দুই লেগ মিলিয়ে এফসি কোপেনহেগেনকে ৬-২ গোলে হারাল পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
Published : 07 Mar 2024, 03:00 AM
প্রথম লেগের জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। ফিরতি দেখায় ম্যাচের ১০ মিনিট না যেতেই কোপেনহেগেনের জালে দুইবার বল পাঠিয়ে সব অনিশ্চয়তার একরকম ইতি টেনে দেয় তারা। আরেকটি অনায়াস জয়ে পরের ধাপে পৌঁছে গেল পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে জিতেছে শিরোপাধারীরা। সবগুলো গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে।
মানুয়েল আকনজি ও হুলিয়ান আলভারেস সিটিকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান কমান মোহামেদ এলিয়োনোসি। স্বাগতিকদের তৃতীয় গোলটি করেন ছন্দে থাকা আর্লিং হলান্ড।
দুই লেগ মিলিয়ে ৬-২ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটে জায়গা করে নিল সিটি।
প্রিমিয়ার লিগে গত রোববার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচের একাদশ থেকে কোপেনহেগেনের বিপক্ষে সাতটি পরিবর্তন আনেন গুয়ার্দিওলা। জোড়া গোল করে ওই ম্যাচের নায়ক ফিল ফোডেনকে রাখেন বেঞ্চে।
পঞ্চম মিনিটে ম্যাচের প্রথম সেট-পিস থেকেই এগিয়ে যায় সিটি। আলভারেসের কর্নারে বক্সে জটলার ভেতর থেকে দারুণ ভলিতে গোলটি করেন আকনজি।
২০২২ সালের ২৬ এপ্রিলের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সিটির দ্রুততম গোল এটি (৪ মিনিট ২৯ সেকেন্ড)। ইতিহাদেই সেবার রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-৩ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচের ৯৩ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন কেভিন ডে ব্রুইনে।
নবম মিনিটে আলভারেস নিজেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বলা যায়, আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ডকে গোল উপহার দেন কোপেনহেগেন গোলরক্ষক কামিল গ্রাবারা।
আলভারেসের কর্নারে রদ্রির হেড ক্রসবারে লাগার পর ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি সফরকারীরা। বাঁ দিকে বক্সের বাইরে বল পান আলভারেস। তার ডান পায়ের কোনাকুনি শট ছিল গোলরক্ষক বরাবর, কিন্তু গ্রাবারার হাত ফসকে বল জালে জড়ায়।
খেলার ধারার বিপরীতে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে ২৯তম মিনিটে ব্যবধান কমায় কোপেনহেগেন। এলিয়োনোসি মাঝমাঠ থেকে বল ধরে এগিয়ে বক্সে সতীর্থকে পাস দিয়ে তিনি নিজেও ভেতরে ঢুকে পড়েন। ফিরতি বল পেয়ে ডান পায়ের নিচু শটে গোলটি করেন নরওয়ের এই ফরোয়ার্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে অ্যাওয়ে ম্যাচে কোপেনহেগেনের প্রথম গোল এটি।
আক্রমণে আধিপত্য ধরে রেখে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান আবার বাড়িয়ে নেয় সিটি। রদ্রির উঁচু করে বাড়ানো বল বক্সে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেন হলান্ড। তার সামনে ছিল প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডার। একটু জায়গা বানিয়ে বাঁ পায়ের নিচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন নরওয়ের তারকা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩৭ ম্যাচে হলান্ডের গোল হলো ৪১টি। প্রতিযোগিতাটিতে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় সিটির সাবেক ফরোয়ার্ড সের্হিও আগুয়েরোর সঙ্গে যৌথভাবে ১৭তম স্থানে আছেন তিনি। অবশ্য আগুয়েরোর চেয়ে ৪২ ম্যাচ কম খেলেই তাকে ছুঁয়ে ফেললেন ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
সিটির হয়ে টানা তিন ম্যাচে জালের দেখা পেলেন হলান্ড। এই তিন ম্যাচে তার গোল হলো ৭টি। এর মধ্যে এফএ কাপের ম্যাচে লুটন টাউনের বিপক্ষেই করেন ৫টি।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ক্লাবের হয়ে ৩২ ম্যাচে তার গোল এখন ২৯টি। যার ৬টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে, কিলিয়ান এমবাপে ও হ্যারি কেইনের সঙ্গে যৌথভাবে যা সর্বোচ্চ।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য খুব বেশি পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সিটি। ৬৬তম মিনিটে কোপেনহেগেনের একটি শট ঠেকান এদেরসন।
৮৮তম মিনিটে হলান্ডকে তুলে নেন গুয়ার্দিওলা। শেষ সময়ে রিকো লুইসের একটি প্রচেষ্টা ক্রসবারে লাগায় ব্যবধান আর বাড়েনি।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত সিটি তাদের আট ম্যাচের প্রতিটিতেই ৩টি করে গোল করল! জিতল সবগুলোতেই।
আগামী রোববার প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে সিটি খেলবে লিভারপুলের বিপক্ষে। গুয়ার্দিওলার দলের চেয়ে ১ পয়েন্টে এগিয়ে শীর্ষে আছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।