জাতিসংঘ বলছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৯০ লাখ মানুষ গৃহহীন হওয়ার পাশাপাশি সুদানের সামগ্রিক জনসংখ্যার অর্ধেক বা প্রায় আড়াই কোটি মানুষের সহায়তা প্রয়োজন।
Published : 08 Feb 2024, 12:51 PM
সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটিতে ইন্টারনেট বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এর কারণ হিসাবে ১০ মাস ধরে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোকে দুষছেন অনেকে।
এ ব্ল্যাকআউটের কোনো দায়ভার নিতে রাজি হয়নি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)’।
ইন্টারনেট স্বাধীনতা পর্যবেক্ষক সংস্থা নেটব্লকস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ বলেছে, সুদানের ‘ইন্টারনেট সংযোগে নতুন করে ধস নেমেছে’।
এর আগে আরএসএফ-এর নেতা মোহামেড হামদান দাগালোকে স্বাগত জানানোয় উগান্ডায় সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে সুদানের এক হ্যাক্টিভিস্ট দল।
নেটব্লকস বলেছে, তারা উগান্ডার ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানি ‘উগান্ডা টেলিকম’ ও ‘এমটিএন’-এর সেবায় ব্যাঘাত ঘটতে দেখেছে। তবে, দেশটির রাজধানী কাম্পালায় অবস্থানরত এক বিবিসি প্রতিবেদক বলেন, তিনি কোনো সমস্যায় পড়েননি।
সুদানের অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন যে, তারা শুক্রবার থেকেই ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে পারছেন না। এর পর থেকে পরিস্থিতি আরও বাজে দিকে যাচ্ছে।
এর জন্য আরএসএফ’কে দায়ী বলছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম।
অন্যদিকে, সংবাদ সাইট সুদান ট্রিবিউনের তথ্য অনুসারে, আরএসএফ-এর এক কর্মকর্তার অভিযোগ, দারফুর, করদোফান, খারতৌম ও গেজিরা অঙ্গরাজ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুদানের সামরিক বাহিনী, যে এলাকাগুলো বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোর নিয়ন্ত্রণে।
বুধবার নেটব্লকস বলেছে, সুদানের অন্যতম মোবাইল অপারেটর কোম্পানি জায়েন ‘বেশিরভাগ সময় অফলাইনে’ ছিল।
ফেইসবুকে দেওয়া পোস্ট বিবৃতিতে জায়েন বলেছে, তারা ‘খুবই জটিল, কঠোর ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে কাজ করছে’।
কোম্পানিটি আরও যোগ করে, ‘এ মূহুর্তে যে কারণে নেটওয়ার্ক বিভ্রাট হচ্ছে, সে পরিস্থিতি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণের বাইরে’।
নেটব্লকসের তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ আফ্রিকার মালিকানাধীন ‘এমটিএন সুদান’ ও রাষ্ট্রায়ত্ত ‘সুদানি’র মতো পরিষেবাগুলোও শুক্রবার থেকে বন্ধ।
বিবিসি বলছে, কোনো যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের পরিস্থিতি আরও বেশি ঘোলাটে করার ক্ষেত্রে একটি বাড়তি স্তর যোগ করে নেটওয়ার্ক বিভ্রাট।
চলমান যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় সুদানের জনগণ ও যারা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশটি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন, তাদের জরুরী মৌলিক চাহিদা পূরণে ৪১০ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার আপিল করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ বলছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৯০ লাখ মানুষ গৃহহীন হওয়ার পাশাপাশি সুদানের সামগ্রিক জনসংখ্যার অর্ধেক বা প্রায় আড়াই কোটি মানুষের সহায়তা প্রয়োজন।
“১০ মাসের এ যুদ্ধে সুদানের জনগণের প্রায় সবকিছুই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা, ভিটেমাটি এমনকি জীবিকাও,” বলেন জাতিসংঘের ‘আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইমার্জেন্সি রিলিফ কর্ডিনেটর’ মার্টিন গ্রিফিথস।
তিনি আরও যোগ করেন, এ পরিস্থিতি নিয়ে ‘জরুরী ভিত্তিতে’ কাজ করা উচিৎ।