ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
দমিনিকো তেদেসকোর মতে, খুব কম ডিফেন্ডারই এই অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ডের মুখোমুখি হতে চাইবে।
Published : 16 Jun 2024, 07:47 PM
ফিটনেস সমস্যায় বছর দেড়েক আগের কাতার বিশ্বকাপে খুব কম সময়ই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রোমেলু লুকাকু। আর যতটুকু সময় মাঠে ছিলেন, একেবারে নিষ্প্রভ হয়েই ছিলেন। তবে তারপর থেকে নিজেকে দুর্দান্তভাবে মেলে ধরেছেন এই ফরোয়ার্ড। বেলজিয়াম কোচ দমিনিকোর চোখে, যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই লুকাকু এখন ভয়ঙ্কর।
অবশ্য ২০২২ বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবির পেছনে লুকাকুর খুব বেশি দায় দেওয়ার উপায়ও নেই। আসরে তিন ম্যাচে যে কেবল ৫৩ মিনিট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গ্রুপে শেষ ম্যাচে কয়েকটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেছিলেন তিনি; ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র করে তার দল ছিটকে পড়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকে।
হতাশার সেই অধ্যায়ের পর থেকে বেলজিয়ামের জার্সিতে নিয়মিত আলো ছড়িয়েছেন রোমার এই ফরোয়ার্ড। ওই বিশ্বকাপের পর থেকে জাতীয় দলের হয়ে ১১ ম্যাচ খেলে লুকাকু গোল করেছেন ১৭টি। ইউরোর বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে আজারবাইজানের বিপক্ষে ২৭ মিনিটে করেছিলেন চারটি গোল।
বাছাইয়ে তার ১৪ গোলের চেয়ে বেশি করতে পারেননি আর কেউ। ইউরোর বাছাইয়ের এক আসরে যা সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
বেলজিয়ামের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটিও লুকাকুর। ২০১০ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ১১৫ ম্যাচ খেলে ৮৫ গোল করেছেন তিনি। পঞ্চাশ গোলও করতে পারেননি আর কেউ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এদেন আজারের গোল স্রেফ ৩৩টি।
লুকাকুর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে দুটি অংশে ভাগ করা যায়। প্রথম ছয় বছরে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪২ ম্যাচ খেলে তিনি গোল করতে পারেন কেবল ১১টি। এরপর থেকে এখন অবধি ৭৩ ম্যাচে তার গোল ৭৪টি।
ইউরোর আগে লুকাকুকে চেনা চেহারায় ফিরে পেয়ে খুব খুশি কোচ তেদেসকো। তার মতে, মাঠে যে কোনো দলের জন্যই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন ৩১ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার।
“তার গোলসংখ্যাই তার হয়ে কথা বলে, তবে এর চেয়েও বেশি কিছু তার কাছ থেকে পাওয়ার আছে। সে জানে, গোল করার মতো পজিশনে না থাকলে ঠিক কখন তাকে পাস দিতে হবে কিংবা শরীরকে ঘুরিয়ে কখন নিজেরই শট নিতে হবে।”
“শুধু সেট পিস বা ক্রসে নয়, অনেক ক্ষেত্রেই সে বিপজ্জনক। মাঠের শেষ তৃতীয়াংশে, সে আনপ্রেডিক্টেবল এবং তাকে থামানো কঠিন। আমার মনে হয় না, খুব বেশি ডিফেন্ডার তার বিপক্ষে রক্ষণ সামলাতে চাইবে।”
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক কোচ রবের্ত মার্তিনেসের স্থলাভিষিক্ত হন তেদেসকো। তার হাত ধরে দল হিসেবে দারুণ ছন্দে আছে বেলজিয়াম; ১৫ ম্যাচ ধরে অপরাজিত দলটি। যেখানে বড় অবদান আছে লুকাকুর। মাঠের বাইরেও ইতিবাচক প্রভাব রাখেন লুকাকু।
“মাঠের বাইরেও তার গুরুত্ব নিয়ে সংশয় নেই, কারণ সে অনেক খেলোয়াড়কে চেনে, বিশেষ করে তরুণ খেলোয়াড়দের, যাদের সে দেখভাল করতে এবং তাদের মেন্টর হতে পারে।”
“সে অনেক কিছু নিয়ে নিজেই চিন্তা করে, ড্রেসিং রুমের অনেক কিছুর দিকে সে নজর রাখে, যা তাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।”
স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সোমবার ইউরো অভিযান শুরু করবে বেলজিয়াম। ‘ই’ গ্রুপে তাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ রোমানিয়া ও ইউক্রেইন।