বিএসইসির ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ প্রথম ধাপে ১২টি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করছে।
Published : 11 Feb 2025, 10:04 PM
বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক, আইএফআইসির টাউনশিপ বন্ড, বেস্ট হোল্ডিংসের আইপিও ও ফরচুন সুজসহ ছয় কোম্পানির ‘অনিয়ম ও কারসাজির’ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদের কাছে ছয়টি তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির’ সদস্যরা।
পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি বলেছে, বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আল ইসতিসনা, আইএফআইসি গ্যারান্টেড গাজীপুর শ্রিপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড, বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের আইপিও, ফরচুন সুজ লিমিটেড, আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ ও কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের উপর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
তবে কমিটি প্রতিবেদনে কী বলেছে তা জানায়নি বিএসইসি।
পুঁজিবাজারে আগের সরকারের সময়ে অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতি বের করতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের এ 'অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি' গঠন করেছিল বিএসইসি। প্রথম ধাপে ১২টি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করছে এ কমিটি।
কমিটির প্রধান করা হয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেরা রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জিয়া ইউ আহমেদকে।
কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে এসব কোম্পানি ও বন্ড অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়ে অনিয়ম ও শেয়ার কারসাজির বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
কমিটির কাজের মধ্যে ছিল
>> বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আল ইসতিসনা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি অনুসন্ধান ও তদন্ত, আইএফআইসি গ্যারান্টেড গাজীপুর শ্রিপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি অনুসন্ধান ও তদন্ত।
>> বেস্ট হোল্ডিংসের প্রাথমিক গণ প্রস্তাব বা আইপিও অনুমোদনসহ যাবতীয় বিষয়াদি অনুসন্ধান ও তদন্ত।
>> আল-আমিন কেমিক্যালের ব্লক মার্কেটে শেয়ার অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কারসাজি, ওটিসি থেকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরে অনুমোদন যাচাই, শেয়ার দরে কারসাজিসহ কোম্পানির যাবতীয় অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ।
>> ফরচুন স্যুজের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজি, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ বিতরণে অনিয়ম এবং কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
>> পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজিতে কোয়েস্ট বিডিসির (সাবেক পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালারস লিমিটেড) এর বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
এছাড়া এ কমিটি আরও যেসব কোম্পানি নিয়ে তদন্ত করছে সেগুলো হল-
>> চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেডের অনুমোদন/মনোনয়ন, শেয়ার বরাদ্দকরণ/ শেয়ার অধিগ্রহণ ও মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়।
>> সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড সংক্রান্ত পুঁজিবাজারে যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজি এবং ২০২০ সালে কোম্পানিটিকে ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান বোর্ডে পুনরায় তালিকাভুক্তকরণে বিষয় দেখা। এরসঙ্গে কোম্পানিটিতে হওয়া অনিয়ম এবং কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
>> তালিকায় রয়েছে রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের প্রাইভেট ও পাবলিক অফারের মাধ্যমে মূলধন উত্তোলন ও বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অতিরঞ্জিত করে বিক্রয় বেশি দেখানো এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর/পাচার বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
>> একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেড সংক্রান্ত পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজি, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ বিতরণ সংক্রান্ত অনিয়ম এবং আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলিত টাকা থেকে ন্যাশনাল ফাইন্যান্সের ঋণ পরিশোধের অনিয়ম তদন্ত।
>> এমারেল্ড ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার অধিগ্রহণ/হস্তান্তর, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ, সেকেন্ডারি মার্কেটে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং এ-সংক্রান্ত পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজির বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
>> তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের যাবতীয় অনিয়ম, শেয়ারদরে কারসাজি ইস্যু সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি অনুসন্ধান ও তদন্ত।
বেক্সিমকোর বন্ড, বসুন্ধরার কৌশলগত বিনিয়োগসহ ১১ কোম্পানির ‘কারসাজি’ তদন্তে কমিটি