অব্যবস্থাপনা দূর করে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের মূলধনে মিউচুয়াল ফান্ডের অবদান ২০ শতাংশে উন্নীতে করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদস্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান।
Published : 10 Oct 2020, 10:43 PM
শনিবার বিকালে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডসের (এএএমসিএমএফ) এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
বিএসইসি কমিশনার বলেন, “আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বাজার মূলধনের ২০ শতাংশ হতে হবে মিউচুয়াল ফান্ড। বর্তমান কমিশন মিউচুয়ালফান্ড খাতের উন্নতির জন্য যা যা কররার সব করবেন।
“মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে ব্যবস্থাপনা উন্নতি ঘটিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। আগামী দিনের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের যেমন ভূমিকা থাকবে সেখানে মিউচুয়াল ফান্ডকেও অনেক বড় অবদান রাখতে হবে।”
বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বাজার মূলধন ১ থেকে দেড় শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করে।
অধ্যাপক মিজানুর বলেন, বর্তমান আইনে মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারীদের অনেক স্বাধীনতা দেওয়া হলেও এর উপযুক্ত ব্যবহার নাই। তারা এমন সব সম্পদে বিনিয়োগ করেছেন যেগুলোর ঝুঁকি বেশি। মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপকদের সুযোগ ছিল তাদের পুরো টাকার ৪০ শতাংশ টাকা ঝুঁকিবিহীন সম্পদ- যেমন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার। ৩০ শতাংশ টাকা তারা বিনিয়োগ করতে পারতেন কোম্পানির ভাল মানের বন্ডে যেগুলো তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত শেয়ার থেকে কম ঝুঁকির।
“কিন্তু খুব দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপকরা তাদের ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করতে পারেননি।”
শুধু তাই নয় বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপকরা তারল্য ও মুনাফা ব্যবস্থাপনাতেও ভুল করেছেন মন্তব্য করে এই অধ্যাপক বলেন, “মিউচুয়াল ফান্ডে যে সব বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেন, তারা সঞ্চয়পত্রের চেয়ে বেশি মুনাফা চান এবং যে ফান্ডটি তিনি কিনছেন সেটাকে যে যেন সেই দামে অথবা বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন তার নিশ্চয়তা চান।
“কিন্ত বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড এই চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। এ কারণে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডগুলো দেশের বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারিয়েছে, প্রায় বেশির ভাগ মিউচুয়াল ফান্ড দাম হারিয়েছে। আর মিউচুয়াল ফান্ডের এই দাম হারানোর পিছনে পুঁজিবাজার খারাপ হওয়া যতটা দায়ী তারচেয়ে বেশি দায়ী এর ব্যাবস্থাপনা।”
মিজানুর রহমান বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডগুলো হিসাব রাখার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখেনি। মিথ্যা মুনাফা দেখিয়ে নিজেদের পুঁজি থেকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে।
“এ ধরনের কাজ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মিউচুয়াল ফান্ড দেউলিয়া হয়ে গেছে আর এসব মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকরা বিনিয়োগকারীরা দেউলিয়া হয়ে গেছেন।
“বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড যারা পরিচালনা করে তারা অতালিকাভুক্ত শেয়ারেও বিনিয়োগ করেন কিন্তু এক্ষেত্রে তাদেরকে আরো দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ডের প্রধান কর্মকর্তারা অংশ নেন।