“যেসব ব্যক্তি ফেইশল রিকগনিশনের মাধ্যমে পরিচয় যাচাইয়ে রাজি নন তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্য যুক্তিসঙ্গত উপায় ও সুবিধাজনক বিকল্প দেওয়া উচিত।”
Published : 24 Mar 2025, 02:21 PM
ফেইশল রিকগনিশন কোনো ব্যক্তির ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করে চীন।
শুক্রবার ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে চীনের সাইবারস্পেস নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
নতুন নীতিমালায় রয়েছে, এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তিদের তাদের পরিচয় যাচাই করতে বাধ্য করা উচিত নয়।
রয়টার্স লিখেছে, ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটির নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে অপরাধীদের খুঁজে বের করার পাশাপাশি ভিন্নমতাবলম্বী, আবেদনকারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর নজরদারির জন্য এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটি।
তবে নতুন নীতিমালায় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির ওপর ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেনি চীন।
‘সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ চায়না’ বা সিএসি বলেছে, এ প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে ডেটা প্রাইভেসির ঝুঁকি সম্পর্কে সমাজের মধ্যে ক্রমাগত উদ্বেগও বাড়ছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় এ নীতিমালা প্রকাশ করল তারা।
সিএসি তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, “যেসব ব্যক্তি ফেইশল রিকগনিশনের মাধ্যমে পরিচয় যাচাইয়ে রাজি নন তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্য যুক্তিসঙ্গত উপায় ও সুবিধাজনক বিকল্প দেওয়া উচিত।”
নতুন নীতিমালায় আরও উল্লেখ রয়েছে, হোটেলে চেক-ইন বা গেটেড কমিউনিটিতে প্রবেশের মতো দেশটির সাধারণ জায়গাগুলোতেও ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। প্রযুক্তিটি ব্যবহারের এমন অভ্যাস ঠেকানোর লক্ষ্যে নতুন এই নীতিমালা তৈরি করেছে তারা।
এ বছরের জুনে নতুন নীতিমালা কার্যকরের কথা রয়েছে, যা অনুমোদন করেছে চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়। ফেইশল রিকগনিশন ক্যামেরা থেকে ডেটা সংগ্রহকারী বিভিন্ন কোম্পানি যাতে ব্যক্তির সম্মতি পাওয়ার পরই কেবল তাদের মুখের ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও নতুন নীতিমালায় জোর দিয়েছে চীন।
এসব নীতিমালা কীভাবে সব জায়গায় প্রয়োগ সম্ভব তা নির্দিষ্ট করে বলেনি সিএসি। তবে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, যেখানেই ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে সেখানে এ নীতিমালার প্রয়োগ করতে হবে।
এআইচালিত বিভিন্ন ভিজুয়াল ইমেজিং প্রযুক্তির গবেষণা ও বিকাশের জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ ডলার বিনিয়োগ করছে ‘সেন্সটাইম’ ও ‘মেগভি’র মতো বিভিন্ন চীনা কোম্পানি, যা ধারাবাহিকভাবে ফেইশল রিকগনিশন সফটওয়্যার তৈরিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
এর আগে, ২০২১ সালের জুলাই মাসে শপিং মল ও হোটেলের মতো গণপরিসরে পরিচয় যাচাইয়ের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল চীনের সুপ্রিম কোর্ট।
একই বছরের নভেম্বরে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর হয় চীনে। যার মাধ্যমে মুখের তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহারকারীর সম্মতির বিষয়টি বাধ্যতামূলক হয় এবং যেসব কোম্পানি তা মানবে না তাদের জন্য মোটা অংকের জরিমানা আরোপ করে চীন।