স্প্যানিশ ফুটবল
রেয়াল মাদ্রিদের দারুণ জয়ে চোখধাঁধানো দুটি গোলের পর তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গোল দুটি উৎসর্গ করলেন সতীর্থ আন্টোনিও রুডিগারকে, যার কাছ থেকে কখনোই প্রশংসা পান না তিনি।
Published : 17 Jan 2025, 11:37 AM
“তিনি কখনোই আমার প্রশংসা করেন না’, ম্যাচ শেষে আন্টোনিও রুডিগারকে নিয়ে সরাসরিই বললেন এন্দ্রিক। অনেকেরই তাতে চমকে ওঠার কথা। বিরক্তি, অভিযোগ নাকি অনুযোগ? পরিষ্কার করে দিলেন এন্দ্রিক নিজেই। রুডিগারের প্রশংসা না করার মানসিকতারই প্রশংসা করছেন তিনি। রেয়াল মাদ্রিদের জয়ে দারুণ দুটি গোল করা ব্রাজিলিয়ান তরুণ গোল দুটি উৎসর্গ করেছেন রুডিগারকেই।
রেয়াল মাদ্রিদের জয়ে এন্দ্রিকের গোল দুটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার নিজের জন্য ছিল আরও বেশি জরুরি। তার তিন মাসের গোল খরা কাটল তো এই জোড়া গোলেই।
কোপা দেল রের ম্যাচটিতে বৃহস্পতিবার সেল্তা ভিগোর ৩৭তম মিনিটে কিলিয়ান এমবাপে ও ৪৮তম মিনিটে ভিনিসিউস জুনিয়র গোল করেন রেয়ালের হয়ে। ৮২ মিনিট পর্যন্ত এটিই ছিল ম্যাচের স্কোর। কিন্তু এরপর রেয়ালকে তাদের ওষুধ দিয়েই ম্যাচে ফেরে সেল্তা। ৮৩তম মিনিট ও পরে যোগ করা সময়ে গোল করে ম্যাচ সমতা ফেরায় তারা।
এরপর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও গোল হয়নি। ১০৮তম মিনিটে আন্দ্রে গিলেরের কাছ থেকে বল পান এন্দ্রিক। বক্সের একটু বাইরে বল পেয়েই চকিতে ঘুরে বাঁ পায়ে রকেট গতির শট নেন আচমকা। গোলকিপার নাগাল পাননি বলের।
পরে ১১৯তম মিনিটে আরেকটি গোল করেন তিনি নান্দনিক ব্যাকহিলে। এই দুটির মাঝে বক্সের বাইরে থেকে গোলায় বল জালে পাঠান ফেদে ভালভের্দে। রেয়াল ম্যাচটি জিতে নেয় ৫-২ গোলে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বরের পর আবার রেয়ালের জার্সিতে গোলের স্বাদ পেলেন এন্দ্রিক। মৌসুমের শুরুটা তার ভালোই হয়েছিল। লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলের খাতা তোলেন তিনি। এরপর ক্রমেই বিবর্ণ হয়ে পড়েন। লা লিগায় সব মিলিয়ে মোটে ৮৩ মিনিট মাঠে থেকেছেন তিনি।
অবশেষে নিজেকে ফিরে পাওয়ার ম্যাচ শেষে এন্দ্রিক বললেন, হতাশার সময়টায় তার এগিয়ে চলার জ্বালানি ছিলেন রুডিগার।
“আমি প্রতিদিনই কঠোর পরিশ্রম করি। আজকে আমার গোল দুটি আন্টোনিও রুডিগারের জন্য। আমার জন্য প্রতিটি দিন তিনি কী করেন, তিনি নিজেও জানেন তা। তিনি কখনোই আমার প্রশংসা করেন না এবং সেটা দারুণ ব্যাপার! তিনি আমাকে বলেন আমার কী কী করা দরকার… গোল করতে, ছুটে বেড়াতে, লড়াই চালিয়ে যেতে।”
“গতকাল অনুশীলনে আমাকে কঠিন লড়াইয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ঘরে ফিরে আমি সেটিই ভাবছিলাম। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ। আমার গোল দুটি তার জন্য।”
এ দিন প্রথম গোলটি করে জার্সি খুলে ছুড়ে মেরে বাঁধনহারা উদযাপনে মেতে ওঠেন এন্দ্রিক। ম্যাচের পরে বললেন, দুঃসময়কে জয় করতে গোলটির অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।
“(প্রথম গোলটি) আমার জন্য ছিল দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। এটাই আমার দায়িত্ব, দলের জন্য ভালো খেলতে হবে আমাকে, গোল করতে হবে, যা কিছু প্রয়োজন, করতে হবে।”
“রেয়াল মাদ্রিদের জন্য, এই সমর্থকদের জন্য, দলের ফুটবলার, সাপোর্ট স্টাফ, সবার জন্য গোল করতে পারার অনুভূতি দারুণ। কোপার গত ম্যাচে সুযোগ হাতছাড়া করেছি আমি। আজকে দুটি সুযোগ পেয়ে দুটিই গোল করেছি।”
রেয়াল মাদ্রিদের যে মাথানত না করার মানসিকতা, সেটি এখনই নিজের মধ্যে গেঁথে নিয়েছেন এন্দ্রিক।
“এটা রেয়াল মাদ্রিদ। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাই, শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য চেষ্টা করি। কখনোই হারার আগে হারি না, সবসময় লড়ে যাই।”
“ম্যাচটি কঠিন ছিল। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা গোল করেছি ও জিতেছি। আমরা জানতাম, অতিরিক্ত সময়ে আমদেরকে দৌড়াতে হবে আরও বেশি, ওপরে উঠতে হবে। তিনটি খুব ভালো গোল করেছি আমরা। আমার জন্যও গোলগুলি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ খেলতে ও এই স্টেডিয়ামে সমর্থকদের সামনে খেলতে ভালোবাসি আমি।”