীরা
চবি চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে নেওয়ার দাবিতে আমরণ অনশনে ৯ শিক্ষার্থী