‘হেইমডাল’ খ্যাত ব্রিটিশ অভিনেতা ইদ্রিস এলবাকে বিয়ে করেছেন অধিকারকর্মী ও মডেল সাবরিনা। ভিআর প্রযুক্তিতে ‘অন দ্য ব্রিঙ্ক’ নামের একটি সিনেমা তৈরিতেও সাহায্য করেছেন তিনি।
Published : 28 Jan 2024, 06:42 PM
যারা প্রতিনিয়ত দারিদ্র্যের সম্মুখীন হচ্ছেন ও বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন, তাদের অভিজ্ঞতা অনুভবের জন্য ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। আর এটা তাদের জন্য ‘সহানুভূতি পুনর্নির্মাণে’ সহায়ক হবে। — এমনই বলছেন কানাডীয় অভিনেত্রী সাবরিনা ডৌরে এলবা।
‘হেইমডাল’ খ্যাত ব্রিটিশ অভিনেতা ইদ্রিস এলবাকে বিয়ে করেছেন অধিকারকর্মী ও মডেল সাবরিনা। সম্প্রতি ‘অন দ্য ব্রিঙ্ক’ শিরোনামের একটি ভিআর প্রযুক্তির চলচ্চিত্র নির্মাণেও সাহায্য করেছেন তিনি, যেখানে সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন ও খাদ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি চলাকালীন গোটা বিশ্বে ক্ষুধা সংকটের বাস্তবতাগুলোকে আরও জীবন্ত উপায়ে তুলে ধরা হয়েছে।
সিনেমাটি বানিয়েছে দাতব্য সংস্থা ‘সেইভ দ্য চিলড্রেন’। অলাভজনক সংস্থা ‘হাংরি ফর অ্যাকশন’-এর নতুন পরিসংখ্যানের তথ্য অনুসারে, ১৯৮৪ সালে ইথিওপিয়ায় দুর্ভিক্ষের পর থেকে গোটা বিশ্বে ক্ষুধার তাড়নায় মারা গেছেন আনুমানিক এক কোটি ৮৩ লাখ মানুষ।
“আমি চলচ্চিত্র প্রযোজনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নই। তবে, এ কাজে মনোযোগ দিয়েছি কারণ এ বিষয়টি নিয়ে আমি কাজ করছি। আর আমি যে ধরনের কাজ করি তার সঙ্গে এর যোগসূত্র থাকায়, এটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ,” বলেছেন সাবরিনা।
“এ মুহূর্তে পৃথিবীতে যা কিছু ঘটছে, সেটা নিয়ে আমরা সকলেই ওয়াকিবহাল। এ কারণে আমরা ক্রমাগতই এমন সমস্যার মুখে পড়ছি। আর আমাদের কাজও যতটা ফেলা উচিৎ ততটা কার্যকর প্রভাব ফেলছে না।”
“কেবল দুর্ভিক্ষ শব্দটিই সবাইকে তাড়না দেওয়ার জন্য যথেষ্ট হওয়া উচিৎ ছিল। কারণ এটি এমন এক বিব্রতকর পরিস্থিতি, যা সকলেরই খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিৎ। তবে, দুর্ভাগ্যবশত এ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।”
“বিশেষ করে যখন নিজেদের বাজেট ও অর্থায়ন কমিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার।”
‘অন দ্য ব্রিঙ্ক’ সিনেমার শুটিং হয়েছিল গত বছর, উত্তর সোমালিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সোমালিল্যান্ডের খরাপীড়িত জনবসতিগুলোয়, যেখানে বছরের পর বছর ধরে বৃষ্টি, সংঘাত ও ক্রমবর্ধমান খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি লাখেরও বেশি মানুষকে দারিদ্র্যের মুখে ফেলেছে।
সিনেমাটিতে ‘৩৬০’ প্রযুক্তির মাধ্যমে আয়ান নামের এক ব্যক্তির গল্প ক্যামেরায় ধারণ করেছেন আলোকচিত্রী ও সেইভ দ্য চিলড্রেন-এর প্রতিনিধি মিসান হ্যারিম্যান। নিজের চার বছরের ছেলেকে অপুষ্টিতে হারানোর পাশাপাশি এক বছরের নাতি ফাইসাকেও ক্ষুধাজনিত অসুস্থতায় মারা যেতে দেখেছেন আয়ান।
জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত সাবরিনা বলেছেন, “আমি মনে করি এই ধরনের ভিআর প্রযুক্তি কাউকে সাহায্য করবে এমন ব্যক্তির অবস্থায় নিজেকে অনুভব করতে, তিনি যেখানটায় আছেন সেখানে, সেই পরিস্থিতিতে অবস্থান করতে। আর ভিআর প্রযুক্তি একে এমনভাবে দেখায়, যা আমরা আগে কখনও দেখিনি।”
“টিভিতে আমরা এমন পরিস্থিতির মুখে পড়া অনেক শিশুই দেখে অভ্যস্ত, যেখানে আপনি চাইলেই টিভির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারেন। তবে এখন ভিআর প্রযুক্তির সাহায্যে নানা মানুষের গল্প দেখার পাশাপাশি এমন অনুভূতিও মেলে যে, আপনি তাদের সঙ্গেই আছেন। আমি মনে করি, তাদের আবেগ ও মানসিক অবস্থা বোঝানোর ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রযুক্তি যথেষ্টই সহায়ক।”
“আমি মনে করি, দুইজন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় দূরত্ব হল তাদের গল্প। এটা শুধু তাদের সহানুভূতিকে ফের জাগিয়ে তুলে অপরের গল্প শেখার মতো বিষয়।”
সিনেমাটিতে এমন দৃশ্যও রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার ছবিকে একত্র করে একটি পুরোপুরি ‘ইমার্সিভ’ অভিজ্ঞতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এর নির্মাতা।