কষ্টের জয়ে শিরোপার আরও কাছে বার্সেলোনা

শেষ দিকে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন জর্দি আলবা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2023, 07:31 PM
Updated : 2 May 2023, 07:31 PM

বার্সেলোনার জন্য এ মুহূর্তে একটি করে জয় মানে লিগ শিরোপার ঘ্রাণ আরও গভীরভাবে নিতে পারা। ঘরের মাঠে ওসাসুনার বিপক্ষে যদিও আগ্রাসী ফুটবল উপহার দেওয়া হলো না, কিন্তু জর্দি আলবার গোলে ঠিকই মিলল কাঙ্ক্ষিত জয়। অভীষ্ট লক্ষ‍্যে পৌঁছুতে আরেকটি সিঁড়ি পার হলো শাভি এর্নান্দেসের দল।

কাম্প নউয়ে মঙ্গলবার রাতে সিংহভাগ সময় দশ জন নিয়ে রক্ষণ আগলে রাখলেও শেষ রক্ষা হয়নি ওসাসুনার। শেষ দিকের গোলে তাদেরকে ১-০ ব্যবধানে হারায় বার্সেলোনা।

৩৩ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ জয়ের বন্দরের আরও কাছাকাছি পৌঁছুল বার্সেলোনা। মঙ্গলবার রাতে রিয়াল সোসিয়েদাদের মুখোমুখি হওয়ার আগে ৩২ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।

প্রথমার্ধে ৭৭ শতাংশ বলের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ওসাসুনা গোলরক্ষককে তেমন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে ব্যর্থ লেভানদোভস্কি-রাফিনিয়ারা। সফরকারীরাও ছিল বিবর্ণ। বিরতির আগে কোনো দল পোস্টে রাখতে পারেননি একটিও শট!

নবম মিনিটে তালগোল পাকিয়ে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি বক্সের ডান দিকে কিছুটা দুরূহ কোণে থাকা রাফিনিয়া। পঞ্চদশ মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের কোনাকুনি শট আটকান গোলরক্ষক।

২৬তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে বার্সেলোনা। বাল্দের ক্রসে পেদ্রি ছুটে গিয়ে টোকা দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু সংযোগ ঠিকঠাক না হওয়ায় বল যায় বাইরে।

এর পরপরই বড় ধাক্কাটি খায় ওসাসুনা। পেদ্রিকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন হোর্সে এররান্দো। রাফিনিয়ার ফ্রি কিক কাঁপায় উপরের জাল।

৩২তম মিনিটে ওসাসুনার ত্রাতা গোলরক্ষক। রাফিনিয়ার উদ্দেশে বাড়ানো ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের লং পাস আটকাতে বক্সের বাইরে বেরিয়ে আসেন আইতর ফের্নান্দেস; পথ আগলে দাঁড়ান বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের। তাতে রাফিনিয়া শেষ পর্যন্ত দুর্বল শটই কেবল নিতে পারেন, যা থাকেনি লক্ষ্যের ধারেকাছেও।

ইবানেসের চ্যালেঞ্জে চোট পাওয়া গাভি সাচ্ছ্বন্দ্যবোধ করছিলেন না। ৩৬তম মিনিটে তাকে তুলে নিয়ে আনসু ফাতিকে নামান শাভি। বার্সেলোনার আক্রমণেও ধার বাড়ে কিছুটা। ৪১তম মিনিটে কর্নারে রোনাল্দ আরাউহোর প্রচেষ্টা অল্পের জন্য হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোলের জন্য বার্সেলোনার মরিয়া প্রচেষ্টার ছাপ ফুটে ওঠে। কিন্তু ওসাসুনার রক্ষণে চাপ দিলেও জালের নাগাল পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। এই অর্ধের শুরুর দশ মিনিটে লেভান্দোভস্কির একটি উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে, অন্যটি জমে যায় গোলরক্ষকের গ্লাভসে।

৫৬তম মিনিটে আবারও ওসাসুনার ত্রাতা গোলরক্ষক। এবার পেদ্রির ক্রসে ডি ইংয়ের শট কোনোমতে গ্লাভসের ছোঁয়ায় ক্রসবারের উপর দিয়ে বের করে দেন ফের্নান্দেস। গোলরক্ষক বরাবর না গিয়ে ডাচ মিডফিল্ডারের শট একটু এদিক-ওদিক হলেই এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা। একটু পর ফাতির নিচু শট আটকান গোলরক্ষক, উসমান দেম্বেলের সাইড ভলি যায় পোস্টের বাইরে।

৬৮তম মিনিটে দ্রুত বল বাড়িয়েছিলেন সের্হিও বুসকেতস। তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচু শট নেন লেভানদোভস্কি, নাগালের মধ্যে থাকায় সহজে বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক। একটু পর ফাতির জোরাল শটের গন্তব্যও পোস্টের বেশ বাইরে।

৭৬তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় বার্সেলোনার। পেদ্রির থ্রু পাস ছুটে এসে ক্লিয়ার করেন গোলরক্ষক ফের্নান্দেস। বল সোজা যায় ফেররান তরেসের পায়ে। চলন্ত বলে এই ফরোয়ার্ডের শটও যায় বাইরে। পোস্টে রাখতে পারলেই হত গোল। একটু পর লেভানদোভস্কির কারিকুরিতে জালে বল জড়ালেও তরেস অফসাইডে থাকায় হয়নি গোল।

অবশেষে ৮৫তম মিনিটে খোলে ম্যাচের ডেডলক। লেভানদোভস্কির ব্যাক পাসে ডি ইং হেডে বল বাড়িয়ে দেন বক্সের ভেতরে বাঁ দিকে থাকা আলবাকে। বাঁ পায়ের ভলিতেই জাল খুঁজে নেন তিনি। হতাশায় মুষড়ে পড়া বার্সেলোনা সমর্থকরা জেগে ওঠে আনন্দে। এতক্ষণ পোস্ট আগলে রাখা ওসাসুনা গোল হজমের হতাশায় ভেঙে পড়ে।

৩৩ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে ওসাসুনা।