Published : 14 Apr 2024, 09:04 PM
ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে নিজেদের গুছিয়ে নিতে বেশ সময় লাগল লিভারপুলের। ছন্দ খুঁজে পাওয়ার পর যেন প্রতি মিনিটেই তৈরি করল সুযোগ। কিন্তু সহজ-কঠিন সে সব সুযোগের একটাও কাজে লাগাতে পারলেন না মোহামেদ সালাহরা। গোলমুখে নিদারুণ ব্যর্থতায় শীর্ষে যাওয়ার সুযোগ হারাল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে রোববার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ১-০ গোলে হেরেছে লিভারপুল।
৭০ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা লিভারপুল গোলের জন্য নেয় ২১ শট, এর ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। বল দখলে বেশ পিছিয়ে থাকলেও গোলের বেশ কিছু খুব ভালো সুযোগ পেয়েছিল ক্রিস্টাল প্যালেস। তাদের ৮ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।
সবধরনের প্রতিযোগিতায় সবশেষ ৫ ম্যাচে কেবল দুটি জয় পাওয়া লিভারপুল শুরুতে যেন ছিল নিজেদের ছায়া হয়ে। আগের ম্যাচে ইউরোপা লিগে আতালান্তার বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে যাওয়া দলটিকে বেশ চাপে রাখে ক্রিস্টাল প্যালেস।
চোট কাটিয়ে ফেরা লিভারপুলের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক আলিসনের গোল পোস্টের নিচে কাটে বেশ ব্যস্ত সময়। গোলের জন্য প্রথম শট নেয় সফরকারীরাই। তবে প্রথম সবচেয়ে ভালো সুযোগটি পেয়েছিলেন দারউইন নুনেস। অষ্টম মিনিটে বেশ ভালো অবস্থানে থাকা সালাহকে বল না দিয়ে নিজেই শট নেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। সহজেই ঠেকান গোলরক্ষক ডিন হেন্ডারসন।
অ্যানফিল্ডকে স্তব্ধ করে দিয়ে চতুর্দশ মিনিটে এগিয়ে যায় ক্রিস্টাল প্যালেস। চমৎকার সব পাসে গড়া পরিকল্পিত আক্রমণের শেষটায় জালে বল পাঠান এব্রেচি ইজি। বাঁদিক থেকে টাইরিক মিচেলের কাট ব্যাকে আট গজ দূর থেকে ঠিকানা খুঁজে নেন অরক্ষিত এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।
ঘরের মাঠে প্রিমিয়ার লিগে এ নিয়ে সবশেষ ৫ ম্যাচের চারটিতেই প্রথম গোল হজম করল লিভারপুল। এর আগের ২২ ম্যাচে এই অভিজ্ঞতা তাদের হয়েছিল কেবল চারবার।
চার মিনিট পর দলকে আরও বড় বিপদে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচান অ্যান্ডি রবার্টসন। গোললাইন থেকে তার দুর্দান্ত সেভে বাড়েনি ব্যবধান। মাঝমাঠে ভার্জিল ফন ডাইক পা পিছলে পড়ে গেলে আলিসনকে একা পেয়ে যান জ্যাঁ-ফিলিপ মাতেতা। গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে গোল উদযাপন করতেই ছুটছিলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। কিন্তু দারুণ গতিতে ছুটে গিয়ে তাকে হতাশায় ডুবিয়ে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন রবার্টসন।
২৮তম মিনিটে সমতা ফেরানোর আশা জাগিয়েছিলেন ওয়াতাররু এন্দো। তার শট ফেরে ক্রসবারে লেগে! পরের মিনিটে খুব কাছ থেকে লুইস দিয়াসের বুলেট গতির শট হাত মেলে দিয়ে ঠেকিয়ে দেন হেন্ডারসন। একটু পরে ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি সালাহর শট।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন নুনেস। কর্নারের পর ফন ডাইকের ফ্লিকে ছোট ডি বক্সের মাথায় বল পেয়ে যান তিনি। ঠাণ্ডা মাথায় প্লেস করলেই পেয়ে যেতেন গোল। সেটা না করে বুলেট গতির শটে যেন উড়িয়ে দিতে চাইলেন জাল। তীব্র গতির জন্য প্রতিক্রিয়া দেখানোর তেমন একটা সময় পাননি হেন্ডারসন। তবে সময় মতোই বাড়িয়ে দেন হাঁটু, সেটায় লেগে বল ফেরে মাঠে।
গোলের জন্য মরিয়া লিভারপুলের সামনে আসতে থাকে একের পর এক সুযোগ। বদলি নামার কিছুক্ষণ পর ৭৩তম মিনিটে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান দিয়োগো জটা। জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া গোলরক্ষক ছিলেন পোস্টের বাইরে। গোললাইনের সামনে ছিলেন কেবল ক্রিস্টাল প্যালেসের একজন খেলোয়াড়, তাড়াহুড়ায় তার গায়েই মেরে বসেন জটা!
পরের মিনিটে খুব কাছ থেকে মাতেতার শট কোনোমতে ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি এদেরসন। প্রতি আক্রমণ থেকে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়ে যান কার্টিস জোনস। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও বিস্ময়করভাবে বাইরে মারেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। তার এই ব্যর্থতা যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না স্বাগতিকদের কারও।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে খুব কাছ থেকে সালাহর শট ফিরিয়ে দেন মিচেল। বাকি সময়ের বেশিরভাগ সময় ক্রিস্টাল প্যালেসের ডি বক্সের আশেপাশেই ছিল বল। কিন্তু সমতা ফেরানো গোলের দেখা পায়নি লিভারপুল। তাতে এড়াতে পারল না টানা দ্বিতীয় হার।
৩২ ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে লিভারপুল। সমান ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ম্যানচেস্টার সিটি।
৩১ ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে থাকা আর্সেনালের সামনে সুযোগ আছে শীর্ষে ফেরার।