উইমেন’স সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
ভুটানকে হারিয়ে সাফ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার পর টিম বাসে বাঁধনহারা আনন্দে মাতলেন মেয়েরা।
Published : 27 Oct 2024, 06:11 PM
দুদিন আগে হাসিমুখে ‘আক্ষেপ’ জানিয়ে ঋতুপর্ণা চাকমা বলেছিলেন, কপালে গোল জোটে না। ভুটানের বিপক্ষে তিনি দারুণ এক গোলে দলকে এগিয়ে নিলেন। সে কথা মনে করিয়ে দিতেই হাসির ফোয়ারা ছোটালেন এই ফরোয়ার্ড।
ঋতুপর্ণা ও মারিয়া মান্দার পেছনের সিটে বসা মাসুরা পারভীন গলা বাড়িয়ে বলতে লাগলেন, তাদের কপাল খারাপ, রক্ষণে খেলেন বলে গোল পান না। ভুটানকে হারিয়ে সাফ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার পর টিম বাসের ভেতরের দৃশ্য ছিল এমনই উচ্ছ্বাস-উন্মাদনায় ভরপুর।
নেপালের কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে রোববার ভুটানকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দেয় মেয়েরা। সপ্তম মিনিটে ঋতুপর্ণা চোখ ধাঁধানো শটে বল জড়ান জালে। বড় জয়ের পথে বাংলাদেশের দুর্বার গতিতে ছোটার সেই শুরু।
প্রথমার্ধেই তহুরা ও সাবিনা- দুজনে জোড়া গোল করলে স্কোরলাইন হয় ৫-০। বিরতির আগে ভুটান এক গোল শোধ করে। অপরাজিত থেকে গ্রুপ পর্ব পেরুনো ভুটানের জন্য আনন্দের মুহূর্ত ছিল স্রেফ এতটুকুই।
দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তহুরা। সাফে প্রথম হ্যাটট্রিক পেলেন ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ভারত ম্যাচের পর ভুটান ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড় হন তহুরা। পরে শিউলি আজিমের গোলে স্কোরলাইন হয় ৭-১।
ম্যাচের লাগাম মুঠোয় থাকায় ৬৩তম মিনিটে তিন পরিবর্তন আনেন বাটলার। প্রথমবারের মতো সাফের আঙিনায় খেলার সুযোগ মেলে শাহেদা আক্তার রিপার। উচ্ছ্বাসভরা কণ্ঠে তিনি বললেন, এই জয় তার কাছে অভাবণীয়।
“(সাফে প্রথম খেলতে এসে ফাইনালে উঠেছি) অসাধারণ লাগছে। আমরা ভাবতে পারিনি, ওদের সাত গোল দিব। সবাই ভালো খেলেছে, তাই হয়েছে। আশা করি, ফাইনালে ভালো হবে।”
এবার তো কপাল ভালো-কথাটি মুখ থেকে কেড়ে নিয়ে ঋতুপর্ণা দিতে থাকলেন দুদিন আগে বলা কথার ব্যাখ্যা।
“কপাল খারাপ বলি নাই। আমি বলছি, আমার কপাল ভালো, কিন্তু কপালে গোল জুটে না। দোয়া করবেন, আমাদের ফাইনালের জন্য। খুবই ভালো লাগছে, আমরা যেমনটা চেয়েছি, তেমনটা খেলতে পেরেছি।”
ঋতুপর্ণার পাশের সিটে বসা মারিয়া বললেন, তারা জানতেন ভুটানকে উড়িয়ে দিতে পারবেন!
“কখনও ভয় লাগেনি ভুটানকে। আমরা যদিও বলেছিলাম যে ওদের সমীহ করছি, কিন্তু নিজেদের খেলাটা মাঠে গিয়ে খেলেছি। জানতাম ওদেরকে বড় ব্যবধানে হারাব। সেটা করতে পেরে ভালো লাগছে।”
ঋতুপর্ণা ও মারিয়ার পেছনের সিটে বসে ফোড়ন কাঁটার সুরে মাসুরা বলতে লাগলেন আক্ষেপের কথা।
“কপাল খারাপ আমাদের, আমরা গোল পাইনা, ডিফেন্সে খেলি, তাই আমাদের নাম হয় না। আমাদের জন্য একটু ইতিবাচক খবর প্রকাশ করবেন।”
দুই বছর আগে বাংলাদেশের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে দুই গোল করেছিলেন মাসুরা। গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপের বিপক্ষে এবং সেমি-ফাইনালে ভুটানকে ৮-০ ব্যবধানে গুঁড়িয়ে দেওয়া ম্যাচে।