ফলাফল নিয়ে মিশ্র অনুভূতি থাকলেও পরের লেগে একইভাবে খেলেই জিততে চান কার্লো আনচেলত্তি।
Published : 10 Apr 2024, 10:49 AM
ম্যাচের পারফরম্যান্স আর ফলাফলে যেমন দুই দলকে আলাদা করা কঠিন, তেমনি কার্লো আনচেলত্তির প্রতিক্রিয়াও মিশ্র। উচ্ছ্বাস বা আক্ষেপ, পারফরম্যান্সের মূল্যায়নে দুটিরই মিশেল আছে তার। কোনোটিরই নেই বাড়াবাড়ি। তবে একটি ব্যাপারে নিশ্চিত রেয়াল মাদ্রিদ কোচ, দ্বিতীয় লেগে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে দলের কাছ থেকে একইরকম খেলা দেখতে চান তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে মঙ্গলবার নিজেদের মাঠে রেয়াল মাদ্রিদের পারফরম্যান্সে ছিল ওঠা-নামা। ম্যাচের দুই মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে তারা গোলকিপার আন্দ্রি লুনিনের ভুলে। তবে প্রবলভাবে ম্যাচে ফিরে এগিয়েও যায় তারা দ্রুত দুটি গোল করে। প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ তারা তৈরি করে। কিন্তু সেসব কাজে লাগাতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র, রদ্রিগোরা।
দ্বিতীয়ার্ধে রেয়ালের খেলায় গতি ও আগ্রাসন কমে আসে কিছুটা। নিজেদের বক্সের সামনে কিছুটা ফাঁকা জায়গাও রেখে দেয় তারা বারবার। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ দুটি গোল করে আবার এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। শেষ পর্যন্ত ফেদে ভালভের্দের চোখধাঁধানো ভলির গোলে ম্যাচ শেষ হয় ৩-৩ সমতায়।
মাঠের পারফরম্যান্সে রেয়াল মাদ্রিদের সেই নানা চেহারাই ম্যাচের পর ফুটে উঠল কোচ আনচেলত্তির কণ্ঠে।
“ম্যাচটি জয়ের মতো ছিল। কারণ ২-১ থেকে ৩-১ করার সুযোগ ছিল আমাদের। তবে ৩-২ গেলে পিছিয়ে পড়ার পর আমরা ম্যাচটি হারতেও পারতাম, যদি ফেরার মতো আত্মবিশ্বাস না থাকত।”
“শুরুটা খুব ভালো করতে পারিনি আমরা। তবে পরে আমাদের দিক থেকে খুব ভালো খেলা হয়েছে। ওপরের দিকে চাপ প্রয়োগের প্রাণশক্তি যতক্ষণ দেখিয়েছি আমরা, ততক্ষণ সমানে সমান লড়াই ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। আমরা সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিলাম, কিন্তু ওরা দারুণ দুটি গোল করে বসে… দিনশেষে ফলাফল উপযুক্তই ছিল।”
তবে বিস্তারিত নানা বিশ্লেষণে আরও যা কিছু বললেন আনচেলত্তি, তাতে সন্তুষ্টির ভাগটাই বেশি মনে হলো তার। দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল হজমের ওই সময়টুকু ছাড়া দলের খেলায় তিনি খুশি। পরের লেগে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠেও তাই দলের কাছ থেকে এমন খেলাই দেখতে চান কোচ।
“দুই দলের জন্যই অবিশ্বাস্য একটি ম্যাচ ছিল। মাঠে যে মানের ফুটবল আমরা দেখেছি, তা নিয়ে কোনো সংশয় থাকার কথা নয়। অসাধারণ দুটি দল সমান তালে লড়েছে। আমি সন্তুষ্ট, কারণ খুব ভালো একটি দলের বিপক্ষে দারুণ ম্যাচ হয়েছে। অবশ্যই দুর্দান্ত কোনো ফল নয় এটি, কারণ জিততে পারিনি আমরা। তবে লড়াই এখনও উন্মুক্ত।”
“৬০ মিনিটের পর আমরা প্রাণশক্তি কিছুটা হারিয়ে ফেলি এবং সমস্যায় পড়ে যাই। তবে পরে আবার খেলায় ফিরে আসি। আমার দলের মধ্যে যা দেখেছি, বিশেষ করে ম্যাচে নিজেদের মেলা ধরা, সাহস ও মানসিকতা, সবকিছু আমার দারুণ লেগেছে। দ্বিতীয় লেগে আমরা একইভাবে খেলতে চাই, তারপর দেখব কী হয়।”
পরের লেগের আগে অবশ্য একটি ধাক্কা তারা খেয়ে ফেলেছে এই লেগের শুরুতেই। ম্যাচ শুরু হতে না হতেই হলুদ কার্ড দেখেন অহেলিয়া চুয়ামেনি। এই ম্যাচে রক্ষণভাগে খেলা এই মিডফিল্ডারকে কার্ডের খাড়ায় পরের লেগে পাবে না রেয়াল।
গুরুত্বপূর্ণ এই ফুটবলারকে হারিয়ে অবশ্য দুর্ভাবনার বেশি কিছু দেখছেন না আনচেলত্তি। পরের লেগ ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে, যেখানে কখনও জিততে পারেনি রেয়াল। তবে দলের আত্মবিশ্বাসে কমতি থাকবে না বলে দাবি কোচের।
“চুয়ামেনির জায়গায় আমরা নাচো কিংবা মিলিতাওকে বেছে নেব। সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজকের ম্যাচের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করব আমরা। তবে এভাবেই ওদের মুখোমুখি হয়ে লড়াই করে যেতে হবে আমাদের।”
“ওদের দর্শক সমর্থন বেশি থাকবে বলে কিছুটা পিছিয়ে থাকব আমরা, তবে আমাদের আত্মবিশ্বাস একইরকম থাকবে। ৪-৩ গোলে জিতে যদি আমরা ওখানে যেতাম, তাহলেও দ্বিতীয় লেগে আমাদের খেলার ধরনে বদল আসত না। একইভাবেই খেলব।”