মেয়েদের সেরা গোলের জন্য আলাদা স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা।
Published : 16 Jan 2024, 03:13 PM
দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য মার্তা ভিয়েইরা দি সিলভাকে কেবল সম্মাননাই জানায়নি ফিফা, দিয়েছে দারুণ স্বীকৃতিও। ব্রাজিলিয়ান গ্রেটের নামে ঘোষণা করেছে নারী ফুটবলের নতুন এক পুরস্কার- ‘মার্তা অ্যাওয়ার্ড।’
১৭ গোল করে নারী-পুরুষ মিলিয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড মার্তার। ফুটবলের বিশ্ব মঞ্চে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা পাঁচ আসরে গোল করার কীর্তিও তার। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ফুটবলে অবদান রাখায় লন্ডনে সোমবার রাতে দা বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস-অনুষ্ঠানে বিশেষ এক ট্রফি দিয়ে তাকে সম্মাননা জানায় ফিফা। সেখানেই নারী ফুটবলের মহাতারকার নামে বছরের সেরা গোলের পুরস্কার চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
নারী-পুরুষ মিলিয়ে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারের রেকর্ডও এক সময়ে মার্তারই ছিল, জিতেছিলেন ছয়বার। পরে তাকে ছাড়িয়ে যান আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। এই বছর নিয়ে তিনি জিতেছেন অষ্টমবার।
বছরের সুন্দরতম গোলের জন্য একটি পুরস্কার আছে ফিফার। ২০০৯ সাল থেকে দর্শনীয় গোলের জন্য তারা দিচ্ছে পুসকাস অ্যাওয়ার্ড। প্রথমবার যেটি জিতেছিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। পোর্তোর বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ৪০ গজ দূর থেকে করা দুর্দান্ত এক গোলের জন্য।
নিজের নামে চালু হওয়া পুরস্কার দেখে যেতে পারেননি রেয়াল মাদ্রিদ ও হাঙ্গেরির কিংবদন্তি পুসকাস। ২০০৬ সালে মারা যান তিনি, পুরস্কার চালু হয় ২০০৯ সালের অক্টোবরে।
নারী ও পুরুষ ফুটবলারদের এই পুরস্কারের জন্য বিবেচনার কথা থাকলেও প্রথম দুই বছর সেরা দশে ছিলেন কেবল পুরুষরাই। ২০১১ সালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে দারুণ গোলের জন্য সেরা ১০ গোলের তালিকায় জায়গা পান যুক্তরাষ্ট্রের হিদার ও’রাইলি।
২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো কোনো নারী সেরা তিনে জায়গা পান। কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজের পেছনে থেকে দ্বিতীয় হন আয়ারল্যান্ডের স্টেফানি রাশ। এরপর থেকে কেবল আর দুই জন- ভেনেজুয়েলার দানিয়ুস্কা রদ্রিগেস (২০১৬) ও দেনিয়া কাস্তেয়ানোস (২০১৭) সেরা তিনে জায়গা পান।
পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের নির্ধারিত হয় ফিফা ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ফুটবল ভক্তদের ভোটে। সেখানে ভক্তদের সংখ্যার দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকা পুরুষ ফুটবলারা বাড়তি সুবিধা পান।
গত বছর প্রথম নারী ফুটবলার খেলোয়াড় হিসেবে এই পুরস্কার জয়ের জন্য আলেসিয়া রুসোকে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হচ্ছিল। সুইডেনের বিপক্ষে নারীদের ইউরোয় ব্যাক হিলে দুর্দান্ত এক গোল করেছিলেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। কিন্তু সেরা তিনেই আসতে পারেননি তিনি।
২০০৯ সালের জায়গায় যদি আগের বছর পুসকাস অ্যাওয়ার্ড চালু হতো তাহলে হয়তো বিবেচনায় চলে আসতে পারতেন মার্তা। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ৪-০ ব্যবধানের জয়ে দুর্দান্ত এক গোল করেছিলেন তিনি।
এবার নিজের নামেই পুরস্কার চালুর অভাবনীয় প্রাপ্তিতে দারুণ খুশি মার্তা।
“অবশ্যই, এটা (রেকর্ড ছয়বার ফিফা সেরা হওয়াটা) আমাকে দারুণ আনন্দ দেয়। কিন্তু এই স্বীকৃতি শুধু মার্তাকে নয়, আমাদের সবাইকে-ব্রাজিলকে একটি জাতি হিসেবে তুল ধরে।”
“বিশ্বকাপে আমি আর খেলব না। যেভাবে ব্রাজিলে ও বিশ্বে মেয়েদের ফুটবল বিকশিত হয়েছে, তাতে আমি খুবই খুশি। অসাধারণ প্রতিভাবান মেয়েরা রয়েছে, যাদের সামনে অপেক্ষা করছে দারুণ ভবিষ্যৎ। এটা স্রেফ তাদের শুরু, কিন্তু আমার জন্য শেষের সীমানা।”