এক বছরের ছুটি সংক্ষিপ্ত করে তিন মাসেই মাঠে ফিরে ইতালি জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন লুচানো স্পাল্লেত্তি।
Published : 19 Aug 2023, 11:03 AM
নাপোলিকে স্মরণীয় সাফল্য এনে দেওয়ার ধকল সামলাতে এক বছরের বিরতিতে গিয়েছিলেন লুচানো স্পাল্লেত্তি। কিন্তু সেই বিশ্রাম পর্ব শেষ তিন মাসেই। বরং ফিরলেন তিনি আরও বড় দায়িত্ব নিয়ে। ইতালি জাতীয় দলের ভার নিলেন অভিজ্ঞ এই কোচ।
ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দায়িত্ব নেবেন স্পাল্লেত্তি। ৬৪ বছর বয়সী এই কোচ স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন রবের্তো মানচিনির। চুক্তির প্রায় তিন বছর বাকি থাকলেও গত রোববার হুট করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন ইতালিকে ইউরো জেতানো কোচ।
স্পাল্লেত্তির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ উল্লেখ করা হয়নি ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে। তবে সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবর, ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকবেন তিনি।
মানচিনির পদত্যাগ ছিল যেমন চমক, তেমনি স্পাল্লেত্তির এই দায়িত্ব নেওয়াও কম চমক জাগানিয়া নয়। তার কোচিংয়েই ৩৩ বছরের খরা কাটিয়ে গত মৌসুমে সেরি আ শিরোপা জয় করে নাপোলি। উচ্ছ্বাসের জোয়ার বয়ে যায় সমর্থকদের মধ্যে, নেপলস শহরে রূপকথার নায়কের মর্যাদা পান তিনি। চুক্তির আরও এক বছর বাকি ছিল তার, ক্লাবও তাকে রাখতে ছিল মরিয়া। কিন্তু কোচিং থেকে ১ বছরের বিরতি নেন তিনি। সেই ছুটি শেষ হয়ে গেল অনেক আগেই।
খেলোয়াড়ি জীবনে স্পাল্লেত্তি ছিলেন মিডফিল্ডার। খুব বড় কিছু করতে পারেননি। তবে কোচিং ক্যারিয়ার তার ৩০ বছরের। যে দলের হয়ে খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করেছেন, সেই এম্পোলির দায়িত্ব নিয়েই ১৯৯৩ সালে শুরু হয় কোচ হিসেবে তার পথচলা।
তার কোচিংয়ে তৃতীয় বিভাগ থেকে পরপর দুই মৌসুম টানা সাফল্যে শীর্ষ লিগে পৌঁছে যায় এম্পোলি। ১৯৯৮ সালে তিনি দায়িত্ব নেন সাম্পদোরিয়ার। সেখান থেকে ভেনেস্সিয়া হয়ে দুই দফায় দায়িত্ব পালন করেন উদিনেসের হয়ে। এই দুই দফার মধ্যে এক মৌসুম ছিলেন আনকোনার দায়িত্বে। উদিনেসের হয়ে দ্বিতীয় দফার দায়িত্বে ২০০৪-৫ মৌসুমে ক্লাবকে নিয়ে যান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
২০০৫ সালে দায়িত্ব নেন রোমার। তার কোচিংয়ে দুটি ইতালিয়ান কাপ ও একটি ইতালিয়ান সুপার কাপ জয় করে রোমের ক্লাবটি। ২০০৯ সালে তিনি পদত্যাগ করেন এখান থেকে। প্রথমবার দেশের বাইরের ক্লাবের দায়িত্ব নিয়ে ওই বছরই পা রাখেন জেনিত সেন্ট পিটার্সবুর্কে। কোচিং ক্যারিয়ারে টানা সবচেয়ে বেশি সময় কাটান রাশিয়ার এই ক্লাবেই। দুই দফায় স্বাদ পান লিগ শিরোপার।
টানা দুই মৌসুম শিরোপা না পাওয়ায় ২০১৪ সালে বরখাস্ত করা হয় তাকে। এরপর কোচিংয়ের বাইরে ছিলেন বছর দুয়েক। ২০১৬ সালে আবার ফেরেন রোমায়। পরের বছর চলে যান ইন্টার মিলানে। সেখান থেকে বরখাস্ত হন ২০১৯ সালে।
আবার বছর দুয়েকের বিরতি শেষে ২০২১ সালে দায়িত্ব নেন নাপোলির। প্রথম মৌসুমেই তার কোচিংয়ে লিগে তৃতীয় হয় নাপোলি। পরের মৌসুমেই স্মরণীয় সেই শিরোপা। এরপর প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের দায়িত্ব পেলেন এই ৬৪ বছর বয়সে এসে।
ইতালির ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি গ্যাব্রিয়েলে গ্রাভিনা উচ্ছ্বসিত মানচিনির একজন ভালো বিকল্প পেয়ে।
“জাতীয় দলের প্রয়োজন ছিল একজন গ্রেট কোচের এবং আমরা খুশি যে, তিনি রাজি হয়েছেন। সামনের সময়টায় ইতালির চ্যালেঞ্জগুলো জয়ে তার উদ্যম ও দক্ষতার ভূমিকা হবে গুরুত্বপূর্ণ।”
২০২৪ ইউরোর বাছাইপর্বে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নর্থ মেসেডোনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে স্পাল্লেত্তির নতুন অধ্যায়। তিন দিন পর তাদের প্রতিপক্ষ ইউক্রেন।
২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপে এখন তৃতীয় স্থানে ইতালি। ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে ইংল্যান্ড। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ইউক্রেন।