এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে উচ্চ পর্যায়ের তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
Published : 05 Jan 2025, 03:02 PM
সার্ভারের ত্রুটিতে দেড় ঘণ্টা দেরিতে লেনদেন শুরুর পর সপ্তাহের প্রথম দিন শেয়ার কেনাবেচার সময় আধা ঘণ্টা বাড়িয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত লেনদেন চলবে জানিয়ে ডিএসইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে উচ্চ পর্যায়ের তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্বাভাবিক সময়ে ডিএসইতে লেনদেন চলে সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। কিন্তু শেয়ার কেনাবেচায় ব্যবহৃত সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় রোববার লেনদেন শুরু হতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায়।
ব্রোকারেজ হাউজ ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, সকালে সব প্রস্তুতি নিয়েও তারা সার্ভারে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। পরে ডিএসই থেকে ইমেইলের মাধ্যমে তাদের জটিলতার কথা জানানো হয়।
“আমরা ১০টার অনেক পরে একটি চিঠি পাই। এর আগেই ডিএসইর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে আমাদের আইটি টিম। আমাদের জানানো হয়, কারগিরি ত্রুটির কারণে অনিবার্য কারণবশত ট্রেড সাসপেন্ড করা হয়েছে। সমস্যার সমাধান হলে ট্রেড পুনরায় শুরু হবে।”
বেলা সাড়ে ১১টায় লেনদেন শুরুর পর দুপুরে এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয় ডিএসইর তরফ থেকে।
সেখানে বলা হয়, “ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি'র সেন্ট্রালাইজড অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) ডিএসই ফ্লেক্সটিপিতে কনফিগারেশনজনিত সমস্যার কারণে আজ ৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ট্রেডিং কার্যক্রম চালু করতে বিলম্ব ঘটে।
“উক্ত সমস্যাটি সমাধানের জন্য নির্ধারিত সময়ে সার্বিক লেনদেন স্থগিত রাখা হয়। ডিএসইর আইসিটি ইঞ্জিনিয়ার এবং ফ্লেক্সট্রেডের সহায়তায় সমস্যাটি সমাধান করে সকাল ১১:৩০ মিনিটে লেনদন শুরু করা হয় এবং লেনদেন কার্যক্রম দুপুর ৩:০০ ঘটিকা পর্যন্ত চলবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।”
যথাসময়ে লেনদেন চালু করতে না পারায় বিনিয়োগকারী ও বাজারে অংশগ্রহণকারীসহ সকলের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ডিএসই।
ডিমিউচু্য়ালাইজেশনের পর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড সিস্টেমসের সহযোগিতায় অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম চালু করে ডিএসই।
নাসডাক ওএমএক্স সরবরাহ করে ম্যাচিং ইঞ্জিন ও ফ্লেক্সট্রেড সরবরাহ করে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস)। গত দশ বছরে ওই সফটওয়্যার দিয়েই ডিএসইর লেনদেন চলছে।
পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হওয়ার পরে মোট লেনদেনের তথ্য ‘ওএমএস’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যায় ব্রোকারেজ হাউজগুলো। ওই তথ্য দিয়ে ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট সম্পন্ন করা হয় সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) মাধ্যমে।
এরপর বিনিয়োগকারীর কেনাবেচা হওয়া শেয়ার ও নগদ টাকার তথ্য পুনরায় সফটওয়্যারে হালনাগাদ করতে পারে ব্রোকারেজ হাউজ, যাতে পরের দিনের লেনদেন সম্ভব হয়।
সফটওয়্যার জটিলতায় এর আগেও বেশ কয়েকবার ডিএসইর লেনদেন বিঘ্নিত হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের অগাস্টে ‘ফ্লেক্সট্রেড’ এ ক্রুটির কারণে আগের দিনের শেয়ার কেনাবেচার নিষ্পত্তি হতে পরদিন ভোর হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে ব্রোকারেজ হাউসগুলো।
ওই বছর জুলাই মাসে পরপর দুই দিন সার্ভার ত্রুটিতে লেনদেন বিভ্রাটে পড়ে ডিএসই। সমস্যা সমাধান শেষে ডিএসই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, লেনদেন সফটওয়্যার ‘ওএমএস’ এ নতুন সেবা মডিউল সংযোজন করায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
এর আগেও ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে এক সপ্তাহে পরপর দুবার কারিগরি ত্রুটির মধ্যে পড়েছিল ডিএসই।
ঘন ঘন কারিগরি ত্রুটির কারণ খতিয়ে দেখতে ডিএসইর পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একাধিকবার তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।