বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশ
দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে হারলেও প্রীতি-শামসুন্নাহার-ঋতুপর্নাদের খেলায় খুশি কোচ পিটার বাটলার।
Published : 03 Jun 2024, 09:44 PM
শক্তিশালী চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচেই সঙ্গী পরাজয়। দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পাশাপাশি জোরোশোরে আলোচনা চলছে শুরুর একাদশে তারকা ফরোয়ার্ড সাবিনা খাতুনের জায়গা হারানো নিয়ে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার স্পষ্ট করে জানালেন, তার দলে জায়গা পেতে হলে নিজেদের প্রমাণ করেই আসতে হবে।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সোমবার দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে সাবিনা, সানজিদা, মাসুরা পারভীন- নিয়মিত ও অভিজ্ঞ এই তিনজনকে শুরুর একাদশের বাইরে রাখেন বাটলার। সুযোগ দেন আফিদা খন্দকার, স্বপ্না রানী, মুনকি আক্তারদের মতো তরুণদের।
প্রথম ম্যাচে দ্বাদশ মিনিটেই পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২৭তম মিনিটের মধ্যে আরও দুটি গোল হজম করে তারা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হারে ৪-০ ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচেও শুরুর দিকে গোল খেয়ে বসে বাংলাদেশ; কিন্তু এরপর ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে একশ ধাপ এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষকে আর গোল করতে দেয়নি স্বাগতিকরা। ম্যাচটি ১-০ গোলে হারলেও দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ খেলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বাটলার তাই দলের মানসিকতায় খুশি।
“প্রথম প্রীতি ম্যাচ দেখার পর এই ম্যাচে কিছু পরিবর্তন এনেছিলাম। প্রথম ম্যাচে আমরা ২০ মিনিটের মধ্যে তিন গোল হজম করেছিলাম, যে কারণে ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল, এ ম্যাচে আবারও আমরা ১৫ মিনিটে (১৭ মিনিট) আমরা গোল খেলাম, কিন্তু মেয়েরা যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল, আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলল, তাতে আমি খুশি।”
“কিছু পরিবর্তন এনেছিলাম, বড় খেলোয়াড়দের বেঞ্চে রেখেছিলাম, আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে একটুও ভীত ছিলাম না। কারণ আছে বলেই পরিবর্তন করেছিলাম। যদি কেউ এটা পছন্দ না করে…যদি বাংলাদেশ মেয়েদের খেলায় এগিয়ে যেতে চায়, যে খেলাটির সম্ভাবনা অনেক বেশি, তাহলে শৃঙ্খলা থাকতে হবে এবং সেটা বয়সভিত্তিক দলের বেলায়ও প্রযোজ্য।”
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ সাবিনা। সর্বোচ্চ গোলদাতাও ৩০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। বাটলারের কথায় উঠে এলো বয়সের প্রসঙ্গ। তবে সাবিনা-মাসুরাদের জন্য দলের দুয়ার খোলা রাখছেন তিনি।
“সত্যি বলতে আমার মনে হয়েছে সাবিনা ক্লান্ত, এ কারণে শুরু থেকে তাকে খেলায়নি। আমি তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। আশা করি, এই গ্রুপের সঙ্গে সে এগিয়ে যাবে। সে ভালো মেয়ে। তার অসাধারণ ক্যারিয়ারের প্রতি আমার পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু আপনি যখন বয়সী হয়ে যাবেন, কখনও কখনও আপনার মস্তিস্ক যেটা বলবে, সেটা আপনি করতে পারবেন না। আমি নিজেও এর মধ্য দিয়ে গেছি।”
“সানজিদা অসুস্থ ছিল। সাবিনার চেয়ে ওর বয়স কম। আমি আসলে লিগের পারফরম্যান্স দিয়ে এদের বিচার করছি না। যখন ১২-০, ১৫-০, ১৬-০ গোলের ম্যাচ হয়…এটা ভালো কিছু নয়। আপনি শিখবেন এই ম্যাচগুলো (চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে ম্যাচ) থেকে। সানজিদাকে কাজ করতে হবে, মাসুরাকেও কাজ করতে হবে। যেটা বলব, তারা যদি সেটা অনুসরণ করে তাহলে দারুণ, কিন্তু যদি অনুসরণ না করে, তাহলে তাদের জায়গা নেওয়ার লোক আছে। আমার কাছে কোনো ফেভারিটিজম, নেপোটিজম, এসব নেই।”
আগামী অক্টোবরে মাঠে গড়াবে সাফ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপ। তার আগেই বাটলার গুছিয়ে নিতে চান সবকিছু। তবে মুকুট ধরে রাখার মিশনে নতুনদের পাশাপাশি সাবিনাকেও কাজে লাগাতে চান তিনি।
“তাকে (সাবিনাকে) যদি ১৫-২০ মিনিট খেলানো যায়, তাহলে আমার মনে হয় সে প্রভাব রাখতে পারবে। আমরা একটা পথ খুঁজছি তার জন্য। তাকেই জিজ্ঞেস করুন, তার মন যেটা বলছে শরীর সেটা করার অনুমতি দিচ্ছে কিনা। এখানে ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নেই। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে এবং চমৎকারভাবে বাংলাদেশকে সেবা দিয়েছে। কিন্তু এখন সময় নতুন, তরুণদের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার, শামসুন্নাহার জুনিয়র, প্রীতি, ঋতুপর্না, মনিকা আজ রাতে দুর্দান্ত ছিল।”
“আমি মনে করি, মেয়েরা আজ রাতে দুর্দান্ত খেলেছে। নির্দেশনা অনুসরণ করেছে। আমার মনে হয়, দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আরও ভালো ছিলাম, ম্যাচে আধিপত্য করেছি।”