চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
ফাইনালে প্রতিপক্ষ যদি রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন রেয়াল মাদ্রিদ হয়, তবুও ভাবনার কিছু দেখেন না বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড।
Published : 20 Mar 2025, 08:44 AM
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম পর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রায় সবার কাছেই ফেভারিট হয়ে উঠেছিল লিভারপুল। সেই দলই নকআউটের পর্বের শুরুতেই বিদায় নিয়েছে। শিরোপা জয়ের সম্ভাবনায় এখন তাহলে কারা এগিয়ে? উত্তর দিতে বেশি সময় নিলেন না লামিনে ইয়ামাল। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জানিয়ে দিলেন, বার্সেলোনা।
নতুন আঙ্গিকের এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম সাত ম্যাচের সবগুলো জিতে সবার আগে শেষ ষোলোর টিকেট নিশ্চিত করে লিভারপুল। প্রাথমিক পর্বে শেষ রাউন্ডে দুর্বল পিএসভি আইন্দহোভের বিপক্ষে তারা হেরে গেলেও, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
অমন দাপুটে পারফরম্যান্স উপহার দেওয়া দলটিই কিনা শেষ ষোলোয় পথ হারিয়ে ফেলে! ফিরতি লেগে তাদেরই মাঠে টাইব্রেকারে জিতে পরের ধাপে উঠে আসে পিএসজি। ফেভারিটের হিসেব-নিকেশও তাই পাল্টে গেছে।
প্রাথমিক পর্বে লিভারপুলের পরে টেবিলের দুইয়ে থেকে নকআউট পর্বে ওঠে বার্সেলোনা। আর শেষ ষোলোয় তারা দাপুটে ফুটবলে দুই লেগেই হারিয়ে দেয় বেনফিকাকে। কোয়ার্টার-ফাইনালে তাদের সামনে প্রতিপক্ষ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
শেষ আটে গতবারের রানার্সআপদের হারাতে পারলে সেমি-ফাইনালে তাদের দেখা হবে বায়ার্ন মিউনিখ কিংবা ইন্টার মিলানের। জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারলে ফাইনালে তারা লড়বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রেয়াল মাদ্রিদ, আর্সেনাল, পিএসজি অথবা অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে কখনও মুখোমুখি হয়নি স্পেনের দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রেয়াল মাদ্রিদ। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটিতে রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন রেয়াল, তাই অধিকাংশ দলই তাদের এড়াতে চায়। ইয়ামাল অবশ্য সেসব নিয়ে ভাবতেই চান না। দিয়ারিও স্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, নিজেদের প্রতি আস্থা রেখে বরং সব প্রতিপক্ষের প্রতি দিয়ে রাখলেন হুমকি।
“আমাদের কাউকে ভয় পাওয়া উচিত নয়। আমি বলেছিলাম, লিভারপুল ফেভারিট ছিল কারণ তারা লিগ পর্বে শীর্ষে ছিল এবং তাদের পর আমরা ছিলাম। আমি কোনো দলকে ভয় পাই না। আমরাই মাদ্রিদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছি (হারিয়েছি), এবং একইভাবে তারাও আমাদের করেছে।”
“কেউ যদি নিজেদের ফেভারিট মনে না করে, তাহলে তারা (লড়াইয়ের আগেই) হেরে বসবে। এমনটা মনে করা যাবে না যে, সবাই (আমাকে) হারাতে পারে। মনে করতে হবে আমরাই সেরা দল, সেরা ফুটবল খেলতে হবে এবং জয়ের সেরা সম্ভাবনা তৈরি করতে হবে।”
ইয়ামালের এতটা আত্মবিশ্বাসের যথেষ্ট কারণও আছে। ব্যক্তিগতভাবে তিনি যেমন দারুণ ছন্দে আছেন, তেমনি তার দলও। এই বছরে এখনও হারেনি তারা; সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে অপরাজিত আছে টানা ১৮ ম্যাচে। এর মধ্যে আছে বেনফিকা ও আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য দুটি প্রত্যাবর্তনের গল্প।
গত জানুয়ারিতে বেনফিকার বিপক্ষে ৪-২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৫-৪ ব্যবধানে জিতেছিল বার্সেলোনা। আর গত রোববার লা লিগায় আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে দুই গোল হজমের পর শেষ ২০ মিনিটে চার গোল করে ৪-২ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় ফ্লিকের দল।
দারুণ ধারাবাহিকতায় এগিয়ে চলার পথে নিজেদেরকে বিজয়ী ভাবতে শুরু করেছেন ইয়ামাল।
“আমার মধ্যে এমন অনুভূতি হচ্ছে যেন আমি একটা বিজয়ী দলের অংশ। রোববারের ম্যাচের মতো, আতলেতিকোর বিপক্ষে গত বছর আমরা চিত্র বদলে দিতে পারিনি (লা লিগায় শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে হেরেছিল বার্সেলোনা)।”
“বেনফিকার বিপক্ষে ম্যাচটির ক্ষেত্রেও গল্পটা একই। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে, আমরা বিজয়ী এবং আমরা আরও চাই, আরও।”
আতলেতিকোর বিপক্ষে সবশেষ জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে ফিরেছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলে রেয়াল মাদ্রিদের সমান ৬০ পয়েন্ট নিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে শীর্ষে তারা। রেয়ালের সমান ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আতলেতিকো।
কোপা দেল রের শিরোপা লড়াইয়েও আছে বার্সেলোনা; সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে আরেকটি রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৪-৪ ড্র করে দলটি। আগামী ২ এপ্রিল মাদ্রিদের দলটির মাঠে হবে ফিরতি লেগ।