আইন কার্যকর হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়সসীমা আরোপ করা বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর একটি হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
Published : 10 Sep 2024, 06:09 PM
শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের নূন্যতম বয়স সীমা নির্ধারণের পরিকল্পনা করছে অস্ট্রেলিয়া।
এ নিয়ে জিডিটাল রাইটস সমর্থকদের কাছ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে। তারা বলছেন, এ ব্যবস্থার ফলে আড়ালে বিপজ্জনক অনলাইন কার্যকলাপ চলতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার এ বছর সোশাল মিডিয়ার জন্য ন্যূনতম বয়সের আইন প্রবর্তনের আগে বয়স যাচাইয়ের পরীক্ষা চালাবে, বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যানটনি অ্যালবানিজ।
কোনো নির্দিষ্ট বয়স উল্লেখ না করলেও তিনি বলেছে এটি “সম্ভবত ১৪ থেকে ১৬’র মধ্যে হবে” বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
“আমি শিশুদের ডিভাইস থেকে দূরে, মাঠ, সুইমিং পুল ও টেনিস কোর্টে দেখতে চাই।” – অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেছেন অ্যালবানিজ।
“আমরা চাই শিশুরা প্রকৃত মানুষের সঙ্গে মিশে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করুক। কারণ, আমরা জানি সোশাল মিডিয়া সামাজিক ক্ষতি করছে।”
আইনটি কার্যকর হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়সসীমা আরোপ করা বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর একটি হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। শিশুদের অনলাইন অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার ফলে, এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আগে বিভিন্ন অঞ্চলের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ফেইসবুকের মালিক কোম্পানি মেটা প্ল্যাটফর্মস বলেছে, প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে শিশুদের উপকার করার পাশাপাশি অ্যাক্সেস বন্ধ করার পরিবর্তে মা-বাবাদের সহায়তা করবে এমনবিভিন্ন টুল আনতে চায় কোম্পানিটি। তারা নিজেরাও প্ল্যাটফর্ম ১৩ বছরের বয়সীমা বেঁধে দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
প্রযুক্তি খাতের পরিসংখ্যান অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ার দুই কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার চার ভাগের পাঁচভাগ মানুষই সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে, যা বিশ্বে অন্যতম বড় অনুপাত।
পাশাপাশি, ২০২৩ সালে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের তিন-চতুর্থাংশই ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব সম্পর্কে সংসদীয় তদন্তের ভিত্তিতেই বয়স সীমা আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে অ্যালবানিজ। তদন্তে শিশুদের দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব নিয়ে আবেগপ্রবণ সাক্ষ্য শোনা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
তবে, বয়সসীমা কার্যকর করা যেতে পারে কিনা, এবং করা হলে তা শিশুদের অনলাইন কার্যকলাপ লুকাতে উৎসাহিত করে ক্ষতি করবে কিনা, সে বিষয়েও উদ্বেগ ফুটে উঠেছে তদন্তে।
“নিষেধাজ্ঞাভিত্তিক এসব পদ্ধতি শিশুদের সহায়তার অ্যাক্সেসকেও সীমিত করতে পারে। পাশাপাশি, কম নিয়ন্ত্রিত এবং মূলধারায় নেই এমন পরিষেবার দিকেও ঠেলে দিতে পারে।” – জুন মাসে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় সতর্ক করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক ই-সেইফটি কমিশনার।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কমিশনার বলেছেন, “অনলাইন ক্ষতির বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি আরও মার্জিত করতে সরকারের স্টেকহোল্ডার ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে তারা।