“ম্যাকেঞ্জি (অ্যাহেম) স্কট যে তার সাবেক স্বামীর বড় ভক্ত নন, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। দুর্ভাগ্যবশত, তার এমন পদক্ষেপে অন্যরাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে,” বলেন মাস্ক।
Published : 08 Mar 2024, 04:38 PM
জেফ বেজোসের সাবেক স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কটের দানশীলতা ‘দাগ কাটতে পারেনি’ ইলন মাস্কের মনে।
“শীর্ষ ধনকুবেরদের সাবেক স্ত্রী, যারা নিজের সাবেক স্বামীকে ঘৃণা করেন, তাদের উচিৎ ‘পশ্চিমা সংস্কৃতি মৃত্যুর কারণ’-এর তালিকায় নাম লেখানো”। বলেছেন মাস্ক।
বাণিজ্যবিষয়ক সংবাদ প্রকাশক বিজনেস ইনসাইডার বলছে, এই টুইটে জেফ বেজোসের সাবেক স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কটের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন মাস্ক।
মূলত এক্স-এর আরেক ব্যবহারকারীর পোস্টের জবাবে এ কথা বলেছেন টেসলার টেকনো চিফ। ওই ব্যবহারকারী বলেছেন, স্কট বিভিন্ন এমন প্রতিষ্ঠানে অর্থ প্রদান করছেন, যেগুলো ‘বর্ণ বা লিঙ্গ বৈষম্যের মতো’ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে।
এদিকে, মাস্ক কেন স্কটকেই টার্গেট করলেন, তা পরিষ্কার নয়। তবে, বৈচিত্র্য ও সমতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রচারণা চালানো ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই মাস্কের আক্রমণের লক্ষ্য।
“ডিইআই (ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি, ইনক্লুশন)’ মূলত বর্ণবাদেরই আরেকটি রূপ। আর যারা একে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, তাদেরকে ধিক্কার,” জানুয়ারিতে এক্স-এ দেওয়া পোস্টে লিখেছিলেন মাস্ক।
DEI is just another word for racism. Shame on anyone who uses it. https://t.co/HM94ZZmfhU
— Elon Musk (@elonmusk) January 3, 2024
স্কটের মানবতা নিয়ে মাস্ক এই প্রথম নিন্দা করলেন, বিষয়টি এমন নয়।
২০২২ সালের মে মাসে মাস্ক বলেছিলেন, তিনি রিপাবলিকানদেরকে ভোট দেবেন কারণ তার দুটি কোম্পানি টেসলা ও স্পেসএক্স থেকে ‘মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে’ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।
সে সময় মাস্ক দাবি করেন, এমনটি ঘটার কারণ ‘প্যাকস (পিকচার অ্যান্ড আর্কাইভিং কমিউনিকেশন সিস্টেম)’-এ অনুদান দিয়ে তার কোম্পানিগুলোকে পাশ কাটিয়ে গেছেন ম্যাকেঞ্জি।
True. Tesla was attacked by Romney in 2 of 3 presidential debates. Those lines were fed to him by a particular individual in the oil & gas industry.
The Dems turned negative over the past ~12 months. At least part of it is Mackenzie’s donation to PACs posing as charities.
— Elon Musk (@elonmusk) May 31, 2022
“ম্যাকেঞ্জি স্কট যে তার সাবেক স্বামীর বড় ভক্ত নন, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। দুর্ভাগ্যবশত, তার এমন পদক্ষেপে অন্যরাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে,” সে সময় এক্স-এ লেখেন মাস্ক।
বেজোসের সঙ্গে ২৫ বছর সংসার করার পর ২০১৯ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে, যেখানে ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন হাজার আটশ কোটি ডলারের অ্যামাজন শেয়ার পেয়েছিলেন স্কট।
এর পর থেকেই মানবকল্যাণে কাজ করতে শুরু করেন স্কট।
২০২২ সালে অনলাইন সাইট মিডিয়াম-এ দেওয়া একটি পোস্টে স্কট বলেন, বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া কমিউনিটির কণ্ঠস্বর সমর্থন ও তাদের সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ৩৪৩টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুইশ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে গত বছরই ‘প্ল্যানড প্যারেন্টহুড’ নামের অলাভজনক সংস্থায় সাড়ে ২৭ কোটি ডলার দিয়েছিলেন স্কট।
অন্যদিকে স্কটের সাবেক স্বামী বেজোসের দাতব্যের পন্থা একটু ভিন্ন। ২০২২ সালের নভেম্বরে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন’কে নিজের সম্পদ দান করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, জনহিতৈষী কাজে জড়ানো অ্যামাজনের মতো কোম্পানি গড়ে তোলার মতোই জটিল বিষয়।
“সবচেয়ে কঠিন হল, এটা কীভাবে সঠিক উপায়ে করা যায়, তা ঠিক করা,” সিএনএন’কে বলেন বেজোস।
এদিকে, জনহিতৈষী হিসেবে পিছিয়ে নেই মাস্ক নিজেও। ২০২১ সালে মাস্ক ফাউন্ডেশনে ৫৭০ কোটি ডলারের টেসলা শেয়ার অনুদান দিয়েছিলেন তিনি। ২০০২ সালে এ দাতব্য সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন তারই ভাই কিম্বাল।
ফাউন্ডেশনটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, তারা বেশ কয়েক ধরনের কাজে আর্থিক অনুদান দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য শক্তি, মহাকাশ অনুসন্ধান থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিও।
এ প্রসঙ্গে সংবাদ সাইট বিজনেস ইনসাইডার মাস্ক ও স্কটের প্রতিনিধিদের মন্তব্য জানতে চাইলেও তাদের তরফ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি।