ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
ইউরোর ফাইনালে দুর্দান্ত গোল করা স্পেনের তরুণ এই প্রতিভাবান ফুটবলার বললেন, সব ফুটবলার স্বপ্ন দেখেন এমন কিছু করার।
Published : 15 Jul 2024, 11:29 AM
নিকো উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার এখনও বলা যায় অঙ্কুরেই। আরও প্রস্ফুটিত হবেন তিনি। তার সৌরভ ছড়িয়ে পড়বে ফুটবল বিশ্বময়। আরও অনেক অর্জন তার ধরা দেবে। তবে এবারের ইউরোর ফাইনালে যা করলেন, ২২ বছর বয়সী ফুটবলারের হৃদয়ে তা আলাদা জায়গা নিয়ে থাকবে সবসময়।
ইউরোর ফাইনালে রোববার উইলিয়ামসের দুর্দান্ত গোলই এগিয়ে দেয় স্পেনকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে লামিনে ইয়ামালের পাস থেকে দারুণভাবে বল জালে পাঠান অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের উইঙ্গার।
সেই গোল অবশ্য পরে শোধ করে দেয় ইংল্যান্ড। কিন্তু মিকেল ওইয়ারসাবালের গোলে স্পেনই জিতে নেয় শিরোপা।
এবারের আসরের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলেছেন উইলিয়ামস। শেষ ষোলোর ম্যাচে জর্জিয়ার বিপক্ষে গোলের দেখাও পান। সেদিন শতভাগ সঠিক পাস দিয়ে রেকর্ডও গড়েন তিনি। ফাইনালে দলের নায়কদের একজন তিনি।
উঠতি প্রতিভাবান ফুটবলার হিসেবে স্পেনের ফুটবলে এমনিতেই নাম ছড়াতে শুরু করেছিল তার। এখন তার নৈপুণ্য দেখেছে গোটা ফুটবলবিশ্ব। এই আসরে সাফল্য, সদ্য পাওয়া তারকা খ্যাতি, সবই বেশ উপভোগ করছেন তিনি।
“ক্যারিয়ারে কখনোই ভুলব না এটি… প্রতিটি ফুটবলারের স্বপ্ন এমন কিছু করা।”
“আমার জন্য এটি খুবই তৃপ্তিদায়ক। সবসময় চেষ্টা করি দলের জন্য সেরাটা দিতে। এটা সত্যি যে, লোকে এখন আমাকে চিনতে শুরু করেছেন, সম্মান দেখাচ্ছে এবং আমি সত্যিকার অর্থেই সেসব প্রশংসাকে সম্মান করি।”
এই ম্যাচ বা টুর্নামেন্টই শুধু নয়, গোটা মৌসুমটাই দুর্দান্ত খেলেছেন উইলিয়ামস। অ্যাথলেতিকো বিলবাওয়ের হয়ে মৌসুমজুড়েই তিনি ছিলেন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের আতঙ্ক। গতি আর স্কিল দিয়ে তৈরি করে দিয়েছেন অনেক গোলের সুযোগ। বিলবাওয়ের কোপা দেল রে জয়েও তার ছিল বড় অবদান। ফাইনালে ম্যাচ-সেরা ছিলেন তিনিই। পরের মৌসুমে তাকে দলে পেতে আগ্রহী বেশ কটি বড় ক্লাব। বার্সেলোনা তো তাদের প্রবল আগ্রহের কথা জানিয়েছে প্রকাশ্যেই।
এখন তিনি স্পেনের সম্পদ, তবে তার শেকড় ঘানায়। একটু উন্নত জীবনের আশায় তার বাবা-মা সাহারা মরুভুমি পাড়ি দিয়ে এসেছিলেন স্পেনে। অনেক কঠিন লড়াই ও জীবনযুদ্ধে পোড় খাওয়ার পর এই পরিবারের সুখের দিন ফিরিয়েছে দুই সন্তান। নিকো উইলিয়ামসের ৮ বছরের বড় ভাই ইনাকি উইলিয়ামসও ফুটবলার। বিলবাওয়ের হয়েই প্রায় সাড়ে তিনশ ম্যাচ তিনি খেলেছেন।
স্পেনের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেললেও জাতীয় দলের ক্ষেত্রে ইনাকি বেছে নিয়েছেন বাবা-মায়ের দেশ ঘানাকে। নিকো এগিয়েছেন ভিন্ন পথে। তিনি বেছে নিয়েছেন নিজের জন্মভূমি স্পেনকে।
ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় দিনটিতে নিকো উইলিয়ামস আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন বাবা-মায়ের সেই সংগ্রামমুখর দিনগুলিতে পেছন ফিরে তাকিয়ে।
“আমার জন্য অবিশ্বাস্য এক মৌসুম এটি। এই পর্যন্ত আসতে আমার মা-বাবাকে অনেক ভুগতে হয়েছে… আমার ভেতর সম্মান ও আনুগত্য গেঁথে দিয়েছেন তারা।”