“আমরা সম্ভবত তামার বৈশ্বিক সংকটের দিকে যাচ্ছি এবং এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটির চাহিদা আমরা মেটাতে পারব না।”
Published : 09 Oct 2024, 04:43 PM
পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় তামার চাহিদা মেটাতে সহায়ক হতে পারে পরিত্যাক্ত বিভিন্ন বৈদ্যুতিক তারের ভেতরে পাওয়া কোটি কোটি ডলার মূল্যের তামা — এমনই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ।
‘রিসাইকল ইয়োর ইলেকট্রিক্যালস’-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন পরিবার মিলে একশ ৩০ কোটি পরিত্যাক্ত ইলেকট্রিক্যাল গ্যাজেট রয়েছে, যার মধ্যে আছে সাড়ে ৬২ কোটিরও বেশি কেবল বা তার। সবমিলিয়ে এসব তারে ৩৮ হাজার টনেরও বেশি তামা আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যার মূল্য প্রায় ৪৮ কোটি ডলার।
বাণিজ্য প্রকাশনা ‘ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্স’-এর বিশ্লেষণ বলছে, এসব তামা যদি আরও ভালভাবে রিসাইকল করা যায় তবে তা গোটা বিশ্বে তামার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের ‘রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি’ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বায়ু টারবাইন ও সোলার প্যানেল নির্মাণের জন্য প্রয়োজন ৩ লাখ ৪৭ হাজার টন তামা।
আন্তর্জাতিক ই-বর্জ্য দিবসকে সামনে রেখে ‘গ্রেট কেবল চ্যালেঞ্জ’ চালুর উদ্যেগ নিয়েছে ‘রিসাইকল ইয়োর ইলেকট্রিকালস’। একইসঙ্গে তারা ই-বর্জ্য কমিয়ে আনা ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির উন্নয়নে সম্ভাব্যভাবে সাহায্য করার জন্য মানুষকে ১০ লাখ তার পুনরায় ব্যবহার করতে বলছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
সংগঠনটির অনুমান বলছে, এ প্রচারাভিযান থেকে মিলবে প্রায় সাড়ে ৬২ কোটি পুরানো তার, যেগুলো জোড়া দিলে যতটা লম্বা হবে তা পৃথিবী থেকে চাঁদে গিয়ে সেখান থেকে ফিরে আসার দূরত্বের সমান। আর ভর বিবেচনার এ তামার পরিমান ৩২ হাজার টনেরও বেশি।
“আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, এসব পুরানো ইলেকট্রিক্যালসের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার টন। এগুলো হয় বাতিল বা আমাদের ফার্নিচারের ড্রয়ারে অলসভাবে পড়ে আছে। এমন তারের স্তুপ প্রযুক্তি ও টুল খাতে তামার চাহিদা মেটাতে পারে, যা আমাদের ক্রমবর্ধমান তামার সংকট মোকাবেলায় অনেক অবদান রাখবে,” বলেছেন ‘রিসাইকল ইয়োর ইলেকট্রিকালস’-এর নির্বাহী পরিচালক স্কট বাটলার।
এদিকে, রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি’র পরিবেশ নীতি উপদেষ্টা ইজি মঙ্ক বলেছেন, “আমাদের পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যত গড়তে তামা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সরকারকে বুঝতে হবে। আমাদের বিশ্লেষণ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বায়ু ও সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের প্রায় সাড়ে তিন লাখ টন তামা লাগবে।”
“তবে আমরা সম্ভবত তামার বৈশ্বিক সংকটের দিকে যাচ্ছি এবং এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটির চাহিদা আমরা মেটাতে পারব না।”