কষ্টের জয়ে আর্সেনালের সঙ্গে ব্যবধান কমাল সিটি

চেলসির বিপক্ষে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ১-০ গোলে জিতেছে পেপ গুয়ার্দিওলার দল।

দুই অর্ধে যেন দুই ম্যানচেস্টার সিটিকে। প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া গেল ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের আক্রমণের ঝাপটা সামলাতে যেন শ্বাস নেওয়ার সুযোগ দিল না চেলসিকে। গোল হজমের পর মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায় স্বাগতিকরা। কিন্তু তিন পয়েন্টের জন্য উন্মুখ পেপ গুয়ার্দিওলার দলের সঙ্গে পেরে ওঠেনি চেলসি।

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে বৃহস্পতিবার রাতে প্রিমিয়ার লিগে ১-০ গোলে জিতেছে সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন রিয়াদ মাহরেজ।  

ঘরের মাঠে শেষটার মতো শুরুটাও ভালো ছিল না স্বাগতিকদের জন্য। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে পঞ্চম মিনিটে মাঠ ছাড়েন রাহিম স্টার্লিং। মাঠে আসেন পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং।

ষোড়শ মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ পায় চেলসি। মার্ক কুকুরেইয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে কাই হার্ভাটজ খুঁজে নেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসকিকে। ডি বক্সে বিপজ্জনক জায়গা পৌঁছে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ফরোয়ার্ড শট নিতে যাচ্ছিলেন। তখনই দুর্দান্ত এক ট্যাকলে তাকে হতাশায় ডোবান সিটি ডিফেন্ডার জন স্টোনস।

সেই ট্যাকলের ধাক্কা সামাল দিতে পারেননি পুলিসিক। একটু পরে মাঠ ছাড়েন তিনি। আগে থেকেই চোটের জন্য নেই রিস জেমস ও ম্যাসন মাউন্ট। এবার একই ম্যাচের প্রথমার্ধে স্টার্লিং ও পুলিসিককে হারাল চেলসি।

২২তম মিনিটে বদলি নামার একটু পরে জালের দেখা প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন কার্নি চুকওয়েমেকা। ২৪তম মিনিটে ইংলিশ এই মিডফিল্ডারের শট ব্লক করেন বের্নার্দো সিলভা। আলগা বলে হাকিশ জিয়াশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক এদেরসন।

আট মিনিট পর ইলকাই গিনদোয়ানের শট পোস্টের বেশ বাইরে দিয়ে যায়। ম্যাচে এটাই ছিল সিটির প্রথম শট। ৩৭তম মিনিটে নিজেদের প্রথম ভালো সুযোগ পায় শিরোপাধারীরা। কড়া পাহারায় থাকায় সেভাবে বল পাচ্ছিলেন না আর্লং হলান্ড। ডি বক্সে বল পেয়েও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি দারুণ ছন্দে থাকা এই স্ট্রাইকার।

৪৪তম মিনিটে প্রায় এগিয়েই যাচ্ছিল চেলসি। চুকওয়েমেকার শট ফেরে কাছের পোস্টে লেগে!

বল দখলে (৪৬ শতাংশ) পিছিয়ে ছিল চেলসি, গোলের জন্য শটের (পাঁচটি) সংখ্যায়ও পিছিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। তবে এই পরিসংখ্যান ব্যর্থ প্রথমার্ধের সত্যিকারের চিত্র তুলে ধরতে।

পুরোপুরি নিষ্প্রভ ছিল সিটি। এর বিপরীতে চোটের বিপরীতে দুই জন খেলোয়াড় হারালেও গোলের সবচেয়ে ভালো সুযোগগুলো তৈরি করেছিল চেলসিই।  

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে সিটি। ৪৮তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি হলান্ড। দুই মিনিট পর আকের দারুণ হেড ব্যর্থ হয় পোস্টে লেগে! হাতছাড়া হয় সফরকারীদের দারুণ সুযোগ।

পরের মিনিটে কেভিন ডে ব্রুইনের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগা।

৫৬তম মিনিটে মৌসুমে নিজের প্রথম গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন চিয়াগো সিলভা। তবে পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে বুলেট গতির একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি চেলসির অভিজ্ঞ এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ।

তিন মিনিট পর এক ডে ব্রুইনের বুলেট গতির শট যায় কাছের পোস্টর পাশ দিয়ে।

প্রবল চাপ তৈরির সুফল একটু পরেই পায় সিটি। ৬৩তম মিনিটে জ্যাক গ্রিলিশের দুর্দান্ত ক্রসে আলতো টোকায় দূরের পোস্টে জাল খুঁজে নেন মাহরেজ। এই দুই জন তিন মিনিট আগে এক সঙ্গে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন।  

দশ মিনিট পর একটুর জন্য ব্যবধান বাড়াতে পারেনি সিটি। ডে ব্রুইনের দারুণ ক্রসে দূরের পোস্টে ঠিকভাবে পা ছোঁয়াতে পারেননি হলান্ড।    

প্রতি আক্রমণ থেকে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সুযোগ এসেছিল চেলসির সামনে। কিন্তু লুইস হল অনেক উপর দিয়ে মেরে দলকে হতাশ করেন।

এই জয়ে ১৭ ম্যাচে সিটির পয়েন্ট হলো ৩৯। সমান ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে ব্যবধান নেমে এলো পাঁচে।

১৮ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। এক ম্যাচ কম খেলা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গোল পার্থক্যে পিছিয়ে থেকে চারে।

১৭ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে চেলসি। এই হারে সেরা চারের থাকার আশায় বড় চোট লাগল গ্রাহাম পোর্টারের দলের।