চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বাদ পড়ে রেফারিকে কাঠগড়ায় তুললেন বার্সেলোনা কোচ শাভি এর্নান্দেস, তবে পিএসজি কোচ লুইস এনরিকের বিশ্বাস, লাল কার্ড না হলেও জিতত তার দল।
Published : 17 Apr 2024, 11:15 AM
রেফারির নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি মাঠেই লুকাননি শাভি এর্নান্দেস। এমনকি পানির বোতলে লাথি মেরে নিজে দেখেছেন লাল কার্ড। ম্যাচ শেষেও ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটালেন বার্সেলোনা কোচ। তার মতে, রেফারির একটি লাল কার্ডের সিদ্ধান্তই বার্সেলোনার সম্ভাবনা শেষ করে দিয়েছে। পিএসজি কোচ লুইস এনরিকের অবশ্য বিশ্বাস, ওই লাল কার্ড না হলেও জিতত তার দল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ঘটনাবহুল ম্যাচে মঙ্গলবার বার্সেলোনাকে বিদায় করে শেষ চারে পৌছে যায় পিএসজি।
প্রথম লেগে পিএসজির মাঠ থেকে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে ফেরা বার্সেলোনা ঘরের মাঠেও দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যায় রাফিনিয়ার গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান তখন দুই গোলের।
তবে ম্যাচের বয়স ৩০ মিনিট হওয়ার আগেই সেই লাল কার্ড। পিএসজির বারকোলাকে বিপজ্জনকভাবে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন বার্সেলোনার ডিফেন্ডার রোনাল্দ আরাউহো।
এরপর খেলার চিত্র বদলে যায়। প্রথমার্ধে পিএসজির হয়ে গোল করেন বার্সেলোনা থেকেই আসা উসমান দেম্বেলে। দ্বিতীয়ার্ধে ভিতিনিয়ার গোলে সমতা ফেরে দুই লেগ মিলিয়ে। পরে কিলিয়ান এমবাপের দুটি গোল গড়ে দেয় ব্যবধান।
তবে ম্যাচের পর শাভি বললেন, লড়াইয়ের ভাগ্য গড়া হয়ে যায় ওই লাল কার্ডের সিদ্ধান্তেই।
“আমরা ক্ষুব্ধ। ওই লাল কার্ডই খেলার ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। ১১ বনাম ১১ লড়াইয়ের সময় আমরা খুবই গোছানো ছিলাম। লাল কার্ড সবকিছুই বদলে দিয়েছে পুরোপুরি। আমার মতে, আরাউহোকে বের করে দেওয়া একটু বেশিই কঠোর ছিল।”
“রেফারি খুবই বাজে ছিল। আমি তাকে বলেছি, সে ধ্বংসাত্মক ছিল। লড়াইটাই শেষ করে দিয়েছে সে। রেফারিদের নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না আমি, কিন্তু এটা না বলে উপায় নেই। আমার মাথায় ঢুকছে না (এই সিদ্ধান্ত)। ১০ জনের দল হয়ে পড়া কখনোই ভালো কিছু নয় এবং খেলাটাই বদলে যায় এটির পর। এই ম্যাচ নিয়ে যত কথাই বলি, লাল কার্ডই সবকিছুর প্রতীকী।”
দ্বিতীয়ার্ধে ইলকাই গিন্দোয়ানকে করা মার্কিনিয়োসের একটি চ্যালেঞ্জে রেফারি পেনাল্টি না দেওয়ায় টাচলাইনের পাশে বোতলে লাথি মেরে লাল কার্ড দেখেন কোচ শাভি। বার্সেলোনার ডাগআউটে ছড়িয়ে পড়ে প্রবল উত্তেজনা। লাল কার্ড দেখানো হয় গোলকিপিং কোচ হোসে রামন দে লা ফুয়েন্তেকেও।
নিজের লাল কার্ড নিয়ে অবশ্য আপত্তি নেই শাভির, “ওটা আমার ভুল ছিল, আমি দোষ করেছি।”
ম্যাচে কয়েকবার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারার আক্ষেপ আছে বার্সেলোনা কোচের। তবে শেষ পর্যন্ত আবারও তিনি কাঠগড়ায় তুললেন রেফারিকেই।
“আমাদের সুযোগ ছিল সমতায় ফেরার। কিন্তু গিন্দোয়ানের শট পোস্টে লেগেছে। ওই লাল কার্ডের আগে ২-০ গোলে এগিয়ে যেতে পারতাম আমরা, রবের্ত লেভানদোভস্কির শট একটু ওপর দিয়ে চলে গেছে।”
“খুবই হতাশাজনক ব্যাপার যে, গোটা মৌসুমের কঠোর পরিশ্রম এভাবে শেষ হয়ে গেল রেফারির একটি বাজে সিদ্ধান্তে। গোটা ম্যাচই ১১ জনের সঙ্গে ১১ জনের লড়াই দেখতে চেয়েছিলাম। ওই লাল কার্ড অপ্রয়োজনীয় ছিল।”
পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে স্বাভাবিকভাবেই উল্টো প্রান্তে। জয়টাকে প্রাপ্য বলেই মনে করেন বার্সেলোনার সাবেক এই ফুটবলার ও কোচ।
“রেফারিদের নিয়ে কথা বলি না আমি। ঘটনাটি পরে আর দেখা হয়নি আমার, সরাসরিই যতটুকু দেখেছি। তবে রেফারিদের কখনোই বিচার করি না আমি। নিজের যা নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেদিকেই মনোযোগ দেই। ম্যাচটি খুব ভালোভাবে শুরু করেছিলাম আমরা। এরপর ইয়ামালের দারুণ খেলা থেকে গোল করে ওরা এগিয়ে যায়। গত লেগে পরাজয়টা আমাদের আমাদের প্রাপ্য ছিল না এবং আজকেও পিছিয়ে পড়া প্রাপ্য ছিল না।”
“তবে ছেলেদের বিশ্বাস ও নিজেদের ওপর আস্থা ছিল দুর্দান্ত। সেটি থেকেই আমরা ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। লাল কার্ড অবশ্যই ভূমিকা রেখেছে ম্যাচে। তবে এরপরও তো জানতে হবে যে এই ধরনের ম্যাচ কীভাবে খেলতে হয় এবং কীভাবে ভুল না করা যায়। আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, ওই লাল কার্ড না হলেও আমরা জিততাম। যদিও তা প্রমাণ করার উপায় নেই আমার।”