এআই প্রযুক্তির উত্থান নিয়ে বেশ কিছু উদ্বেগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করা, জালিয়াতি, চাকরি ছাঁটাই ও অন্যান্য কাজে এ প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহার।
Published : 27 Nov 2023, 12:47 PM
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে নতুন এক আন্তর্জাতিক চুক্তি করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য’সহ মোট ১৮টি দেশ।
এ চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানিকে ‘শুরু থেকেই নিরাপদ উপায়ে’ এ প্রযুক্তি বিকাশে চাপ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
রোববার প্রকাশিত ২০ পৃষ্ঠার এক নথিতে ১৮টি দেশ একমত হয়েছে যে, এআই প্রযুক্তি নকশা ও ব্যবহার করা কোম্পানিগুলোকে এটি এমনভাবে বিকাশ করতে হবে যাতে গ্রাহক ও জনসাধারণকে এর অপব্যবহার থেকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
রয়টার্স বলছে, চুক্তিটি বাধ্যতামূলক নয়। আর এর বেশিরভাগ সুপারিশই সাধারণ পর্যায়ের। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, বিভিন্ন এআই ব্যবস্থার সম্ভাব্য অপব্যবহার ঠেকানো, ডেটা টেম্পারিং থেকে সুরক্ষা ও সফটওয়্যার সরবরাহকদের যাচাই করার মতো বিষয়গুলো।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ‘সিআইএসএ’র পরিচালক জেফ ইস্টারলি বলেন, এআই ব্যবস্থাকে নিরাপদ রাখার এ চুক্তিতে এতগুলো দেশের অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
“এ চুক্তিতে আমরা প্রথমবার দেখেছি, এআইয়ের সক্ষমতা কেবল ভালো ফিচার দিয়ে যাচাই করা উচিৎ নয়, বরং এগুলো কত দ্রুত বাজারে আসে ও কীভাবে এর খরচ কমানো যায়, সে বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।” --রয়টার্সকে বলেন ইস্টারলি।
তিনি আরও বলেন, চুক্তি অনুসারে, এআই প্রযুক্তির নকশা করার সময়ই এর নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা উচিৎ।
চুক্তিটি একটি ধারাবাহিক উদ্যোগের অংশ, যার মধ্যে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন সরকারকে এআইয়ের বিকাশকে একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। আর এর গুরুত্ব বড় পরিসরে অনুভূত হচ্ছে এ শিল্প ও সমাজে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি যে ১৮টি দেশ এ নতুন গাইডলাইনে স্বাক্ষর করেছে তার মধ্যে রয়েছে জার্মানি, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চিলি, ইসরায়েল, নাইজেরিয়া ও সিঙ্গাপুর।
এআই প্রযুক্তিকে কীভাবে হ্যাকারদের কাছ থেকে সুরক্ষা দেওয়া যায় ও এআই মডেল প্রকাশ পাওয়ার পর এতে কী কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হয়েছে, এমন বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে এ চুক্তির কাঠামোতে।
তবে, এআইয়ের যথাযথ ব্যবহার বা বিভিন্ন এআই মডেলের ডেটা সংগ্রহের উপায় নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই এ চুক্তিতে।
এআই প্রযুক্তির উত্থান নিয়ে বেশ কিছু উদ্বেগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করা, জালিয়াতি, চাকরি ছাঁটাই ও অন্যান্য কাজে এ প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহার।
এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিভিন্ন খসড়া নীতি প্রণয়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের আগেই পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপ। সম্প্রতি এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালিও।
অন্যদিকে, বাইডেন প্রশাসনও নিজ দেশের আইন প্রণেতাদের এআই নিয়ে নীতিমালা তৈরির জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে, এর কার্যকরী নীতিমালা পাশ করা নিয়ে খুব সামান্যই অগ্রগতি দেখিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।
মার্কিন গ্রাহক, কর্মী ও অন্যান্য সংগঠনের ওপর এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে অক্টোবরে নতুন এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছে হোয়াইট হাউজ।