প্রিয় দলের সাফল্যের জন্য পেনশনের অর্থ ছাড়তেও রাজি শতবর্ষী সমর্থক

প্রিয় ক্লাব ইন্টার মিলানের জয়ের জন্য সবকিছু করতে রাজি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইতালীয় সেনাবাহিনীর সৈনিক এনরিকো ভানজিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 04:30 PM
Updated : 9 May 2023, 04:30 PM

সাত বছর বয়স থেকে ইন্টার মিলানের প্রতি ভালোলাগার শুরু এনরিকো ভানজিনির। কিন্তু অর্থের অভাবে শৈশব-কৈশোরে কখনও মাঠে গিয়ে প্রিয় ক্লাবের খেলা দেখার সুযোগ হয়নি তার। অবশেষে সুযোগটি যখন এলো, তার বয়স তখন ৯৯ বছর! এখন শতবর্ষী ভানজিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মিলান ডার্বির অপেক্ষায় বুঁদ হয়ে আছেন। খুব করে ইন্টারের জয় দেখতে চান তিনি। এজন্য নিজের পেনশনের অর্থ ছেড়ে দিতেও প্রস্তত এই সমর্থক।

গত বছর সান সিরোয় প্রথমবার ইন্টারের খেলা দেখতে গিয়েছিলেন ভানজিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরলেন এই ক্লাবের প্রতি তার ভালোলাগার কথা।

"আমার প্যাশন শুরু হয়েছিল যখন আমার বয়স সাত বছর...আগে আমি কখনই (খেলা দেখতে) মাঠে যেতে পারিনি, আমার কাছে কোনো অর্থ ছিল না।”

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে বুধবার সান সিরোয় এসি মিলানের মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান। মিলানের উত্তরের শহর পাডুয়াতে নিজের নার্সিংহোম থেকে ম্যাচটি অনুসরণ করবেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হলোকাস্ট (ইহুদি গণহত্যা) থেকে বেঁচে ফেরা ভানজিনি।

পিঠে নিজের নাম লেখা ইন্টারের একটি জার্সি পরিহিত অবস্থায় তিনি বলেন, “আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি যেন আমাকে ইন্টারের জয়ের আনন্দ দেয়। আশা করি, তিনি তা দেবেন। আমি সবকিছু করতে পারি (জয়ের জন্য), এমনকি আমার অল্প পরিমাণের পেনশন ছেড়ে দিতেও রাজি।”

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইতালীয় সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক ছিলেন ভানজিনি। ১৯৪৩ সালে মিত্রবাহিনীর কাছে ইতালি আত্মসমর্পণ করার পর তাকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে বন্দী করে জার্মানরা। নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরেন তিনি।

বাড়ি ফেরার পর বাস ও ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন ভানজিনি। শততম জন্মদিনে ইন্টারের থেকে একটি জার্সি উপহার দেওয়া হয় তাকে।  

এখন তার প্রতিটি দিন শুরু হয় ইতালির বিখ্যাত ক্রীড়া পত্রিকা ‘লা গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্ত’ এর অপেক্ষায়। তার কাছে একটি আইপ্যাডও আছে এখন এবং অ্যাপ থেকে তিনি খেলা দেখতে শিখেছেন।

“আগে আমি এমন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতাম যাদের টেলিভিশন ছিল... আমি বাস চালানোর সময় লোকেদের বলতাম, ‘দয়া করে চিৎকার করবেন না, আমাকে কিছু শুনতে হবে।’ তখন ইন্টারের ম্যাচের রেডিও ধারাভাষ্য শুনতেন তিনি।

২০১০ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার হাতছানি ইন্টারের সামনে। কোচ সিমোনে ইনজাগির জন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছেন ভানজিনি।

"প্রথমার্ধে আমাদের খুব বেশি ক্লান্ত হওয়া ঠিক হবে না, প্রত্যেককে অবশ্যই তাদের জায়গায় থাকতে হবে।”