ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলসে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার বহু মানুষ বিক্ষোভ করেছে। শনিবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ারের সামনেও বিক্ষোভ হয়।
Published : 20 Apr 2025, 10:19 PM
যারা শারীরিকভাবে মেয়ে হয়ে জন্মেছেন, তাদেরই ‘নারী’ বলা যাবে। রূপান্তরিত নারীদের ‘নারী’ বলা যাবে না। গত ১৬ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হাজার হাজার মানুষ লন্ডনে বিক্ষোভ করেছে।
পার্লামেন্ট স্কয়ারের কাছে জড়ো হয়ে এই বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ করে। স্লোগানে স্লোগানে ছেয়ে যায় পার্লামেন্ট স্কয়ার। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসেও হাজার হাজার ট্রান্সজেন্ডার বা তাদের অধিকারের সমর্থনকারী মানুষ বিক্ষোভে রাস্তায় নামে।
অনেকের হাতে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষার দাবিতে এবং তাদের স্বাধীনতার দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড এবং রামধনু রঙের পতাকা দেখা গেছে।
পার্লামেন্ট স্কয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে এক ট্রান্সজেন্ডার নারী বলেন, ‘‘আপনার অধিকার থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সময়টা ভয়ঙ্কর। আমরা একটা উন্নত সমাজে বাস করতাম। কিন্তু সে সমাজই এখন এমন ভয়ানক, অনিষ্টকর রায় শোনাচ্ছে।’’
যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছিল, সমতা আইনে ‘নারী’ তারাই যাদের জৈবিক লিঙ্গ নারী অর্থাৎ, জন্মসূত্রে বা শারিরীকভাবে যারা নারী। ২০১০ সালের সমতা আইনের ব্যাখ্যা নিয়ে আদালত এই রায় দেয়।
ওই আইনে উল্লিখিত পরিভাষা ‘নারী’ ও ‘লিঙ্গ’ বলতে কেবল জৈবিক নারী এবং জৈবিক লিঙ্গই বোঝানো হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেওয়ার মানে হল, রূপান্তরকামী (ট্রান্সজেন্ডার) কারও নারী হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার সার্টিফিকেট থাকলেও আইনটির আওতায় সমতার বিচারে তাদেরকে নারী বলে বিবেচনা করা উচিত না।
বিক্ষোভকারীরা বলছে, এ রায় তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের অধিকার খর্ব করার পথ প্রশস্ত করেছে। আগামী দিনগুলোতে এই রায়ের দৃষ্টান্ত সামনে রেখে এমন আরও রায় দেওয়া হতে পারে।
তবে সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে রূপান্তরিতদের অধিকার খর্বের অভিযোগ মানতে চায়নি। আদালত জানিয়েছে, বৈষম্য থেকে রূপান্তরকামী কিংবা রূপান্তরিতদের অধিকার আইনে সুরক্ষিতই থাকবে।
ব্রিটিশ সমতা আইনে কেবলমাত্র জন্মসূত্রে নারীরই বৈষম্য থেকে সুরক্ষা পাওয়া উচিত- এই যুক্তিতে স্কটিশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘ফর উইমেন স্কটল্যান্ড’।
সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট জৈবিক নারীরাই কেবল নারী বলে সর্বসম্মত ওই রায় দেয়।