অবিশ্বাস্য রোমাঞ্চের ম্যাচে খ্যাপাটে উদযাপন করে ক্লপের ‘শাস্তি’

রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে দলের জয়সূচক গোলের পর উদযাপন করতে গিয়ে পায়ে টান লাগে লিভারপুল কোচের, তিনি নিজে যেটিকে দেখছেন শাস্তি হিসেবেই।

বাঁধনহারা উদযাপন নতুন কিছু নয় ইয়ুর্গেন ক্লপের জন্য। তবে এবার বাঁধল বিপত্তি। অভাবনীয় আনন্দের সময়টাতেই চেহারা হয়ে উঠল যন্ত্রণাক্লিষ্ট। উদযাপন করতে গিয়ে তিনি বাঁধালেন চোট! টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে মহানাটকীয় ম্যাচ শেষে অমন চোটে পড়ে লিভারপুল কোচ নিজেই বললেন, মাত্রা ছাড়ানোর শাস্তি পেলেন তিনি।

ম্যাচটিই অবশ্য ছিল আবেগের মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো। উত্তেজনার রসদে টইটম্বুর যাকে বলে!

অ্যানফিল্ডে রোববার ম্যাচের শুরুটা ছিল একতরফা। খেলা শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে লিভারপুল এগিয়ে যায় ৩-০ গোলে! ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের দারুণ পাস থেকে গোল করে তৃতীয় মিনিটেই দলকে এগিয়ে নেন কার্টিস জোন্স। মিনিট দুয়েক পর দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে গোল করেন লুইস দিয়াস। এরপর পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে আরও এগিয়ে নেন মোহামেদ সালাহ।

কদিন আগেই নিউক্যাসল ইউনাইটেডের কাছে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া টটেনহ্যাম তখন আবারও তেমন কিছুর শঙ্কায়। তবে এবার তারা তা হতে দেয়নি। প্রথমার্ধেই একটি গোল শোধ করে দেন হ্যারি কেইন। এরপরই সন হিউং-মিনের দুর্দান্ত শট লাগে বারে।

আরও দুই দফায় টটেনহ্যাম বাধা পায় গোলপোস্টে। তবু তারা দমে যায়নি। ৭৭তম মিনিটে সন হিউং-মিন শোধ করে দেন আরেকটি গোল।

ম্যাচের উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছায় ৯০ মিনিট শেষে। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে রিশার্লিসন গোল করে টটেনহ্যামকে সমতায় ফিরিয়ে জার্সি খুলে পাগলাটে উদযাপনে মেতে ওঠেন। তবে সেই রেশ দীর্ঘায়িত হয়নি। নাটকের যে তখনও বাকি! পরের মিনিটেই দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন দিয়োগো জটা। ৪-৩ গোলের স্মরণীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লিভারপুল।

জটার গোলের পরই চেনা ভঙিতে খ্যাপাটে দৌড়ে ছুটতে থাকেন ক্লপ। এক পর্যায়ে বাঁ পায়ে হাত দিয়ে থমকে যান তিনি। চেহারায় ফুটে ওঠে যন্ত্রণার ছাপ। ফোর্থ অফিসিয়ালের সামনে উদযাপন করে হলুদ কার্ডও দেখেন তিনি।

ম্যাচ শেষে চোট নিয়ে ক্লপ বলেন, নিজেকে হারিয়ে ফেলায় এমন কিছুই তার প্রাপ্য ছিল।

“এখনও ঠিক নিশ্চিত নই, এটা হ্যামস্ট্রিং কি না, অ্যাডাক্টরও হতে পারে। তবে শাস্তি পেয়েছি। ছোট দোষের তাৎক্ষনিক শাস্তি। হ্যামস্ট্রিং হোক বা যা কিছু, পেশির অবস্থা ভালো নয় এই মুহূর্ত। বেশ বাজে। ঠিকভাবে আচরণ করতে না পারার উপযুক্ত শাস্তি। এছাড়া আর সবকিছুই ঠিক আছে।”

এই জয়ের পর ৩৩ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে এসেছে লিভারপুল। তবে শীর্ষ চারে থাকার স্বপ্ন দেখছেন না ক্লপ। তার ভাবনা আপাতত ইউরোপা লিগে কোয়ালিফাই করা নিয়ে।

“(সেরা চারের আশা করছেন কি না) অবশ্যই নয়। যদি ম্যান ইউনাইটেড ও নিউক্যাসল তাদের সব ম্যাচ জেতে, আমরা কিভাবে চারে থাকব? তারা যদি হারতে থাকে এবং আমরা জিততে থাকি, তখন কাছাকাছি যেতে পারি। এর আগ পর্যন্ত আমাদেরকে জিতে যেতে হবে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় কোয়ালিফাই করতে হলে।”

লিভারপুলের সমান ম্যাচ খেলে ৯ পয়েন্ট বেশি নিয়ে তিনে নিউক্যাসল, আর এক ম্যাচ কম খেলে ৭ পয়েন্ট বশি নিয়ে চারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।