মাঝমাঠে খেলা গড়া তো বটেই, গোলের সুযোগ তৈরি করে দেওয়াতেও দারুণ পারদর্শী ক্রিস্তিয়ান এরিকসেন। ডেনিশ মিডফিল্ডারের এই দিকটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে বেশ কাজে দেবে বলে মনে করেন দলটির কোচ এরিক টেন হাগ। তার মতে, এরিকসেনের উপস্থিতিতে উপকৃত হবে দলের স্ট্রাইকাররা।
Published : 18 Jul 2022, 11:36 PM
‘ফ্রি এজেন্ট’ এরিকসেনকে গত শুক্রবার তিন বছরের চুক্তিতে দলে টানে ইউনাইটেড। এর আগে গত মৌসুমের শেষভাগে তিনি খেলেন প্রিমিয়ার লিগের আরেক দল ব্রেন্টফোর্ডে। গত জানুয়ারিতে ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর লিগে ১১টি ম্যাচ খেলে একটি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের চারটি গোলে অবদান রাখেন তিনি।
গত মার্চ থেকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত ৩০টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন এরিকসেন। এই সময়ে তার চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করেছিলেন কেবল মার্টিন ওডেগোর (৩৮) ও কেভিন ডে ব্রুইনে (৪২)।
ব্রেন্টফোর্ডের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফেরার আগে অবশ্য এরিকসেনের ফুটবল ক্যারিয়ারই পড়ে গিয়েছিল অনিশ্চয়তায়।
গত বছর জুনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এরিকসেন। পরে তার শরীরে ইমপ্ল্যানটেবল কার্ডিওভার্টার ডেফিব্রিলেটর (আইসিডি) বসানো হয়। এটি একটি ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইস, পেসমেকারের মতো যা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট প্রতিরোধ করে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখার কাজ করে।
এরিকসেনের শরীরে যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস বসানো হয়, সেটি নিয়ে খেলার অনুমতি নেই ইতালিয়ান ফুটবলে। তাই বাধ্য হয়ে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ইন্টার মিলান।
কঠিন সেই সময় পেছনে ফেলে ইংলিশ লিগে ফিরে (এর আগে সাত বছর খেলেছিলেন টটেনহ্যাম হটস্পারে) দ্রুতই পুরনো ছন্দে ফেরার আভাস দেন এরিকসেন। আর গত মৌসুমের শেষ ভাগে তো ক্লাব ও জাতীয় দল, দুই জায়গাতেই মাঠ মাতান এরিকসেন। এবার ইউনাইটেডের জার্সিতে নিজেকে মেলে ধরার চ্যালেঞ্জ তার সামনে।
নিজের দলে এরিকসেনের ভালো করার সম্ভাবনায় দারুণ আশাবাদী টেন হাগ। ক্লাবের ওয়েবসাইটে সোমবার তিনি বলেন, প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা এরিকসেনের কাজে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
“সে একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। সে বিদেশের মাটিতে খেলেছে। সে ইতালি ও নেদারল্যান্ডসে খেলেছে এবং ইংল্যান্ডে খেলেছে দীর্ঘ সময় ধরে। তাই প্রিমিয়ার লিগ সম্পর্কে তার ধারণা আছে।”
“তাকে দলে পাওয়া আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। আমার চোখে সে একজন দুর্দান্ত ফুটবলার এবং আমি মনে করি, ভক্তরা তার খেলা উপভোগ করবে।”
এরিকসেনকে সতীর্থ হিসেবে পেয়ে বিশেষ করে স্ট্রাইকাররা খুশি হবেন বলে বিশ্বাস কোচের।
“সে সৃজনশীল এবং ফুটবল বিষয়ক অনেক জ্ঞান আছে। আমি মনে করি, আমাদের স্ট্রাইকাররা তাকে পেয়ে খুশি হবে।”
“নতুন খেলোয়াড় কেনাই আসল কথা নয়, সঠিক খেলোয়াড়দের দলে টানতে হবে। আমি সত্যিই খুশি যে আমরা ক্রিস্তিয়ান এরিকসেনকে দলে নিতে সফল হয়েছি।”
লিগে গত মৌসুমে প্রতি ৯০ মিনিটে ২.৮৮টি সুযোগ তৈরি করেছিলেন এরিকসেন। অন্যদিকে, ইউনাইটেডের হয়ে সবচেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করেছিলেন মিডফিল্ডার ব্রুনো ফের্নান্দেস (২.৫৭টি)।
২০২১-২২ মৌসুমে ইউনাইটেডের সর্বোচ্চ গোল করেছিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (১৮টি)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল ছিল ফের্নান্দেসের (১০টি)।
পরিষ্কারভাবে মৌসুম জুড়ে আক্রমণে ভোগা দলটিতে এরিকসেনের অন্তর্ভুক্তি তাদের আক্রমণে শক্তি বাড়াবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পাশাপাশি চলতি দলবদলে তাইরেল মালাসিয়া ও লিসান্দ্রো মার্তিনেসকে নিয়ে রক্ষণও মজবুত করেছে ইউনাইটেড।