স্বল্পমূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেনের এ প্ল্যাটফর্মে শুরুতেই থাকছে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা ওরাইজা অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও মাস্টার ফিড এগ্রোটেকসহ ওটিসি থেকে আসা আরও চার কোম্পানি।
ওটিসি মার্কেট থেকে আসা কোম্পানিগুলো হল- এপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেড, ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস লিমিটেড, হিমাদ্রী লিমিটেড ও বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেড।
ডিএসই এর ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ এ লেনদেন বোর্ড চালু উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার নিকুঞ্জে ডিএসই টাওয়ারে উদ্বোধন অনুষ্ঠানও হবে।
ডিএসইতে বৃহস্পতিবার থেকে চালু হলেও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ- সিএসই। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজারে চলতি বছরের ১০ জুন এসএমই প্ল্যাটফর্মে লেনদেন শুরু হয়।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মূলধন উত্তোলনের সুযোগ দিতে মূল লেনদেন প্ল্যাটফর্মের বাইরে বিশেষ এ বোর্ড চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য পৃথক বিধানও করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এর অংশ হিসেবে পুঁজিবাজারে ৩০ কোটি টাকার নিচের স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার পৃথক এ এসএমই বোর্ড লেনদেন হবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা পর্যায়ক্রমে মূল মার্কেটে থাকা স্বল্প মূলধনি কোম্পানিকেও এ বোর্ডে আনার পরিকল্পনা করছে।
এরইমধ্যে এসএমই বোর্ডে লেনদেনের নিয়ম জানিয়েছে ডিএসই।
নিয়ম অনুযায়ী, শুধু যোগ্য বিনিয়োগকারী বা প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এমন শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারবেন। যোগ্য বিনিয়োগকারী বলতে যাদের এক কোটি টাকার বেশি শেয়ারে বিনিয়োগ থাকবে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে।
পাশাপাশি পুঁজিবাজারে যেসব দেশি বা বিদেশি ব্যক্তির বাজারমূল্যে অন্তত ৫০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে, তারাই এসএমই বোর্ডের আইপিওতে বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন সবাই।
মূল বোর্ডের মত এসএমই বোর্ডের তালিকাভুক্ত শেয়ারে কোনো ক্যাটাগরি থাকবে না। এ বোর্ডের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে ‘এস’ সংকেত দেওয়া থাকবে।
মূল বোর্ডের ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির মত হবে এসএমই বোর্ডের শেয়ারের সেটেলমেন্ট সময়। শেয়ার কিনতে মার্জিন ঋণ নেওয়া যাবে এবং নিটিং করা যাবে। এ বোর্ডে লেনদেনের খরচ হবে মূল বোর্ডের মত।
এ পর্যন্ত পাঁচটি এসএমই কোম্পানিকে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তোলার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি।
কোম্পানিগুলো হচ্ছে-নিয়ালকো অ্যালয়, মোস্তফা মেটাল, ওরাইজা অ্যাগ্রো, মাস্টার ফিড এগ্রোটেক ও কৃষিবিদ ফিড।
এর মধ্যে নিয়ালকো অ্যালয়েজ টাকা তুলেছে এবং সিএসইতে লেনদেন হচ্ছে। ডিএসইতে লেনদেনের জন্য এখনও তালিকাভুক্তি পায়নি।
মোস্তফা মেটালের সাবস্ক্রিপশন চলেছে এবং কৃষিবিদ ফিডে সাবস্ক্রিপশন সামনে শুরু হবে।
নতুন তালিকাভুক্ত হচ্ছে ২ কোম্পানি
ডিএসইতে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পাওয়া এসএমই খাতের দুই কোম্পানি ওরাইজা অ্যাগ্রো ও মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেকের লেনদেন এসএমই প্ল্যাটফর্মে শুরু হবে বৃহস্পতিবার।
মাস্টার ফিড
গত মঙ্গলবার মাস্টার ফিডের শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
কোম্পানিটি ১০ টাকা দামে এক কোটি শেয়ার বিক্রি করে পুঁজিবাজার থেকে ১০ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলন করেছে।
আইপিওর টাকা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, মূলধন বৃদ্ধি ও ইস্যু ব্যবস্থাপনার কজে ব্যয় করবে মাস্টার ফিড।
২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৬৮ পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ১৪ টাকা ৮ পয়সা।
বুধবার প্রতিষ্ঠানটি ২০২০-২০২১ হিসাব বছরের তথ্য দিয়েছে। এতে ওই বছরে ৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছে বলে জানিয়েছে। এসময় আইপিও পরবর্তি শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা।
ওরাইজা অ্যাগ্রো
ওরাইজা অ্যাগ্রোর শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর।
কোম্পানিটি ১০ টাকা দামে এক কোটি শেয়ার বিক্রি করে ১০ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলন করেছে।
এ টাকা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, মূলধন বৃদ্ধি ও ইস্যু ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যয় করবে।
২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ১ টাকা ২ পয়সা; শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ১৮ টাকা ৯ পয়সা।
বুধবার প্রতিষ্ঠানটি ২০২০-২০২১ হিসাব বছরের তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে ওই বছরে ৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা মুনাফা করার কথা জানিয়েছে। আইপিও পরবর্তি শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৩৪ পয়সা।
আরও পড়ুন