একটি ভালো কোম্পানির হার্ড ড্রাইভ কিনুন। হার্ড ড্রাইভে কোনো ইলেকট্রনিক বা যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে সেটি খুব সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
Published : 15 Jul 2024, 03:06 PM
ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজের তথ্য ও কনটেন্ট সংগ্রহ করে রাখার অন্যতম নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হল হার্ড ড্রাইভ বা এইচডিডি। বর্তমানে বিভিন্ন রূপে ক্লাউড স্টোরেজ পরিষেবা থাকলেও, সেখানে সাইবার আক্রমণের বাড়তি ঝুঁকি থাকে। আরও অনেক কারণেই এখনও বেশিরভাগ মানুষই হার্ড ড্রাইভের ওপর নির্ভর করেন।
কিছু হার্ড ড্রাইভ অনেক বছর ধরে চললেও কখনও এগুলো এক-দুই বছরেই নষ্ট হতে পারে। উৎপাদনের গুণমান, ব্যবহারের সাবধানতা, উচ্চ তাপমাত্রা,এবং বিদ্যুৎ প্রবাহের মতো বিষয়গুলো হার্ড ড্রাইভকে প্রভাবিত করতে আরে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট হাও-টু গিক।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে একটি হার্ড ড্রাইভ নিরাপদে ব্যবহার করবেন ও আরও বেশিদিন টিকিয়ে রাখবেন।
একটি ভালো কোম্পানির হার্ড ড্রাইভ কিনুন। হার্ড ড্রাইভে কোনো ইলেকট্রনিক বা যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে সেটি খুব সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ফলে, হার্ড ড্রাইভ কেনার সময় নির্ভরযোগ্য উৎপাদক কোম্পানি বাছাই করা জরুরি। স্বনামধন্য ব্র্যান্ডগুলোর কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া রয়েছে, যা বিভিন্ন ত্রুটির সুযোগ কমিয়ে নষ্ট হওয়ার শঙ্কাও কমাতে পারে।
সিগেট, তোশিবা ও ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল হল নাম করা কিছু এইচডিডি নির্মাতা।
এ ছাড়া, নিশ্চিত করুন নতুন হার্ড ড্রাইভের সঙ্গে যেন ওয়ারেন্টি থাকে। ওয়ারেন্টি এইচডিডিকে আরও দীর্ঘস্থায়ী না করলেও ব্যবহারকারীকে আশ্বস্ত করতে পারে।
হার্ড ড্রাইভ যত্ন সহকারে ব্যবহার করুন। অসাবধানে হার্ড ড্রাইভ হাত থেকে ফেলে দিলে এটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এর প্রভাবে রিড/রাইট হেড ভেঙে যেতে পারে, স্ক্র্যাচ পরতে পারে বা ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি, হার্ড ড্রাইভের ভেতরকার উপাদানেরও ক্ষতি হতে পারে। রিড/রাইট হেড বেঁকে গিয়ে ভেতরের স্পিনিং মোটর-এর ক্ষতি করতে পারে । আরও গুরুতর ক্ষেত্রে, ভেতরকার সংযোগ ও সার্কিট আলগা হয়ে যেতে পারে।
এ কারণে, এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ আরও যত্ন সহকারে চালাতে হবে। পাশাপাশি, ল্যাপটপ বা কোনো ডিভাইসের ভেতরের এইচডিডি ভালো রাখতে ডিভাইসটি সাবধানে রাখুন, যেন পড়ে না যায়।
এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ ল্যাপটপ বা পিসি থেকে খুলে ফেলার আগে ‘ইজেক্ট’ করে নিন। এ অভ্যাস তথ্য সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি এইচডিডি’র রিড/রাইট হেডকে সঠিকভাবে বন্ধ করে, ‘হেড ক্র্যাশ’ প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া, এও নিশ্চিত করে যে ড্রাইভটি সক্রিয়ভাবে ঘুরছে না বা এটিকে আনপ্লাগ করার সময় তথ্য রিড/রাইট-এর কাজে যুক্ত হচ্ছে না।
ইজেক্ট করার ফলে অপারেটিং সিস্টেম নিরাপদে ড্রাইভ আনমাউন্ট করতে ও এইচডিডি স্পিন্ডল মোটরের মতো চলমান কাজ বন্ধ করতে দেয়। আকস্মিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে সার্কিটে হঠাৎ বাধা আসায় ভোল্টেজের ওঠানামা, এমনকি ঊর্ধ্বগতির বিদ্যুৎ চলাচল হতে পারে যা এইচডিডি’র সার্কিটকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। ঠিক এ কারণেই, হার্ড ড্রাইভ হঠাৎ করে না খুলে আগে ইজেক্ট করে নিন।
পিসির ক্ষেত্রে, পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করুন। হার্ড ড্রাইভগুলোতে ভোল্টেজ ওঠানামা ও বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার মতো বিষয়ের জন্য আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকলেও, এগুলো শুধু পাওয়ার ও ভোল্টেজ সরবরাহের ছোট পরিবর্তনগুলো সহ্য করতে পারে। লম্বা পরিসরের বিদ্যুৎ বা ভোল্টেজের পরিবর্তনের ফলে এইচডিডির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হতে পারে। অনেক সময় হারিয়ে যেতে পারে জরুরি তথ্য। এ কারণে, একটি ভাল মানের পিএসইউ (পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট) ব্যবহার করা জরুরি।
ডিভাইস ও হার্ড ড্রাইভের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। ওভারহিটিং বা অতিরিক্ত গরম হওয়া হার্ড ড্রাইভের আয়ু কমিয়ে দিতে পারে। ভারী ব্যবহারের সময়ও হার্ড ড্রাইভের অপারেটিং তাপমাত্রা ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এর নিচে রাখার চেষ্টা করা উচিত। হার্ড ড্রাইভের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, নিশ্চিত করতে হবে কম্পিউটার যেন অতিরিক্ত গরম না হয়। সরাসরি তাপের উৎস থেকে দূরে, এবং পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় ডিভাইসটি রাখুন। পাশাপাশি, বাতাস চলাচলে বাধা রোধ করতে নিয়মিতভাবে ‘এক্সস্ট ভেন্ট’ থেকে ধুলো-ময়লা পরিষ্কার করুন। এ ছাড়া, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি উপাদান দিয়ে পিসির কেইস-এর মধ্যে ভিড় জমানো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে প্রযুক্তি সাইট হাও-টু গিক।