অনেক বেশি এডিট করা ছবি নাকি এআইয়ের তৈরি ছবি সেটি বোঝার কিছু সহজ লক্ষণ রয়েছে, যা বেশিরভাগ ডিপফেইক ছবিতেই দেখা যায়।
Published : 02 Oct 2024, 03:06 PM
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চলছে এআই উন্মাদনা, সেই সঙ্গে রয়েছে ডিপফেইক ছবির ছড়াছড়ি। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ছবিকে প্রচলিত ভাষায় বলা হয়, ‘ডিপফেইক’।
বর্তমানে অনেকেই অনলাইনে দেখা যে কোনো ছবি আর আগের মতো বিশ্বাস করতে পারেন না, কারণ বিভিন্ন এআই এডিটিং টুলের মাধ্যমে এমন ছবি তৈরি সম্ভব যা দেখতে একেবারেই বাস্তবের মত।
এখন তো বিভিন্ন স্মার্টফোনে সরাসরিই এআই এডিটিং ফিচার চলে আসছে, যেমন পিক্সেল ৯-এ গুগলের ‘অ্যাড মি’ ফিচার। এ ফিচারের মাধ্যমে যে ছবি তুলছেন, তাকেই ছবিতে আনা যায় এআই কারিশমা।
এরই মধ্যে এসে যোগ হয়েছে ছবি তৈরির একটি প্ল্যাটফর্ম, মিডজার্নি। যা ডিপফেইক তৈরি একেবারেই সহজ করে তুলেছে।
এ অবস্থায় কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ছবি শনাক্ত করবেন? এ নিয়ে একটি নির্দেশনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর বিস্তারিত।
ছবিটি জুম ইন করে দেখুন
অনেক বেশি এডিট করা ছবি নাকি এআইয়ের তৈরি ছবি সেটি বোঝার কিছু সহজ লক্ষণ রয়েছে, যা বেশিরভাগ ডিপফেইক ছবিতেই দেখা যায়। ছবিতে থাকা মানুষের চোখ, মুখের প্রান্তের দিকে যদি জুম করেন, অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসঙ্গতি বা অস্পষ্টতা দেখতে পারেন যা সাধারণত এআই ছবির লক্ষণ।
এআইয়ের তৈরি ছবির বেলায় অন্যতম সমস্যার জায়গা হল হাত ও আঙুল, তাই সেখানে জুম করলে অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করতে পারেন। এ ছাড়া, মুখ প্রতিস্থাপন করা হলে প্রায় পুরো মুখের চারপাশ হালকা ঝাপসা দেখতে পারেন। ভিডিওর বেলায় কথার সঙ্গে ঠোঁটগুলো ঠিকমত নাও মিলতে পারে।
আবেগের কথা ভাবুন
মানুষের জটিল সব আবেগের প্রকাশ নিয়ে বিভিন্ন ডেপফেইক প্রোগ্রাম ও ফেইস সোয়াপ অ্যাপ সমস্যায় পড়তে পারে। আসল মুখের অভিব্যক্তি অবিশ্বাস্যভাবে সুনির্দিষ্ট ও জটিল হয়ে থাকে, যা হুবহু তুলে ধরা যে কোনোভাবেই বেশ কঠিন।
ফলে, কেউ যদি হাসির দিকে তাকান যা একটু বেশিই অনমনীয় বলে মনে হয়, বা চেহারায় হাসি থাকলেও মুখ ও চোখ অবিশ্বাস্যভাবে মলিন মনে হয়, তবে এটি এআইয়ের তৈরি ছবি শনাক্তের আরেক সূত্র হতে পারে।
পুরো ছবির দিকে তাকান
এটি বোঝা কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে, বেশিরভাগ এআই জেনারেটর এখনও এমন ছবি তৈরি করতে পারে না, যা পুরোপুরিই আসলের মতো দেখায়, কারণ সেটি করতে গেলে এগুলো খুবই নিখুঁত হতে হবে।
অর্থাৎ, একটি গ্রুপ ছবির কথাই চিন্তা করুন, এমন হতে পারে সেখানে সবার মুখে সমান আলো রয়েছে, তেমন অস্পষ্ট ছায়া বা পার্থক্য ছাড়াই। এতে ছবির লোকজন প্লাস্টিকের তৈরি বলে মনে হতে পারে, যা দেখে কিছুটা আঁচ করতে পারেন এটি আসল না নকল।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি একক পিক্সেলের কোনো ত্রুটি ধরতে পারা বেশ কঠিন হলেও কারও কোনো ছবি নিয়ে এমন সংশয় থাকলে ছবিটি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা উচিত।
ব্যাকগ্রাউন্ড এড়িয়ে যাবেন না
মানুষ রয়েছে এমন ছবিতে অনেকেই কেবল মানুষের চেহারা, চুল বা হাতের দিকে তাকিয়েই আসল নকল বোঝার চেষ্টা করতে পারেন। তবে, অনেক সময়ই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে স্পষ্টভাবেই গরমিল থাকতে পারে।
এআইয়ের তৈরি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে এমন সব স্থাপত্য বা বস্তু থাকতে পারে যার কোন অর্থই নেই।
ছবির আসল প্রেক্ষাপট খুঁজুন
এ কৌশলটি ছবির চুলচেরা বিশ্লেষণের বদলে কেবল সাধারণ একটি ওয়েব সার্চের কথা মনে করিয়ে দেয়। যে কোনো ছবির কনটেন্ট কতটা সত্য তা জানতে ওয়েব সার্চ করা তেমন কঠিন কিছু নয়।
এটি বিশেষভাবে কাজে আসে যদি ছবিটি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা কোনো জনপ্রিয় ব্যক্তির হয়। এর কারণ, একটি নির্দিষ্ট তারিখ বা সময়ে তারা কোথায় ছিলেন তা খুঁজে পাওয়া বেশ সহজ হতে পারে। কপাল ভালো থাকলে ওই ছবিটি নিয়েই অনলাইনে কোনো প্রতিবেদন পেয়ে যেতে পারেন।