নিজের নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রথমবারের মতো সম্পদ তহবিলের ধারণাটি তুলে ধরেন ট্রাম্প। ওই সময় তিনি বলেন, ‘শুল্ক ও নানা কৌশলী উপায়ে’ অর্থায়ন করা যেতে পারে এতে।
Published : 04 Feb 2025, 01:36 PM
যুক্তরাষ্ট্রে সার্বভৌম বা কার্যকর এক সম্পদ তহবিল গঠনে পদক্ষেপ নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন টিকটককে কিনে নিতে পারে এটি।
সোমবার এক নির্বাহী আদেশে সই করে সম্পদ তহবিল গঠনের প্রক্রিয়াটি শুরু করেন ট্রাম্প। এ সময় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, শিগগিরই ‘অন্যতম বড়’ তহবিলগুলোর মধ্যে একটিতে পরিণত হবে এটি।
বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে সার্বভৌম সম্পদ তহবিল রয়েছে, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের সুবিধার জন্য উদ্বৃত্ত আয় বিনিয়োগ করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি। তবে বর্তমানে বাজেট ঘাটতিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই অর্থের উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু না বলেই ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, “এই তহবিলের জন্য আমরা অনেক অর্থ যোগার করতে যাচ্ছি।”
নিজের নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রথমবারের মতো সম্পদ তহবিলের ধারণাটি তুলে ধরেন ট্রাম্প। ওই সময় তিনি বলেন, ‘শুল্ক ও নানা কৌশলী উপায়ে’ অর্থায়ন করা যেতে পারে এতে।
এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় তিন বাণিজ্য পার্টনার চীন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।
তবে মঙ্গলবার মেক্সিকো ও কানাডার পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের বিষয়টি ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা এখনও বহাল আছে এবং মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, আগামী ১২ মাসের মধ্যে এই সম্পদ তহবিল গঠিত হবে। এর পরিকল্পনা হচ্ছে বর্তমানে মার্কিন সরকারের মালিকানাধীন সম্পদ ‘আমেরিকান জনগণের জন্য’ প্রস্তুত রাখা।
বিশ্বের দুটি অন্যতম বড় সার্বভৌম সম্পদ তহবিল রয়েছে সৌদি আরব ও নরওয়ের, যা দেশগুলোর জীবাশ্ম জ্বালানী বিক্রির টাকায় চলে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রকল্পে বিনিয়োগ করে তারা।
এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, বিমানবন্দর, সড়ক ও চিকিৎসা গবেষণার মতো অবকাঠামো প্রকল্পসহ ‘দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে’ অর্থায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্পদ তহবিল।
তহবিল গঠনের নির্বাহী আদেশে সই করার পর জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটককে এটি কিনে নিতে পারে এমন ধারণাও প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২৪ সালের ২৪ এপ্রিল ‘প্রটেকটিং আমেরিকানস ফ্রম ফরেন অ্যাডভারসারি কন্ট্রোলড অ্যাপলিকেশন অ্যাক্ট’ নামের একটি বিলে সই করে তা আইনে পরিণত হলে যুক্তরাষ্ট্রে হুমকির মুখে পড়ে টিকটক।
এ আইনে চীনা মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স টিকটকে তাদের অংশীদারত্ব ছয় মাসের মধ্যে কোনো আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেবে, নয়ত যুক্তরাষ্ট্রে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ হবে।
জাতীয় নিরাপত্তার নামে এই নতুন আইন কার্যকর হওয়ার আগ দিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় চীনা মালিকানাধীন অ্যাপটি আমেরিকান ব্যবহারকারীদের জন্য সেবা দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
মার্কিন ব্যবহারকারীরা টিকটক বন্ধের প্রতিবাদ জানানোর পর সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা ৭৫ দিনের জন্য তুলে নেন ট্রাম্প।
“আমরা কিছু একটা করতে যাচ্ছি, হয়তো টিকটক দিয়ে। সম্ভবত তা না-ও করতে পারি। কিছু করলে তা সঠিক চুক্তির মাধ্যমেই আমরা করবো। অন্যথায় আমরা তা করব না... টিকটককে আমরা হয়তো এই সম্পদ তহবিলে রাখতে পারি,” বলেছেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট এও বলেছেন, টিকটক অধিগ্রহণের জন্য আলোচনা করছে সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটকে টিকটক বিক্রির ‘নিলাম যুদ্ধ’ দেখতে চান তিনি।
এ ছাড়াও, ল্যারি এলিসন ও ইলন মাস্কের মতো প্রযুক্তি খাতের অন্যান্য বড় নামগুলোও সম্ভাব্য ক্রেতা তালিকায় আছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।