৭৩০ কোটি ডলার উদ্ধার করেছে দেউলিয়া এফটিএক্স

ধসের মুখে পড়া এফটিএক্স’র বিভিন্ন অনিয়মিত তহবিল স্থানান্তর ও দুর্বল অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থার বিষদ বিবরণ দিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নতুন সিইও জন রে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2023, 11:43 AM
Updated : 13 April 2023, 11:43 AM

৭৩০ কোটি ডলারের বেশি নগদ ও তরল ক্রিপ্টো সম্পদ পুনরুদ্ধার করেছে ধসের মুখে পড়া ক্রিপ্টো একচেঞ্জ এফটিএক্স।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যে এক দেউলিয়া আদালতের শুনানিতে এফটিএক্স-এর অ্যাটর্নি অ্যাটর্নি অ্যান্ডি ডায়েটডেরিচ বলেন, জানুয়ারির পর থেকে কোম্পানির সম্পদ বেড়েছে আট কোটি ডলারের বেশি।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সম্পদ সংগ্রহে ও এফটিএক্স’র সাবেক প্রধান নির্বাহী ব্যাংকম্যান-ফ্রিডের নেতৃত্বে কী ভুল হয়েছে, সেগুলো খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চালানোর পর কোম্পানিটি এখন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। ফ্রিড নিজের দোষ স্বীকার করেননি।

“এই পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি এর আবর্জনাও দূরে সরে গেছে।” --বলেন ডায়েটডেরিচ।

২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ক্রিপ্টোমুদ্রার দামের ওপর ভিত্তি করে এই পুনরুদ্ধারের মূল্য দাঁড়ায় ৬২০ কোটি ডলার। সে সময় কেবল তিনদিনের মধ্যেই প্ল্যাটফর্মটি থেকে ছয়শ কোটি ডলার অর্থ উত্তোলন করেন বিভিন্ন ক্রিপ্টো কারবারি। পরবর্তীতে প্রতিদ্বন্দ্বী বাইন্যান্স এক ‘উদ্ধার চুক্তি’ থেকে সরে আসায় আদালতে নিজেদের দেউলিয়া আবেদন জমা দেয় এফটিএক্স।

ধসের মুখে পড়া এফটিএক্স’র বিভিন্ন অনিয়মিত তহবিল স্থানান্তর ও দুর্বল অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থার বিষদ বিবরণ দিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নতুন সিইও জন রে। আর একে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থতা’ হিসেবেও আখ্যা দেন তিনি।

ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে নিজেদের বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা করছে এফটিএক্স। আর সম্ভবত এই প্রান্তিকেই তারা কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারে বলে জানান ডায়েটডেরিচ।

দেউলিয়া ঘোষণার সময় কোম্পানিতে ক্রিপ্টো জমা রাখা বিভিন্ন গ্রাহকের জন্য রিবুটের মানে কি দাঁড়াতে পারে, সে সম্পর্কে কয়েকটি বিশদ বিবরণীও দেন তিনি।

এখন পর্যন্ত কেবল জাপানের গ্রাহকরা এফটিএক্স থেকে অর্থ তুলতে পেরেছেন। দেশটির তুলনামূলক কঠোর ক্রিপ্টো নীতিমালাকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ডায়েটডেরিচ।

নিজেদের ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ পরিষেবা পুনরায় চালুর জন্য ব্যপক বিনিয়োগ প্রয়োজন এফটিএক্স-এর। কারণ হিসাবে গ্রাহক প্রান্তের ইন্টারফেসের সঙ্গে পর্দার আড়ালে অর্থ পাচারের সংযোগ না থাকাকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন আইনজীবীরা।

“অ্যাপটি সুন্দরভাবে কাজ করেছে। তবে, সত্যিকার অর্থে এটি একটি মুখোশ ছিল।” --বলেন ডায়েটডেরিচ।

তিনি আরও বলেন, গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধের বদলে এফটিএক্স ওই তহবিল ব্যবহার করে সেবাটি পুনরায় চালু করবে কি না, সেটি পরিষ্কার নয়। এক্সচেঞ্জ পুনরায় চালুর জন্য বাইরের তহবিল বা এক্সচেঞ্জের সম্পদ বিক্রির প্রয়োজন হতে পারে।

ডায়েটডেরিচ বলেন, এফটিএক্স একটি প্রাথমিক ‘চ্যাপ্টার ১১’ পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছে, যা কোম্পানির দেউলিয়াত্ব থেকে বেরিয়ে আসার পথ হিসেবে কাজ করতে পারে।

জুলাইয়ের মধ্যে এই পরিকল্পনার নথি আদালতে জমা দিতে চায় এফটিএক্স। তারা অবশ্য স্বীকার করেছে, কোম্পানির সম্পদের অংশ পাওয়ার উদ্দেশ্যে ঋণদাতাদের মধ্যে চলমান লড়াইয়ের কারণে অনেক বেশি বিবরণি তৈরি করতে হবে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আগে এফটিএক্স-এর এই পরিকল্পনা অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনাও কম বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

কোম্পানির পতনে ভূমিকা রাখায় ব্যাংকম্যান-ফ্রিড ও কোম্পানির বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, ফ্রিড নিজের দোষ স্বীকার না করলেও কোম্পানিতে তার ঘনিষ্ঠমহলের সাবেক সদস্যরা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন।