ওনলিফ্যানস এমন এক ওয়েবসাইট, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা কোনো ধরনের সেন্সরশিপ ছাড়াই কনটেন্ট পোস্ট করতে পারেন এবং গ্রাহকরা আর্থিক ফি’র বিনিময়ে সেসব দেখতে পারেন।
Published : 09 Oct 2024, 05:22 PM
প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইট ওনলিফ্যানস-এ ১৬ বছর বয়সী একজন কিশোরীর যৌনাচারের ভিডিও পোস্ট করার পর শিশু পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন এক মার্কিন নাগরিক।
ওনলিফ্যানস এমন এক ওয়েবসাইট, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা কোনো ধরনের সেন্সরশিপ ছাড়াই বিভিন্ন কনটেন্ট পোস্ট করতে পারেন এবং গ্রাহকরা আর্থিক ফি’র বিনিময়ে এসব কনটেন্ট দেখতে পারেন। কার্যত সাইটটি হয়ে উঠেছে যৌন কর্মীদের তৈরি করা যৌনতাপূর্ণ ভিডিও প্রদর্শনের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।
দায় স্বীকার করা ৩৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম ম্যাথিউ রিচার্ডসন। তার সাজার রায় হবে ১৯ ডিসেম্বর। এতে তিনি পাঁচ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও আড়াই লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়তে পারেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
এর আগে জুলাই মাসে রয়টার্স প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে ওনলিফ্যানস-এ শিশুদের ওপর যৌন নিপিড়নের ভিডিও দেখানোর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দায়ের করা বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে রিচার্ডসনের এ মামলার কথা উঠে এসেছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে ওহাইও’র এক মহাসড়কের রেস্ট স্টপ থেকে গ্রেপ্তার হন রিচার্ডসন, নিউ ইয়র্কের একজন কিশোরীর সঙ্গে পালিয়েছিলেন তিনি। একটি সুপারশপে তাদের দেখা হওয়ার পর থেকেই তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মামলার নথি অনুসারে, ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর ওনলিফ্যানস অ্যাকাউন্টে ‘স্কাইলার র্যাভেনউড’ ছদ্মনামে ওই কিশোরীর সঙ্গে নিজের যৌনাচারের ভিডিও পোস্ট করেছিলেন রিচার্ডসন।
“এটা দুঃস্বপ্ন ছিল, ও এখনও ঠিক হয়ে উঠতে পারেনি,” রয়টার্সকে বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কিশোরীর একজন আত্মীয়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মার্কিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালতের রেকর্ডে ওনলিফ্যানস-এ শিশু নিপীড়ন সংশ্লিষ্ট ৩০টি অভিযোগ চিহ্নিত করেছে রয়টার্স। সাইটটিতে থাকা শিশুদের দুইশর বেশি স্পষ্ট ভিডিও ও ছবির কথা উল্লেখ রয়েছে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। এর মধ্যে কিছু ভিডিও’তে শিশুদের সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের যৌনাচার করতেও দেখা গেছে।
রিচার্ডসনের মামলা নিয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করেনি ওনলিফ্যানস। আর ওই ভিডিও পোস্ট করার পর এক বছরের বেশি সময় ধরে তার অ্যাকাউন্ট বহাল তবিয়তে ছিল। তবে, জুনের মাঝামাঝি সময়ে ওই ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হয়। এমনকি রয়টার্স ওনলিফ্যানস’কে এ মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তার অ্যাকাউন্টও সরিয়ে ফেলে সাইটটি।
ওনলিফ্যানস বলছে, তাদের ওয়েবসাইটে শিশুদের প্রবেশাধিকার নেই। আর তারা সকল কনটেন্টই পর্যবেক্ষণ করে ও শিশু নিপীড়নের কোনো কনটেন্ট নিয়ে অভিযোগ পেলে তা তাৎক্ষণিকভাবেই সরিয়ে ফেলে।
সাইটটি আরও যোগ করেছে, যেসব অ্যাকাউন্ট সাইটের নীতিমালা লঙ্ঘন করে, তারা সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।