মৌসুমের শুরুটা দারুণ করলেও লা লিগায় সবশেষ ছয় ম্যাচের কেবল একটিতে জিততে পেরেছে বার্সেলোনা।
Published : 16 Dec 2024, 08:40 AM
ম্যাচের ৮১ শতাংশ সময় বল নিজেদের কাছে রাখা। প্রতিপক্ষের চেয়ে প্রায় চারগুণ পাস খেলা। ৮৮ শতাংশ পাস সফল, প্রতিপক্ষের চেয়ে যা ৩১ শতাংশ বেশি। গোলে ২০টি শট। এই সবকিছুর ফলাফল শূন্য! ম্যাচে কোনো গোলই করতে পারেনি বার্সেলোনা, উল্টো হজম করেছে একটি। লা লিগায় বার্সেলোনার দুঃসময়ের একটি দলিল এই ম্যাচ। ঘরের মাঠে রোববার তারা ১-০ গোলে হেরে গেছে লেগানেসের কাছে।
অথচ নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের কোচিংয়ে মৌসুমের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল বার্সেলোনা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রথম ১৬ ম্যাচের ১৪টিই তারা জিতেছিল। শুধু জয়ই নয়, নজর কেড়েছিল কাতালান দলটির খেলার ধরনও। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে গোলের জোয়ারে ভাসিয়ে দিচ্ছিল তারা। সেই দলটিই এখন হঠাৎ অচেনা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অবশ্য এখনও পর্যন্ত তাদের অবস্থান যথেষ্টই ভালো। ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই তারা জিতেছে। তবে লা লিগায় সাম্পতিক সময়টা তাদের জন্য হতাশাময়। লেগানেসের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে সেই হতাশা মিডফিল্ডার পেদ্রির কণ্ঠে।
“আজকে যা হলো, এরপর খুশিমনে আমাদের বাড়ি ফেরা অসম্ভব। ম্যাচটি আমরা শুরু করেছিলাম যেন অর্ধঘুমে। এরপর সুযোগ তৈরি করলেও গোল করার জন্য প্রতিপক্ষের গোলমুখে জ্বলে উঠতে পারিনি আমরা। আরও ভালো করতে হবে আমাদের। এভাবে প্রতিপক্ষকে ম্যাচের শুরুতেই গোল বারবার করতে দিতে পারি না।”
“আমরা যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করেছি। তবে কাজটা শেষ করা জানতে হবে আমাদের। লা লিগায় আমরা কেন এতটা ধুঁকছি, ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন। তবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে আমাদের।”
দুই ম্যাচে নিষেধাজ্ঞার কারণে এই ম্যাচের ডাগআউটে থাকতে পারেননি কোচ হান্সি ফ্লিক। সাইডলাইন থেকে দল পরিচালনা করেছেন যিনি, সেই সহকারী কোচ মার্কাস জর্গ কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না এই হারের।
“এই পরাজয়ের ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন। প্রথম সমস্যা ছিল ম্যাচের প্রথম পাঁচ মিনিটে মনোযোগে ঘাটতি, যখন আমরা গোল হজম করেছি। এরপরও খুব ভালো না খেলেও আমরা ২০টির মতো সুযোগ তৈরি করেছি, কিন্তু গোল করতে পারিনি… এত সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে জেতাটা কঠিন।”
লা লিগায় বার্সেলোনার পথ হারানোর একটি ব্যাখ্যা অবশ্য জর্গের আছে। জার্মান এই কোচের মতে, ব্যস্ত সূচির প্রভাব পড়েছে ফুটবলারের ওপর।
“এই অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে হবে আমাদের, কারণ সূচিটা ফুটবলারদের জন্য খুবই কঠিন। কয়েক দিনের মধ্যেই বেশ কিছু ম্যাচ আমরা খেলেছি, যেখানে নিজেদের উজাড় করে দিতে হয়েছে এবং এই দলটা এতে অভ্যস্ত নয়।”
মৌসুমের শুরুটা তাদের এতটা দুর্দান্ত ছিল এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রেয়াল মাদ্রিদের পারফরম্যান্স এমন অধারাবাহিক যে, এখনও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে বার্সেলোনাই। যদিও রেয়াল ও আতলেতিকো মাদ্রিদের সুযোগ থাকবে পরের ম্যাচেই শীর্ষে ওঠার।
১৮ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট বার্সেলোনার। এক ম্যাচ কম খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোলপার্থক্যে দুইয়ে আতলেতিকো। ১৭ ম্যাচে রেয়ালের পয়েন্ট ৩৭।
সময়ের বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় জানালেন বার্সেলোনার সহকারী কোচ।
“লিগে আমাদের সাম্প্রতিক এই পথচলায় আমরা খুশি নই অবশ্যই। তবে একটা দল গড়ে তোলার চেষ্টার পথে নানা কিছু মেনে নিতেই হবে। আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা এখনও শীর্ষে আছি। যদিও শীর্ষস্থান হারাতে পারি, তার পরও ওপরের দিকেই থাকব।”