Published : 02 May 2025, 11:24 AM
একই দল তো? ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে দেখে এই ধন্দে পড়ে যেতে বাধ্য অনেকেই। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে যে দলটি ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময় কাটাচ্ছে, ইউরোপা লিগে সেই দলই অপ্রতিরোধ্য! অবিশ্বাস্যভাবে আসরের একমাত্র অপরাজিত দল তারা এবং সেই অপরাজেয় ছুটে চলায় দলটি এখন ফাইনালের দুয়ারেও পৌঁছে গেছে। দুই টুর্নামেন্টে কেন এমন দুই রূপ, ব্যাখ্যা নেই কোচ হুবেন আমুরির কাছেও।
ইউরোপা লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে আথলেতিক বিলবাওয়ের মাঠে বৃহস্পতিবার ৩-০ গোলের জয় পায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তিনটি গোলই হয় প্রথমার্ধে।
৩০তম মিনিটে হ্যারি ম্যাগুইয়ার দারুণ খেলে বানিয়ে দেন বল। মানুয়েল উগার্তের মাথা ছুঁয়ে আসা বলে আবার হেড করে দলকে এগিয়ে দেন কাসেমিরো।
মিনিট পাঁচেক পর লাল কার্ড দেখেন বিলবাওয়ের ডিফেন্ডার দানি ভিভিয়ান। সেখান থেকে পেনাল্টিতে গোল করেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। ৪৫তম মিনিটে আরেকটি গোলে দলকে আরও এগিয়ে নেন ফের্নান্দেস।
দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল হয়নি। তবে ইউনাইটেড ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করেই ফেলেছে। পরের লেগ তো তাদেরই মাঠে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৩৪ ম্যাচের ১০টি স্রেফ জিততে পেরেছে যারা, হেরেছে ১৫টিতে, পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান এখন ১৪, সেই দলটিই ইউরোপা লিগে এখনও পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল এবং শিরোপা থেকে মাত্র দুই ধাপ দূরে। এই বছর প্রিমিয়ার লিগে ১৫ ম্যাচে যত গোল করেছে তারা, ইউরোপায় সাত ম্যাচেই করেছে আরও বেশি!
দুই আসরে এমন অবিশ্বাস্য ফারাকের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না স্বয়ং কোচ আমুরিও।
“এটা আসলে ব্যাখ্যা করা কঠিন। গত কয়েকটি ম্যাচে অবশ্য আমরা উন্নতি করেছি (প্রিমিয়ার লিগে)। আমি স্রেফ ফলাফল দেখি না। দারুণ কিছু ম্যাচ আমরা জিতেছি, যেগুলোয় ভালো খেলিনি, আবার কিছু ম্যাচে ভালো খেলেও হেরেছি। কখনও কখনও স্রেফ একটু ভাগ্যের সহায়তা পেতে হয়।”
“এই টুর্নামেন্টে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারি। প্রিমিয়ার লিগে আমরা ম্যাচের পর ম্যাচ ভুগছি। কিছু চোট সমস্যাও সামলাতে হচ্ছে। কখনও কখনও ফুটবলারদের জন্যও কাজটা কঠিন। জানি, এসব বুঝে ওঠা কঠিন। তবে মাঝেমধ্যে এটিই ব্যাপার, যেভাবে আমরা সবকিছু দেখি।”
উয়েফা কাপ বা ইউরোপা লিগের নকআউট পর্বে প্রথম লেগে তিন গোলে এগিয়ে থাকা ১৩৩ ম্যাচের পরিসংখ্যান বলছে, তারা ছিটকে পড়েনি একবারও। অতি নাটকীয় কিছু না হলে এবারও ইউনাইটেড ফাইনালে পৌঁছেই গেছে বলা যায়।
তবে মৌসুমজুড়ে ধারাবাহিক পারফর্ম করতে থাকা ম্যাগুইয়ার এখনই নিশ্চিন্ত থাকতে চান না।
“অবশ্যই শুরুটা দারুণ হলো এখানে জিতে এবং তিন গোল করে কোনো গোল হজম না করে। তবে চাপটা সবটুকু এখন আমাদের ওপরই। সবাই আশা করবে, আমরাই ফাইনালে যাব। আমাদেরকে ভালোভাবে তৈরি হতে হবে। যদি তা পারি, তাহলে আমাদের সম্ভাবনা ভালো থাকবে।”
“আমাদের এক পা ফাইনালে, তবে কাজ শেষ হয়নি।”
পরের লেগ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আগামী বৃহস্পতিবার।
সেদিন ফাইনাল নিশ্চিত করার লড়াইয়ে নামবে টটেনহ্যাম হটস্পারও। তাদের বাস্তবতাও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতোই। প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যামের অবস্থা আরও বেশি খারাপ। পয়েন্ট তালিকায় তারা আছে ১৬ নম্বরে। কিন্তু ইউরোপায় সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-১ গোলে জিতে ফাইনালের পথে এগিয়ে আছে তারাও।