দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদনকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Published : 10 Dec 2020, 03:45 PM
লটারিতে চার লাখ ৬৫ হাজার ২৯০ জন আবেদনকারী বিজয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার গুলশানের লেক শোর হোটেলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েটের সহযোগিতায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয় আইপিওর লটারি।
অনুষ্ঠানে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, “রবির আইপিওতে ১২ লাখ ৮০ হাজার ৪২৫টি আবেদন জমা পড়ে। সাধারণ বিনিয়োগকারী, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারী এই তিনটি ক্যাটাগরিতে লটারি হয়।”
সাহেদ আলম জানান, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে ১০ লাখ ৮১ হাজার ১১টি আবেদনের পড়ে, এর মধ্যে ৩ লাখ ১০ হাজার ১৯৪ জন বিজয়ী হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে ৯৪ হাজার ৫৭৩ জন আবেদন করে বিজয়ী হয়েছেন ৭৭ হাজার ৫৪৮ জন। এছাড়া প্রবাসীদের ৯৭ হাজার ৬৯২ আবেদনের মধ্য থেকে বিজয়ী হয়েছেন ৭৭ হাজার ৫৪৮ জন প্রবাসী বিনিয়োগকারী। লটারিতে মোট ৪ লাখ ৬৫ হাজার ২৯০ জন বিজয়ী হয়েছেন।”
লটারির ফলাফল রবি, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং আইপিওতে কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অংশীদার হতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে আমরা বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত। এজন্য রবির আইপিও প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ পথ পাড়ি দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।”
মাহতাব উদ্দিন বলেন, “পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে সব কোম্পানিকেই কিছু সুবিধা দেওয়া হয়। এ হিসেবে আমরাও ২% মিনিমাম টার্নওভার ট্যাক্স এবং করপোরেট কর হারে ১০% অব্যাহতি চেয়েছিলাম।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য যত টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তার ১০ গুণের বেশি আবেদন জমা পড়েছিল।
পুঁজিবাজার থেকে ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা তোলার জন্য ১৭ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত রবির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য আবেদন জমা নেওয়া হয়।
রবি আইপিও থেকে মোট ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা তহবিল সংগ্রহ করতে চেয়েছিল। এজন্য ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছাড়ে।
এর মধ্যে রবি কর্মীদের কাছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার বিক্রি করে ১৩৬ কোটি ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৪০ টাকা তুলেছে।
বাকি ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকার মধ্যে ১৫৫ কোটি ৯৬ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ ছিল যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য। বাকিটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য।
আইপিওর ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৪ টাকা দিয়ে নেটওয়ার্ক পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে রবির। আর আট কোটি দুই লাখ নয় হাজার ৭৬৬ টাকা আইপিও বাবদ খরচ হবে।
২০১৯ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য ১৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। গতবছর তারা মুনাফা করেছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এ সময়ে তাদের শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য ১২ টাকা ৬৪ পয়সা আর শেয়ার প্রতি মুনাফা ৪ পয়সা।
২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী রবির মোট সম্পদ ১৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট দশমিক ১০ শতাংশ। এর অর্থ ১০০ টাকার সম্পদ ব্যবহার করে ১০ পয়সা মুনাফা হয়েছে।
রবির নেট প্রফিট মার্জিন দশমিক ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকার বিক্রিতে ২৩ পয়সা মুনাফা হয়েছে।
রবি আজিয়াটার পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইজাজউদ্দিন বিন ইদ্রিস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহাতাব উদ্দিন আহমেদ।