জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে নানা কীর্তিতে প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন কিলিয়ান এমবাপে। সবশেষ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কাজাখস্তানের বিপক্ষে চার গোল করা এই তারকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফ্রান্স কোচ দিদিয়ে দেশম। তার মতে, বল নিয়ে যে কোনো কিছুই করার সামর্থ্য আছে পিএসজি ফরোয়ার্ডের।
Published : 14 Nov 2021, 08:53 PM
প্যারিসে শনিবার রাতে ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। নিশ্চিত করে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট। নিজে চার গোল করার পাশাপাশি করিম বেনজেমাকে দিয়ে একটি গোলও করান এমবাপে।
জাতীয় দলের হয়ে এটাই তার প্রথম হ্যাটট্রিক। ১৯৮৫ সালে দমিনিক অগস্তুর পর ফ্রান্সের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান আছে আরও। ৬৩ বছর পর ফ্রান্সের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এক ম্যাচে চার গোল করা কীর্তি গড়লেন এমবাপে। এর আগে ১৯৫৮ সালের জুনে তখনকার পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে জুস্ত ফঁতেইন করেছিলেন চার গোল।
অথচ এই এমবাপেই গত জুন-জুলাইয়ের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের পর অবসরের চিন্তা করেছিলেন। ওই টুর্নামেন্টে তিনি ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। তারওপর শেষ ষোলোয় সুইসদের বিপক্ষে টাইব্রেকারে শেষ শট মিস করেছিলেন এমবাপে, ছিটকে পড়েছিল দল। তাতে কড়া সমালোচনার মুখে অভিমানের বশেই কি-না জাতীয় দলকে বিদায় বলার ভাবনা এসেছিল তার মনে।
দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন এমবাপের পায়ের যাদুতে মুগ্ধ দেশমের মতে, প্রতিনিয়ত উন্নতি করা তরুণ এই ফুটবলারের পক্ষে সম্ভব যে কোনো কিছু।
"সে যে কোনো কিছু করতে পারে। তার প্রাপ্তির সংখ্যাগুলো এরই মধ্যে অনেক সমৃদ্ধ। ধীরে ধীরে হেড করেও ভালো ফল পেতে শুরু করেছে সে। তার উন্নতির গ্রাফটা অবিশ্বাস্য।"
রেকর্ড গড়া ম্যাচে এমবাপের সামনে সুযোগ ছিল পাঁচ গোল করারও। ৮৪তম মিনিটে অঁতোয়ান গ্রিজমান ফাউলের শিকার হলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে নিজেই চেষ্টা না করে আতলেতিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ডের হাতে বল তুলে দেন এমবাপে। তার এই মানসিকতায় খুশি কোচ।
"আমি তার মানসিকতাকেও কুর্নিশ জানাতে চাই। সে নিজের পঞ্চম গোলটি করতে পারত, কিন্তু সে অঁতোয়ানকে (গ্রিজমান) স্পট কিক নিতে দেয়।"
২২ বছর বয়সী এমবাপে ফ্রান্সের হয়ে ৫২ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ২৩টি। এই বয়সে জাতীয় দলের হয়ে গোলের হিসেবে সময়ের দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর চেয়েও তার সংখ্যাটা বড়।
ফরাসি ফরোয়ার্ড এগিয়ে যেতে চান আরও বহুদূর। বুটজোড়া তুলে রাখার আগে রেকর্ডের পাতায় আরও অনেক ছাপ রাখার প্রত্যয় তার কন্ঠে।
"আমি ইতিহাস রচনা করতে চাই।"
"হয়তো একদিন কোনো বাচ্চা যে আজ আমাকে টিভিতে দেখছে সে আমার রেকর্ডটা ভাঙবে। ফুটবলে নিজের ছাপ রেখে যাওয়ার বাসনা আমার সবসময়ই ছিল এবং আমি এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।"
বাছাইয়ে ৭ ম্যাচে চার জয় ও তিন ড্রয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ফ্রান্স। সমান ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ফিনল্যান্ড। শেষ রাউন্ডে আগামী মঙ্গলবার দলটির মাঠে খেলবে ফরাসিরা।