আন্তর্জাতিক ফুটবল
মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোল পাওয়া নিয়েই বেশি চিন্তিত বাংলাদেশ; আক্রমণভাগের তারকা শেখ মোরসালিন আশাবাদী, গোলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন তারা।
Published : 10 Nov 2024, 08:20 PM
গোল নিয়ে বাংলাদেশের গোলকধাঁধায় থাকা নতুন কিছু নয়। এ বছর যেন তা বেড়েছে আরও। চলতি বছরে এ পর্যন্ত খেলা ছয় ম্যাচে বাংলাদেশ গোল হজম করেছে ১৩টি, দিয়েছে মাত্র ১টি! এই একমাত্র গোলটি করা শেখ মোরসালিন মালদ্বীপের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচ সামনে রেখে শুনিয়েছেন আশার কথা। আস্থা রাখতে বলেছেন আক্রমণভাগের উপর।
এই ছয় ম্যাচে বিবর্ণ আক্রমণভাগের মতোই মলিন রক্ষণভাগ। বিশেষ করে, গত সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে খেলা শেষ ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে রক্ষণে চিড় ধরেছিল, গোল খেয়ে হেরেছিল বাংলাদেশ। রক্ষণের অভিজ্ঞ সেনানি তপু বর্মন মালদ্বীপ ম্যাচ সামনে রেখে প্রতিশ্রুতি দিলেন, জাল অক্ষত রাখার।
নভেম্বরের উইন্ডোতে মালদ্বীপের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথমটি বুধবার, পরেরটি তিন দিন পর। দুটি ম্যাচই হাভিয়ের কাবরেরার দল খেলবে বাড়ির উঠান কিংস অ্যারেনায়। নিজেদের মাঠে খেলা বলে মোরসালিন আরও আশাবাদী।
“অবশ্যই যেহেতু ঘরের মাঠের খেলা, মালদ্বীপের সাথে দুইটা ম্যাচ আমরা জয়ের বিকল্প কিছু দেখছি না। এখন গোল কে করবে, সেটা বলতে পারছি না। তবে আমাদের গোল করতে হবে, জিততে হবে এটাই আমাদের লক্ষ্য। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য মালদ্বীপের বিপক্ষে জিততে হবে।”
“কোচ আমাদের ফিনিশিং অনুশীলনগুলো করাচ্ছে; আমরা চেষ্টা করছি, যার যার যে দুর্বলতা আছে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার। ফিনিশিং নিয়ে কাজ হচ্ছে, আপনারা যেটা বলছিলেন শেষ ছয় ম্যাচে মাত্র একটা গোল হয়েছে… এটা আসলে অজুহাত না, আমরা চেষ্টা করব গোল করার। যদি সুযোগ পায় (খেলার) তাহলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব গোল করার জন্য।”
গোলের আশায় নিজের ছকেও কিছুটা বদল এনেছেন কাবরেরা। রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণে খেলার ছক থেকে বেরিয়ে দলকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার অনুশীলন করিয়েছেন। মোরসালিনের মনে হচ্ছে, এই ছক মাঠে বাস্তবায়ন করতে পারবেন তারা।
“ঐরকম পরিবর্তন এখনো হয় নাই (কোচের দর্শনে), এখনও বলতে পারছি না কারা খেলবে, কি রকম হবে (সেরা একাদশ), কিন্তু মনে হচ্ছে এবার কোচ প্র্যাকটিক্যাল যে ব্যাপারটা আমাদের শিখিয়েছেন, সেটা আরও সুন্দরভাবে কার্যকর করতে পারব। যেহেতু আমাদের ঘরের মাঠে খেলা আমাদের হোম অ্যাডভান্টেজটা নিতে হবে, সেভাবে খেলতে হবে।”
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে বসুন্ধরা কিংস পারেনি সেভাবে খেলতে। ছিটকে গেছে গ্রুপ পর্ব থেকে। কিংসের খেলোয়াড়রা কাবরেরার ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন দেরিতে। তবে ফর্টিসের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে জেতা প্রীতি ম্যাচে খেলতে পারায় কোচের কৌশলের সাথে মানিয়ে নেওয়া সহজ হয়েছে বলে মনে করেন তপু।
“এফসির টুর্নামেন্ট থেকে আসার পরে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছি, গত পরশুদিন একটা ম্যাচ খেলেছি, এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের মানিয়ে নেওয়ার জন্য। আমরা জানি যখনই আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলি, সেটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ওইভাবে এগোচ্ছি, আমাদের প্রস্তুতি ম্যাচটা খেলা খুব জরুরি ছিল, সবকিছু ভালো যাচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছি আমরা কীভাবে খেলব।”
“আমার মনে হয়, এই মৌসুমে আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় এটি। যখনই আপনি শেষ ভালো করবেন, সবার কাছেই আপনি ভালো থাকবেন, সবাই তখন খুশি থাকবে। আমরা ওই প্রত্যাশায় নিয়ে এই উইন্ডোতে খেলব, সব ম্যাচগুলো আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের কিন্তু এই ম্যাচটা আমরা অন্যভাবে নিচ্ছি, কেননা এই ম্যাচ দুইটা আমাদের শেষ ম্যাচ (এ বছরের), আমরা চাইব আমাদের সেরাটা দিতে। আমার মনে হয় সবাই প্রস্তুত।”
দৃঢ়তাপূর্ণ রক্ষণে ক্লিনশিট রাখার প্রত্যয় জানানোর পাশাপাশি তপু আক্রমণভাগকেও দিলেন বার্তা। অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারের পরামর্শ মাথা ঠাণ্ডা রেখে সুযোগ কাজে লাগানোর।
“আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচে সুযোগ পেয়েছি, ফিলিস্তিন, লেবাননের সঙ্গে সুযোগ পেয়েছি, অস্ট্রেলিয়া আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে, তাদের বিপক্ষে আমরা খুব একটা সুযোগ তৈরি করতে পারিনি কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয়, যখন আমাদের কেউ সুযোগ পাবে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারে, গুরুত্বপূর্ণ হবে গোল করাটা। আপনি যদি ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করেন যে, হ্যাঁ, আমার কাছে বল আসবে, আমি ভুল করব না, তাহলে সেটা আমাদেরকে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেবে। ফরোয়ার্ডদের এই মনোভাব থাকতে হবে, যখন সুযোগ আসবে কাজে লাগাতে হবে। আমার মনে হয়, ইতোমধ্যে তারা এই বিষয়টি জানেও।”
“আমাদের আক্রমণভাগ গোল না করতে পারলে আমরা ম্যাচ জিততে পারব না অবশ্যই রক্ষণ একটা চাপের জায়গা। এইখানে আমাদের চেষ্টা থাকবে ডিফেন্ড করার এবং আমরা যেন ক্লিনশিট রাখতে পারি।”