শীঘ্রই ভিডিও থেকে বাড়তি আয় ‘পেতে পারেন’ টিকটক নির্মাতারা

টিকটকের এমন যে কোনো প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি সংশ্লিষ্ট অভিযোগ থেকে বেঁচে আসার কৌশলও হতে পারে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2023, 01:48 PM
Updated : 14 Feb 2023, 01:48 PM

নিজস্ব অ্যাপের বিস্তার বাড়াতে সহজ এক পন্থা অবলম্বণ করতে পারে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক। সেটি হলো, প্ল্যাটফর্মের কনটেন্ট নির্মাতাদের আর্থিক আয়ের সুযোগ বাড়ানো।

মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইনফর্মেশনের’ বিভিন্ন সূত্রের দাবি, টিকটক এমন এক ‘পেওয়াল’ ফিচার বানাচ্ছে, যা কোনো ভিডিও’তে প্রবেশের আগে এর কনটেন্ট নির্মাতাকে এক ডলার (বা তার পছন্দের মূল্য) আর্থিক ফি ঠিক করে দেওয়ার সুবিধা দেবে।

এই ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করবে, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, এটি প্ল্যাটফর্মের ইনফ্লুয়েন্সারদের বিভিন্ন জনপ্রিয় ভিডিও থেকে সরাসরি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দেবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।

ইনফর্মেশনের সূত্র বলছে, প্ল্যাটফর্ম থেকে তুলনামূলক কম আর্থিক ফি পাওয়া নিয়ে অভিযোগ আসায় নিজেদের ‘ক্রিয়েটর ফান্ড’ নতুন করে ঢেলে সাজানোর বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছে সামাজিক নেটওয়ার্কটি। এর জন্য টিকটকের প্রয়োজন তুলনামূলক বড় ফলোয়ার কাউন্ট (এক লাখ বনাম ১০ হাজার)। ফলে, বিভিন্ন যোগ্য নির্মাতাকেও প্ল্যাটফর্মটি তুলনামূলক বেশি অর্থ দিতে পারবে।

এই তহবিলে সম্ভবত এমন বিভিন্ন ব্যবহারকারী পুরস্কৃত হবেন, যারা সম্প্রতি প্ল্যাটফর্মের ভিডিও’তে বাড়ানো ১০ মিনিটের সময়সীমার সদ্ব্যবহার করে তুলনামূলক দীর্ঘ ভিডিও বানাচ্ছেন।

প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেটকে দেওয়া এক বিবৃতিতে টিকটক নিজেদের সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও কোম্পানিটি জানিয়েছে, সেবাটি কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য ‘মূল্যবান ও ফলপ্রসূ’ করে তুলতে তারা বিভিন্ন নতুন উপায় উদ্ভাবনে ‘দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’।

এই নতুন ফিচার কবে নাগাদ চালু হবে, তা পরিষ্কার না হলেও, নতুন করে ঢেলে সাজানো ক্রিয়েটর ফান্ড মার্চেই চালু করার সম্ভাবনা আছে। ব্রাজিল ও ফ্রান্সে সম্ভবত নতুন আর্থিক ব্যবস্থাটির পরীক্ষা চালাচ্ছে কোম্পানিটি।

এর জন্য বিভিন্ন বাড়তি তথ্যের প্রয়োজন পড়তে পারে। মহামারী চলাকালীন টিকটকের মার্কিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছালেও, ২০২২ সালে এর দর্শক সংখ্যায় ভাটা পড়ে।

এনগ্যাজেট বলছে, পেওয়াল ও নতুন ক্রিয়েটর ফান্ড ফিচারের সহায়তায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম তারকা এতে পোস্ট করা অব্যাহত রাখতে পারেন। অন্যথায়, তারা ইনস্টাগ্রাম বা স্ন্যাপচ্যাটের মতো চলে যেতেন।

কোম্পানির এরইমধ্যে থাকা বিজ্ঞাপনী আয় শেয়ার করা ইউটিউব ধাঁচের প্রকল্পটির সুবিধা পান কেবল হাতে গোনা শীর্ষস্থানীয় ব্যবহারকারীরা।

মনে রাখা ভালো, টিকটকের এমন যে কোনো প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি সংশ্লিষ্ট অভিযোগ থেকে বেঁচে আসার কৌশলও হতে পারে। চীনা সরকারের গুপ্তচরবৃত্তি ও ভুল তথ্য প্রচারে অ্যাপটি ব্যবহৃত হতে পারে, এমন উদ্বেগের কারণে দেশটির সরকারী ডিভাইসে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করতে চাপ দিচ্ছেন ফেডারেল ও বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের রাজনীতিবিদরা।

টিকটক দীর্ঘ সময় ধরে এইসব অভিযোগ নাকচ করে আসছে। এ ছাড়া, মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন কোম্পানির সিইও। তিনি নিয়ন্ত্রকদের রাজী করাতে না পারলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের প্রবৃদ্ধির কৌশল দ্রুতই ভেস্তে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এনগ্যাজেট।