“দ্রুত সিন্ডিকেট সভা করে ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।”
Published : 21 Apr 2025, 07:46 PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে নেওয়ার বিষয়ে প্রশাসনের আশ্বাসের পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে চারুকলা ইনস্টিটিউটের নয় শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন।
ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে নেওয়ার বিষয়ে প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় পার হওয়ার পরও সিদ্ধান্ত না আসায় সোমবার সকালে মূল ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
পরে তারা উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) শামীম উদ্দিন খানের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসেন।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চারুকলা ইনস্টিটিউটকে নগরী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রশাসন আমাদের কাছ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় চেয়েছিল।
“কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছি।”
ফাহিম বলেন, “আজকে আমরা উপ উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) স্যারের সাথে দেখা করেছি। তিনি আমাদেরকে কাজ চলমান আছে বললেও কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ দিতে পারছেন না। তাই আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি।
“দ্রুত সিন্ডিকেট সভা করে ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।”
এ বিষয়ে উপ উপাচার্য শামীম উদ্দিন খান সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেননি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ ও ইনস্টিটিউট হাটহাজারীর মূল ক্যাম্পাসে হলেও চারুকলা ইনস্টিটিউট ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগরীতে।
২০২২ সালে শ্রেণিকক্ষের ছাদ থেকে ইট-সিমেন্ট খসে পড়লে ওই বছরের ২ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পরও মূল ক্যাম্পাসে ফেরার আন্দোলনে অনড় ছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এক মাসের জন্য ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করে। পরে মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
গতবছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
পরদিন তারা নগরীর বাদশা মিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে ব্যানার বিছিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান।
এমন প্রেক্ষাপটে ১২ ডিসেম্বর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ‘নীতিগত ভাবে একমত’ বলে জানিয়েছিল।
ওইদিন বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আজকে আনঅফিসিয়াল বৈঠক হয়েছে তাদের সাথে। তাদের সাথে কথা বলে ‘প্রিন্সিপালি অ্যাগ্রি’ করেছি তাদের নিয়ে আসার জন্য।”
“ভাইস চ্যান্সেলর স্যারও আমাদের বলেছেন, আমরা ছাত্রদের দাবির সাথে একমত। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ষদগুলো থেকে অনুমোদন দিয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।”
সেই সময়সীমা পার হওয়ার পরই অনশনে বসলেন শিক্ষার্থীরা।
চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরাতে 'নীতিগতভাবে একমত' চবি প্রশাসন