সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে; চলতি বছর এ ঘটনা ঘটল কেবল তৃতীয়বারের মত।
বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকার মধ্যে দর পতনের তুলনায় দর বেড়েছে, এমন কোম্পানির সংখ্যা বেশি দেখা গেছে রোববার।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। ৮৩টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৪৬টির। ১৯৫টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে ফ্লোর প্রাইসে। ৬৭টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি।
চলতি বছর ১৪টি সপ্তাহের মধ্যে প্রথম কর্মদিবসে সূচক বাড়তে দেখা গেছে মাত্র দিনবার। এর আগে গত ৫ মার্চ ৩৬ পয়েন্ট এবং ১৫ জানুয়ারি ৩৫ পয়েন্ট সূচক বেড়েছিল। বাকি প্রতিদিনই কমেছে।
রোববার সূচক বাড়লেও লেনদেন কমে গেছে অনেকটাই। গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার হঠাৎ লাফে লেনদেন ছাড়ায় ৬৬৬ কোটি টাকা। সেখান থেকে রোববার কমে হয়েছে ৫৩১ কোটি ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
আগের বহুদিনের মত এদিনও পুঁজিবাজারে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির দাপট দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে কেবল একটির পরিশোধিত মূলধন একশ কোটি টাকার বেশি আর একটির মূলধন একশ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই।
আবারও দর বৃদ্ধির শীর্ষে দেখা যাচ্ছে উত্থানে থাকা লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের শেয়ার। লোকসানি এ কোম্পানির শেয়ারদর ১০ কর্মদিবসে ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ছাড়িয়ে গেল ৮০ টাকার ঘর।
সব মিলিয়ে শীর্ষ দশের চারটি কোম্পানির দর ৯ শতাংশের বেশি, একটির দর ৮ শতাংশ, দুটি করে কোম্পানির দর ৭ ও ৬ শতাংশ এবং একটির দর বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি।
লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ছাড়া অন্য কোম্পানিগুলো হল আমরা টেকনোলজি, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং, মেট্রো স্পিনিং, অ্যাপেক্স ফুড, জেমিসি সি ফুড, নাভানা ফার্মা, জিকিউ বলপেন, এপেক্স ফুটওয়্যার এবং বিডিথাই অ্যালুমিনিয়ম।
আরও দুটি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, ৫টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১০টি কোম্পানির দর ৩ শতাংশের বেশি, ১১টির দর ২ শতাংশের বেশি এবং ১৮টির দর বেড়েছে এক শতাংশের বেশি।
অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ৫.৩৭ শতাংশ দর হারিয়েছে গত সপ্তাহে অস্বাভাবিক উত্থান দেখা লোকসানি কোম্পানি মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ। লাফাতে থাকার পর টানা তিন প্রান্তিকে লোকসান দেখানো ইনটেক অনলাইনও দর হারিয়েছে ৫ শতাংশের বেশি।
আরও দুটি কোম্পানির দর ৩ শতাংশের বেশি এবং ছয়টির দর কমেছে ২ শতাংশের বেশি।
কোম্পানিগুলো হল জুট স্পিনার্স, আইএসএন, উসমানিয়া গ্লাস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, এমারেল্ড অয়েল, স্টাইলক্রাফট, আরামিট সিমেন্ট এবং এপেক্স ট্যানারি।
লেনদেনে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গেছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। এই খাতের ১১টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ১০৩ কোটি টাকার শেয়ার, যা মোট লেনদেনের ২০ শতাংশেরও বেশি।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৬ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। আর কোনো খানে ৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়নি।
দর বৃদ্ধির দিক দিয়ে এদিন সবচেয়ে ভালো গেছে জীবন বীমা ও খাদ্য খাত। জীবন বিমার ১৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৯টির, আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে দুটির, আর একটির দর কমেছে।
খাদ্য খাতের ২১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির। দাম কমেছে ৩টির আর চারটি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫টি কোম্পানির দর বেড়েছে, একটি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে এবং তিনটির দম কমেছে।
আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় দুইশ কোটি টাকার বেশি বেড়ে যাওয়ার পেছনে কাজ করে একটি গুঞ্জন। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে বন্ডের বিনিয়োগ ব্যাংকের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমার বাইরে যাচ্ছে, এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে অনেক নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারী সক্রিয় হন।
তবে সংশোধিত আইনে কেবল মন্ত্রিসভা সায় দিয়েছে, এখনও তা সংসদে ওঠেনি। ফলে এটি কার্যকর হতে এখনও সময় লাগবে। এই বিষয়টি জানিয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে সতর্ক করেন একজন বিশ্লেষক।